|| আবদুর রউফ আশরাফ ||
ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব। আমাদের উৎসব অন্যান্য জাতি-গোষ্ঠীর উৎসব থেকে ব্যতিক্রম এবং অনন্য বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। ঈদের জামাত বৃহৎ জমায়েত হয়ে নামাজ আদায় করা আমাদের শুধু ধর্মীয় সৌন্দর্য নয়, বরং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ। আবার সামাজিক গুরুত্বও অপরিসীম।
বর্তমানে দেখা যাচ্ছে দেশের কিছু এলাকায় গ্রামের মসজিদে ঈদের জামাত আদায় করে নেন। অথচ রাসূল (সা.) খোলা ময়দানে সাহাবীদের নিয়ে ঈদের জামাত আদায় করেছেন ৷ যেখানে এক রাকাতে ৫০ হাজার রাকাত সওয়াব সেখানে ঈদের জামাত না পড়ে খোলা মাঠে জামাতের কথা বলেছেন। এতেই বুঝা যায়, ঈদের নামাজ মসজিদে না, বরং খোলা মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করা উত্তম।
মুহাম্মদ (স.) মসজিদের পরিবর্তে খোলা ময়দানে ঈদের নামাজ পড়তে পছন্দ করতেন। এর একটি বড় কারণ ছিল, এই নামাজের মাধ্যমে ইসলামের প্রতীক জোরালোভাবে তুলে ধরা। এজন্য তিনি নারীদেরও ঈদের নামাজে যোগ দেওয়ার জন্য বলেছিলেন।
ঈদের নামাজ ঈদগাহে ও খোলা মাঠে পড়া সুন্নত। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এবং খোলাফায়ে রাশেদিন সবাই ঈদের নামাজ ঈদগাহে গিয়ে পড়তেন। হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিন (ঈদের নামাজের জন্য) ঈদগাহে যেতেন। (সহিহ বোখারি- ৯৬৫)
হজরত আলী (রা.) বলেন, দুই ঈদে (ঈদের নামাজের জন্য) খোলা মাঠে যাওয়া সুন্নত।
মাঠে ঈদের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা থাকলে বিনা প্রয়োজনে মসজিদে ঈদের জামাত পড়বে না। প্রকাশ থাকে যে, বর্তমানে শহরে ঈদগাহ কম, তাই অধিকাংশ মসজিদে ঈদের জামাত হয়। জায়গা সংকুলান না হওয়া বা বৃষ্টি ইত্যাদির কারণে মসজিদে ঈদের নামাজ পড়লে সুন্নতের খেলাফ হবে না।
তবে ওজরের সময় মসজিদে পড়া হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোনো এক ঈদের দিন বৃষ্টি তাদের পেয়ে বসে। ফলে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের নিয়ে মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেন।
খোলা ময়দানে জামাত পড়ার একটা বিশেষত্বও রয়েছে। তাই আসুন! যার যার সামর্থ্যের আলোকে নতুন কাপড় পড়ে, ধনী গরীব ভেদাভেদ ভুলে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হই।
এমএম/