খাওয়ার স্যালাইন পানি ও লবণের ঘাটতি পূরণ করে। স্যালাইন শরীরে বাড়তি শক্তি জোগাতেও সহায়তা করে। কিন্তু অনেকে স্যালাইন মেশানো পানি খেতে পারেন না-বিশেষ করে শিশুরা। কেউ যদি স্যালাইন খেতে না পারেন তাহলে তাদের বিকল্প কিছু দিয়ে স্যালাইনের অভাব পূরণ করতে হবে।
স্যালাইনের বিকল্প যা খেতে পারেন-
ডাবের পানি
ডাবের পানি শরীরে পানির ঘাটতি ভালো কার্যকর। সেই সঙ্গে এতে থাকা ইলেকট্রোলাইট কম্পোজিশন ডায়রিয়া, বমি ও অতিরিক্ত ঘামে শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া খনিজের ঘাটতি পূরণেও বিশেষ ভূমিকা রাখে। রিবোফ্লাবিন, নিয়াসিন, থিয়ামিন ও পাইরিডক্সিনের মতো উপকারী উপাদানে ভরপুর ডাবের পানি।
চিড়ার পানি
চিড়ার পানি ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের ভালো একটি উত্স। ডায়রিয়া ও আমাশয়ে চিড়া ভেজানো পানি বেশ উপকারী। চিড়া ভেজালে তা প্রায় চার গুণ বেড়ে যায়। ১০০ গ্রাম চিড়ায় রয়েছে ৩৪৬ ক্যালরি, ৬.৬ গ্রাম আমিষ, ৭৭.৩ গ্রাম শর্করা, ২.০২ মিলিগ্রাম লোহা ও ২৩৮ মিলিগ্রাম ফসফরাস। চিড়ায় আঁশের পরিমাণ অনেক কম থাকে বলে অন্ত্রের প্রদাহ এবং ডাইভারটিকুলাইসিস রোগ প্রতিরোধে উপকারী। খাওয়ার আগে চিড়া ধুয়ে নিন। তিনবার ধোয়ার পর আবার কিছুটা পানি ভিজিয়ে নিন। এরপর স্বাদমতো লবণ ও চিনি দিয়ে পরিবেশন করুন।
ভাতের মাড়
ভাতের মাড়ে আছে অনেক রকমের পুষ্টি উপাদান। গবেষণায় দেখা গেছে, ভাতের মাড়ে ভিটামিন বি ও ভিটামিন ই রয়েছে। এতে শর্করা, আয়রন, ফসফরাস ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান আছে। এছাড়া ভাতের মাড়ে ৪ গুণ ক্যালসিয়াম, ১২ গুণ ম্যাঙ্গানিজ ও ২ গুণ মেলানিয়াম রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে টোকোট্রিনল ও অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান। অল্প হলুদ গুঁড়া ও লবণ দিয়ে খেলে শরীরের পানিশূন্যতা কমে যাবে।
কাঁচকলার স্যুপ
কাঁচকলায় আছে উচ্চমাত্রার ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬ ও ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফেট। এতে কার্বোহাইড্রেট কমপ্লেক্স স্টার্চ হিসেবে থাকে। কাঁচকলার ভিটামিন বি৬ রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরি করে, যা রক্তে অক্সিজেন পরিবহন করে। এর মধ্যে থাকা ভিটামিন বি৪ রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। এ জন্য রোগীর পথ্য হিসেবে কাঁচকলা পরিচিত। কাঁচকলা পেটের ভেতরের খারাপ ব্যাকটেরিয়া দূর করে দেয়।
পিংক সল্ট
এ লবণ হিমালয় পর্বত থেকে তৈরি হয়ে থাকে। উত্পাদিত অঞ্চলে লবণটি হোয়াইট গোল্ড নামেও সুপরিচিত। হিমালয়ান সল্ট প্রধানত সোডিয়াম ক্লোরাইড নিয়ে গঠিত। এতে সালফেট, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস, কপার, জিংক, সেলেনিয়াম, আয়োডিন, ফ্লোরাইডসহ প্রায় ৮০টির মতো উপাদান থাকে। এই লবণের খনিজ উপাদানগুলো মানুষের শরীরের কোষে খুব সহজেই শোষিত হতে পারে। তবে দিনে বেশি সোডিয়াম গ্রহণ করা ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই পিংক সল্ট খেতে হবে চিকিত্সক অথবা পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী। মাল্টা বা কমলার রসের সঙ্গে এক চিমটি পিংক সল্ট মিশিয়ে খেলে উপকার পাবেন।
টিএ/