১৯৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধের কারণে ইরাক-কুয়েত থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ৭২ হাজার বাংলাদেশি শরণার্থীর সাথে প্রতারণার শিকারের অভিযোগ উঠেছে।
আজ মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী হল রুমে ইরাক-কুয়েত প্রত্যাগত বাংলাদেশী কল্যাণ সমিতির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তোলেন সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, ইরাক-কুয়েত যুদ্ধে জাতিসংঘ ক্ষতিপূরণ কমিশন থেকে লেইট ক্লেম এর অর্থ, ৩৩৪ প্রত্যাগত এবং ৪৪৪ যুদ্ধবন্দির ক্ষতিপূরণের অর্থ অদ্যাবধি পাননি। সোনালী ব্যাংকে জমাকৃত কুয়েতী দিনার অদ্যাবধি ফেরত দেয়া হয়নি।
তারা বলেন, কুয়েতের আমির বাংলাদেশে সফরকালে তার দেয়া প্রতিশ্রুতি মোতাবেক কুয়েত প্রত্যাগত বাংলাদেশিদের ৯ মাসের বকেয়া বেতন দেয়া হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অদ্যাবধি এসব প্রত্যাগত ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশিদের ৯ মাসের বকেয়া বেতনের অর্থ আদায়ে বাস্তবমুখী উদ্যোগ নেয়নি।
অভিযোগ তোলে তারা বলেন, উপসাগরীয় যুদ্ধের সময়ে ইরাক-কুয়েতের ব্যাংকে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশি কর্মীদের জমাকৃত লাখ লাখ মার্কিন ডলার অদ্যাবধি উদ্ধার করা হয়নি। এসব প্রত্যাগত বাংলাদেশিদের অনেকেই বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছেন। প্রত্যাগত ৭২ হাজার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার চরম দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, ইরাক-কুয়েত প্রত্যাগত বাংলাদেশিদের অর্থের প্রায় ১৮ কোটি টাকা এবং সরকারের দেয়া ১০ কোটি টাকাসহ মোট ২৬ কোটি টাকায় রাজধানীর ভাটারা মৌজায় ১৫১ দশমিক ৫৪ একর জমি ক্রয় করে প্রবাসীদের উন্নয়নে কাজে লাগানো হয়নি। উক্ত জমিতে একটি আধুনিক হাসপাতাল ও প্রযুক্তি সম্পন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার নীতিগত সিদ্ধান্ত থাকলেও ইরাক-কুয়েত প্রত্যাগত ৭২ হাজার শরণার্থীর সাথে প্রতারণার আশ্রয় নেয়া হয়েছে। উল্লেখিত জমি প্রত্যাগতদের মাঝে ফেরত দিতে হবে।
'উক্ত জমিক্রয়ে এবং জাতিসংঘ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যাগতদের ক্ষতিপূরণের অর্থ বিলিবন্টনের শেষ প্রক্রিয়া ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে।'-বলেন তারা।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে দাবি জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, একজন যোগ্য ব্যক্তিকে প্রধান করে একটি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন করে অবিলম্বে প্রত্যাগতদের প্রস্তাবিত দশ দফা দাবি পূরণের লক্ষে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহাম্মদ ইউনূসের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সভাপতি কাজী নজরুল ইসলাম, সিনিয়র সহসভাপতি মো. মিজানুল হক মিজান, বীর মুক্তিযোদ্ধ মো. আবু তাহের সরকার, হাজী আব্দুর রউফ বাচ্চু, মো. লোকমান হোসেন, মিয়া আব্দুল হান্নান, লাবীব উদ্দিন, শামীমা আক্তার, এসএম ওয়ালী উল্লাহ ও আহম্মেদ উল্লাহ রতন প্রমুখ।
হাআমা/