ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিশ্বকোষ বিভাগের আয়োজনে ‘আরবি প্রতিবর্ণায়ন: প্রেক্ষাপট, প্রাসঙ্গিকতা ও প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নেতৃত্বে আরবি শব্দের বাংলা প্রতিবর্ণায়ন বিষয়ে একটি সর্বজনগ্রাহ্য নির্দেশিকা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণের প্রস্তাব দেন বক্তারা, যাতে সবাই একই রকম বানান অনুসরণ করতে পারেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আ. ছালাম খানের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, ধর্ম, ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক কারণে বাংলা ভাষায় আরবি, ফার্সি ও উর্দু শব্দের একটি বিশাল ভাণ্ডার যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে কমপক্ষে দশ হাজার শব্দ বাংলা ভাষায় গৃহীত হয়েছে, যা সাহিত্যে, প্রশাসনে এবং দৈনন্দিন ভাষাচর্চায় ব্যবহৃত হচ্ছে।
তারা আরও বলেন, ত্রয়োদশ শতকে মুসলিম শাসনের প্রভাবে আরবি ও ফার্সি শব্দ বাংলা ভাষায় ঢুকে পড়ে। কিন্তু এসব শব্দের প্রতিবর্ণায়নে কোনো কাঠামো তৈরি হয়নি। ফলে একজন লেখকের লেখাতেই একাধিক বানান পাওয়া যায়, যা শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করে।
সেমিনারে বলা হয়, আরবি শব্দ বাংলায় ভিন্ন তিন ধারা অনুসরণ করে এসেছে:
১. সরাসরি গ্রহণ (যেমন: আদালত, ঈমান)
২. ফার্সি প্রভাবিত রূপ (যেমন: এবাদত, কোরআন)
৩. স্থানীয় উচ্চারণে পরিবর্তিত রূপ (যেমন: গোসল, কলম)।
কিন্তু এসব শব্দের বাংলা বানানে দীর্ঘদিন ধরে সুনির্দিষ্ট কোনো রীতি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যেমন ‘অজু’ শব্দটি কেউ ‘উজু’, কেউবা ‘ওযু’, কেউবা ‘অযু’ ইত্যাদি লেখেন। অনুরূপভাবে ‘মোহাম্মদ’ শব্দটির বিভিন্ন রূপ ব্যবহার লক্ষ করা যায়।
সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়ার ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মোঃ শামছুল আলম, ড. সানোয়ার জাহান ভূইয়া, অধ্যাপক ড. পারভীন আক্তার জেমী, অধ্যাপক ড. সুরাইয়া আক্তার, অধ্যাপক ড. আহসানুল হাদী, অধ্যাপক ড. মোমতাজ কাদরী, অধ্যাপক ড. মুহা. জহিরুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. শাহ মুখতার আহমদ, অধ্যাপক ড. আনম আবদুল মাবুদ, অধ্যাপক মো. সিরাজ উদ্দীন (অবসরপ্রাপ্ত), প্রফেসর মিঞা মো. নুরুল হক, এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন বিভাগের পরিচালকবৃন্দ।
সেমিনারে ‘আরবি শব্দের সুনির্দিষ্ট প্রতিবর্ণায়ন নির্দেশিকা’ প্রস্তুতের লক্ষ্যে একটি পরবর্তী ওয়ার্কশপ আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
এমএম/