অনেকেই সকালে হাঁটতে বের হন। আর বাড়ির পাশের পার্ক থাকলে সেখানেই হাঁটতে যান। পার্কে হাটার সময় যদি কিছুক্ষণ ঘাসের উপর খালি পায়ে হাঁটা যায় তা শরীরের জন্য খুবই উপকারী হবে। চিকিৎসার ভাষায়, ঘাসের উপর খালি পায়ে হাঁটাকে আর্থিং বা গ্রাউন্ডিং বলা হয়। অনেক গবেষণায় এটি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে বিবেচিত হয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন সকালে মানুষের ১০ মিনিট থেকে ৩০ মিনিট হাঁটা উচিত। এর মধ্যে কয়েক মিনিট যদি খালি পায়ে ঘাসের উপর হাঁটা যায় তাহলে তা শরীরের জন্য খুবই উপকারী হবে। এটিকে প্রাকৃতিক চিকিৎসাও হিসাবেও বিবেচনা করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঘাসের উপর খালি পায়ে হাঁটলে স্নায়ুর উপর চাপ পড়ে, যা অঙ্গটির কার্যকারিতা উন্নত করতে পারে। ঘাসের উপর খালি পায়ে হাঁটা উল্লেখযোগ্যভাবে চাপ এবং উদ্বেগ কমাতে পারে। এতে করে শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকে।
জার্নাল অফ এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড পাবলিক হেলথ-এ প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে, মাটিতে খালি পায়ে হাঁটা মন ভাল রাখে। শরীরে স্ট্রেস হরমোন কর্টিসলের মাত্রা কমাতে ভূমিকা করে। পায়ের নিচের শীতল, নরম ঘাস মনকে শান্ত করে এবং অত্যন্ত আরাম বোধ হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, পৃথিবীর সাথে সংযোগ স্থাপন করা মানুষের দেহে প্রদাহ হ্রাস করে এবং ফ্রি র্যাডিকেলের বিপজ্জনক প্রভাবকে আটকাতে পারে। ঘাসের উপর খালি পায়ে হাঁটা শরীরকে রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে।
জার্নাল অফ ইনফ্লামেশন রিসার্চে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, মাটিতে শুয়ে থাকলে শরীরে ব্যথা এবং ফোলাভাব কমে যায়। জার্নাল অফ অল্টারনেটিভ অ্যান্ড কমপ্লিমেন্টারি মেডিসিনে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘাসের উপর খালি পায়ে হাঁটলে হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। এর ফলে স্ট্রোক এবং হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে।
ঘাসে খালি পায়ে হাঁটলে শরীরের ভারসাম্য উন্নত হয়। আমেরিকান কাউন্সিল অন এক্সারসাইজের মতে, খালি পায়ে হাঁটা পা এবং নীচের পায়ের ছোট পেশিগুলিকে শক্তিশালী করতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
ঘাসের উপর খালি পায়ে হাঁটার আগে পায়ের যাতে কোনও কাঁচ, পাথর বা এমন কিছু না থাকে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হোন। ঘাসে কীটনাশক যোগ করা হয়েছে এমন জায়গায় হাঁটা ঠিক নয়।
এনএ/