|| মুহিউদ্দীন মাআয ||
অন্তরের ইচ্ছাকে আরবিতে নিয়ত বলে। আর রোজা রাখার জন্য এই নিয়ত করা জরুরি। কারণ, নিয়ত করা ব্যতীত সারাদিন পানাহার থেকে বিরত থাকলেও শরীয়তের দৃষ্টিতে তাকে রোজা বলা হবে না। এই নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা জরুরি নয়। মনে মনে করলেও হবে। তবে নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা উত্তম। যারা আরবি জানে না তারা বাংলায় মুখে উচ্চারণ করে রোজার নিয়ত করতে পারেন। অন্তরে রোজার ইচ্ছার সাথে সাথে মুখে এভাবে বলবেন, ‘আমি আগামীকাল রোজা রাখার নিয়ত করলাম’।(ফাতাওয়া আলমগিরি : ১/১৯৫)
তবে সমাজে রোজার নিয়ত বলে একটি দোয়া প্রচলিত আছে। দোয়াটি হলো—
نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ (নিয়ত) করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে (আমার রোযা) কবুল কর, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।
রমজানে রাতেই রোজার নিয়ত করা উত্তম। তবে সেইদিন সূর্য মধ্যাকাশ থেকে ঢলার প্রায় এক ঘণ্টা আগে নিয়ত করলেও রোজা হয়ে যাবে। কিন্তু শর্ত হলো, সুবহে সাদিকের পর থেকে নিয়ত করার পূর্ব পর্যন্ত রোজার পরিপন্থী কোনো কাজ করা যাবে না। যেমন কিছু খাওয়া, পান করা ইত্যাদি। অবশ্য রোজা রাখার জন্য সাহরি খেলেও রোজার নিয়ত হয়ে যায়। (বাদায়িউস সানায়ে : ২/২২৯; আল বাহরুর রায়িক : ২/২৫৯)
সালামা ইবনুল আকওয়া (রা.) বলেন, (আশুরার রোজা যখন ফরজ ছিল তখন) আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আসলাম গোত্রের একজন ব্যক্তিকে ঘোষণা করতে বললেন, যে সকাল থেকে কিছু খায়নি সে বাকি দিন রোজা রাখবে। (সহিহ বুখারি: ২০০৭)
উল্লেখ্য, নফল রোজার নিয়তের বিধান রমজানের রোজার মতোই। কিন্তু কাজা ও কাফফারার রোজার নিয়ত রাতেই করতে হয়। সুবহে সাদিকের পর কাজা কাফফারার রোজার নিয়ত করা যায় না। এ ছাড়া কেউ যদি অনির্দিষ্টভাবে যে কোনো দিন রোজা রাখার মানত করে, তাহলে ওই মানতের রোজার নিয়তও রাতে করা জরুরি।
কারো যদি রমজানের রোজা একাধিক কাজা হয়ে যায়, তাহলে কাজা আদায় করার সময় কোন রমজানের রোজা কাজা আদায় করছে এটা নির্দিষ্ট করে নিয়ত করা জরুরি। তবে যদি কাজা রোজার সংখ্যা অনেক বেশি হয় এবং তা নির্দিষ্ট করা কঠিন হয় তাহলে ‘জীবনের সর্বপ্রথম কাজা রোজা রাখলাম’ এভাবেও নিয়ত করা যাবে।
এমএম/