শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

এর‌ই নাম বিপ্লব!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি: সংগৃহীত

|| নাজমুল হুদা মজনু ||

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংস্কৃতি চর্চার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে ব্যাপক পরিচিত। জাতীয় পর্যায় থেকে জেলা-উপজেলা পর্যন্ত রয়েছে এর নামডাক। শত সংগঠনের কর্মকাণ্ডে মুখর এ প্রাঙ্গণ। তেমনি একটি স়ংগঠন স্বশব্দ আবৃত্তি পরিষদ। এরা আয়োজন করেছে দু'দিনব্যাপী আবৃত্তি অনুষ্ঠান।

প্রথম দিনের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয় সন্ধ্যায়। বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আলী নূর স্যার প্রধান মেহমান।

প্রথমেই আবৃত্তি নিয়ে মঞ্চে আসে যশোরের কপোতাক্ষ শব্দশিল্পীর রাতুল হাসান।
উদ্বোধনী আবৃত্তি শুরু হয় কবি নজরুলের গীতি কবিতা 'খোদা এই গরিবের'
তৃতীয় স্তবক দিয়ে-
'আমায় দিয়ে কারো ক্ষতি
হয় না যেন দুনিয়ায়
আমি কারো ভয় না করি
মোরেও কেহ ভয় না পায়।'

রাত আটটায় এশার আজান দিলে অধিবেশনের বিরতি দেয়া হয়। কিন্তু টিএসসির সালাত আদায়ের ঘর সংকীর্ণ। একসাথে সবাই দাঁড়ানো যাবে না। তাই রাতুলসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় মসজিদের উদ্দেশে ছোটে। সেখানে সাড়ে আটটায় জামাত।
সালাত শেষে রাতুলসহ সঙ্গীরা আবার টিএসসিতে ফেরে। ঢাবি সাংবাদিক সমিতির অফিসে তাদের কয়েকজনের ব্যাগ সংরক্ষিত আছে।

রাতে রাতুলদের শহীদুল্লাহ হলে প্রতিবেশী বড় ভাই রায়হানের রুমে থাকতে হবে। রায়হান জেনেটিক সাইন্সের ছাত্র হলেও সাহিত্যানুরাগী। কবি- সাহিত্যিকদের ভালোবাসে। আবৃত্তি কর্মশালায় তিন মাস প্রশিক্ষণ নিয়েছে। কিন্তু তবুও সফল হয়নি। উচ্চারণে সমস্যা রয়ে গেছে। তারপরও সংস্কৃতি জগতের প্রতি টান রয়েছে তার। এ দিকে রায়হানের রুমমেট পরশ আবার ভিন্ন মতাবলম্বী। 'সাহিত্যটাহিত্য বোগাস'- এমন মন্তব্য করে সংস্কৃতি চর্চার ঘোর বিরোধী। তার বক্তব্য হচ্ছে- 'মানুষের সুখ-সমৃদ্ধির সোপান হলো অর্থনৈতিক মুক্তি। তাই শোষণহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সে জন্য চাই সমাজ বিপ্লব। চাই শোষণহীন সমাজতন্ত্র।'

রাত দশটা বাজলেই শুরু হয় পরশের তা‌ত্ত্বিক বক্তৃতা।  নতুন মুখ দেখে তার আলোচনার ছেদ ঘটে। রাতুলের গেটাপ মেকআপ দেখে ব্যঙ্গ করে বলে সে 'কী ভাইয়া তালেবান টালেবান ন‌ওতো?'
রাতুল মুচকি হেসে জবাব দেয় 'না দাদা এখনো হতে পারিনি'। 'চেষ্টা চলছে বুঝি?' তির্যক প্রশ্ন পরশের। এরপর রাতুলের পক্ষ নিয়ে রায়হানের খেদোক্তি- 'আরে পরশ মেহমানের সাথে এ কী আচরণ তোর'?

এবার কৌশল পরিবর্তন করে পরশ বলে- 'অবশ্যই মেহমানের খাতির করা উচিত। ঠিক আছে আগামীকাল সকালে টিএসসিতে করিম ভাইয়ের চায়ের দোকানে দাওয়াত রাতুলের।'

রায়হান কৌতুক করে বলে- 'ঘরকা মুরগি ডাল বরাবর'! পরশ বলে 'এ কথা বলছিস কেন?' রায়হান উত্তর দেয়- 'রাতুলের দাওয়াত আর আমরা বুঝি ফাঁকা?' হো হো করে হাসতে হাসতে পরশ বলে- 'নারে,  তোরাও থাকবি বৈকি'।

পরদিন সকালে সবাই হাজির করিম ভাইয়ের দোকানে। পরশের অর্ডারে করিম ভাই একটা করে বাটার বান দেয় সবাইকে। খাওয়া-দাওয়া শেষে করিম ভাই কোনো কিছু না ভেবেই বলে ফেলে- 'পরশ ভাই, এক হাজার টাকার বেশি বাকি হ‌ইছে, একটু খেয়াল রাইখেন ভাই।'

মেহমানের সামনে টাকার কথা বলায় পরশের মেজাজ চড়ে যায়। আচমকা টুল উঠিয়ে করিম ভাইয়ের মাথায় সজোরে আঘাত করে সে। করিম ভাইয়ের কপাল ফেটে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হয়।
ঘটনার আকস্মিকতায় সবচে অবাক হয়ে যায় রাতুল। সে মনে মনে বলে- 'হায় এর‌ই নাম বিপ্লব; এর‌ই নাম সমাজতন্ত্র'! 

এনএ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ