|| মুহিউদ্দীন মাআয ||
জোরপূর্বক কোন নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করাকে ধর্ষণ বলে। আর নারী-পুরুষ পরস্পরের সম্মতিতে যৌন সম্পর্ক হলে সেটাকে বলা হয় ব্যভিচার। এই ধর্ষণ ও ব্যভিচার দুটোই সামাজিক ব্যাধি। এটার মাধ্যমে পারিবারিক জীবনে যেমন সম্পর্কের অবনতি ঘটে, তেমনি সামাজিক জীবনে দেখা দেয় নানামুখি বিশৃঙ্খলা । এছাড়া অপরাধীও ব্যক্তি জীবনে আক্রান্ত হয় ভয়ংকর সব যৌনবাহিত রোগে। এভাবেই একটি দেশ ও জাতি পতিত হয় ধ্বংসের অতল গহ্বরে।
ইসলাম যেহেতু সত্য ও ন্যায়ের কথা বলে, তাই ধর্ষণ ও ব্যভিচার রোধে ইসলামের বিধান খুবই স্পষ্ট এবং কঠোর। প্রথমত আল্লাহ তায়ালা এই অপরাধের ব্যাপারে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন।
‘আর তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।’ (সূরা বনী ইসরাইল-৩২)
এরপর কোরআন ও হাদীসে অসংখ্য জায়গায় ব্যভিচারীর কঠিন শাস্তির বিধান এসেছে। আর এ বিধান জনসম্মুখে বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। যাতে অন্যরা দেখে শিক্ষা নেয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন—
‘তোমরা আমার নিকট থেকে জেনে নাও যে, আল্লাহ তাআলা ব্যভিচারীদের ব্যাপারে পন্থা বাতলে দিয়েছেন। বিবাহিত পুরুষ বিবাহিত নারীর সঙ্গে ব্যভিচার করলে এবং অবিবাহিত পুরুষ অবিবাহিতা নারীর সঙ্গে ব্যভিচার করলে তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে। (সুতরাং শাস্তি হল যে,) বিবাহিতকে একশ’ বেত্রাঘাত করা হবে অতঃপর প্রস্তর নিক্ষেপ করে হত্যা করা হবে। আর অবিবাহিতকে একশ’ বেত্রাঘাত করা হবে অতঃপর এক বছরের জন্য দেশান্তর করা হবে।’ (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৯০)
উল্লেখ্য, ব্যভিচারের শাস্তির বিধানের মাধ্যমেই ধর্ষণের শাস্তির বিষয়টি জানা যায়।
- ধর্ষণকারী বিবাহিত হলে তাকে প্রকাশ্য পাথর মেরে হত্যা করা হবে।
- অবিবাহিত হলে তাকে প্রকাশ্য একশত বেত্রাঘাত করা হবে এবং এক বছরের জন্য দেশান্তর বা জেলবন্দী করা হবে।
- ধর্ষণের সাথে অন্য কোন শারিরীক নির্যাতন করলে, তার শাস্তির মাত্রা বিচারক কর্তৃক নির্ধারণ করার এখতিয়ার ইসলাম প্রদান করে।
ব্যভিচার বন্ধে ইসলাম শুধু আইন করেই ক্ষান্ত থাকেনি। বরং তা বাস্তবায়ন করে এ ঘৃণ্য পাপকর্ম উচ্ছেদে যথাযথ ভূমিকা রেখেছে। তাই আসুন আমরা ধর্ষণ প্রতিরোধে সোচ্চার হই। ইসলামি বিধান বাস্তবায়নের মাধ্যমে সমাজ ও দেশবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করি।
হাআমা/