সন্তানের বিকশিত এবং বেড়ে ওঠার পেছনে মা-বাবা উভয়েরই অবদান অপরীসিম। কিন্ত প্রতিযোগীতার এ-ই সময়ে বাবার সঙ্গ এবং মা-য়ের কোল হারাচ্ছে অনেক শিশু। অনেকে সেই শূন্যতা মেটাবার চেষ্টা করে- কোমলমতি বাচ্চাকে মোবাইল-ভিডিও দেখিয়ে। তাই মোবাইলের প্রতি শিশুদের আসক্তি বাড়ছে আশঙ্কা-হাড়ে। কখনও পড়াশোনা কিংবা গেম খেলার জন্য আবার কখনও ইউটিউব দেখার জন্য তারা ফোনে মুখ গুঁজে বসে থাকছে। ফলে এর কুপ্রভাব পড়ছে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর।
পরিবার থেকে কিছুটা সচেতন হলেই এ সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব। এর জন্য শিশুদের ওপর অভিভাবকদের খানিকটা বাড়তি নজর দিতে হবে।
১) দিনের একটি সু-নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত শিশুকে স্মার্ট ফোন ব্যবহার করার অনুমতি দিন। এ ছাড়া শিশু স্মার্টফোনে কী করছে বা কী দেখছে— তার প্রতিও নজর রাখতে হবে। তাদের অবসর সময়টা অন্য কাজে ব্যবহার করুন। খেলাধুলা,গল্প শোনা বা যে বিষয়ে শিশুর আগ্রহ আছে সে সব বিষয়ে মন দিতে উৎসাহী করে তুলুন।
২) শিশু যদি অনলাইনে ক্লাস করে, তাহলে ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে সে কী করছে, সেটি খেয়াল রাখতে হবে। এ ছাড়া স্মার্টফোন থেকে আপত্তিকর ওয়েবসাইটগুলিকেও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রয়োজনে ইন্টারনেট প্রোভাইডারদের সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে।
৩) শিশুর স্মার্টফোনের আসক্তি কাটাতে আপনাকে ওর জন্য সময় বের করে নিতে হবে। সন্তানের হাতে স্মার্ট ডিভাইস তুলে দিয়ে আপনি নিশ্চিন্ত হয়ে যাবেন না। ওর জন্য দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ রাখুন। ওই সময় শিশুর মনের কথা শুনুন, শিশুর সঙ্গে খেলুন, ওর সঙ্গে গল্প করুন।
৪) প্রযুক্তিতে আসক্ত হলে, আপনার সন্তানও আসক্ত হবে স্বাভাবিকভাবেই । তাই নিজের আসক্তি দূর করুন আগে। কাজের প্রয়োজন ছাড়া শিশুর সামনে মোবাইল ব্যবহার করবেন না।
৫) আপনার সন্তানকে ভাল করে বুঝিয়ে বলুন প্রযুক্তির সুবিধা-অসুবিধা দুটোই। প্রযুক্তি নিয়ে বিভিন্ন সাবধানতামূলক আলোচনা হোন নিজ সন্তানের সঙ্গে। সে সব নিয়ে খোলামেলা কথা বলুন, অতিরিক্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করলে কী বিপদ হতে পারে। ওর মন অন্য দিকে ঘোরাতে আপনাকেই উদ্যোগী হয়ে উঠতে হবে। মাঝে মাঝে ওকে বেড়াতে নিয়ে যান, ওর সঙ্গে সময় কাটান।বই কিনে দিন আঁকা-আঁকি করার জন্য। শিশুতোষ গল্পের বই পড়া শুরু করলে মোবাইলের প্রতি আসক্তি কমবে।
বিনু/