|| মুফতি সাখাওয়াত হোসেন ||
পুরুষের জন্য জামাআতে নামায সুন্নতে মুআক্কাদাহ। অথচ মহিলাকে মসজিদ ও জামাআতের পরিবর্তে ঘরের ভিতরে নামায পড়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।
হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ মহিলাদের অন্দর মহলের নামায, বাহির ঘরের নামায থেকে উত্তম এবং অন্দর মহলের ভেতরের গোপন ও নির্জন কক্ষের নামায, অন্দর মহলের নামায থেকে উত্তম। সুনানে আবু দাউদ, খ. ১ পৃ. ৮৪ হাদীস নং: ৫৭০, সহীহ ইবনে খুযাইমা, খ. ২, পৃ. ৮১৪, হাদীস নং ১৬৮৮, ১৬৯০, মুসতাদরাকে হাকেম, খ. ১, পৃ. ৩৩৯।
উপরোক্ত মাসআলাসমূহে লক্ষণীয় বিষয় হলো, অনেকগুলো কাজ ফরজ হওয়া সত্ত্বেও মহিলাদের সতর ও পর্দার বিধানকে প্রাধান্য দিয়ে তাদের জন্য স্বতন্ত্র হুকুম দেয়া হয়েছে। কিন্তু অতি দুঃখের সাথে বলতে হয় যে, কোনো কোনো মহল থেকে গ্রহণযোগ্য কোনো দলীল প্রমাণের উপর ভিত্তি না করেই পুরুষ ও মহিলার নামাযের মাঝের পার্থক্যকে অস্বীকার করার প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাই প্রয়োজন দেখা দিয়েছে দলীল ভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি পরিস্কার করে দেয়া।
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ যদি ঘর সমূহে মহিলারা ও বাচ্চারা না থাকত, তাহলে আমি ইশার নামাযের জামাত কায়েম করতাম এবং যুবকদেরকে আদেশ করতাম যেন তারা (যারা জামাতে শামেল হয়নি তাদের) ঘর সমূহে যা কিছু আছে সব সহ আগুন লাগিয়ে দেয়। মুসনাদে আহমদ, খ. ৮, পৃ. ৪২২, হাদীস নং:৮৭৬২।
রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাস্তির প্রতিজ্ঞা ঐ সকল লোকদের জন্য করেছিলেন যারা ইশার জামাতে উপস্থিত হতনা। উল্লেখিত হাদীস দ্বারা সকলেই ভাল ভাবে বুঝতে পেরেছেন যে, রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে শাস্তি দেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন শুধু মাত্র ঐ সকল পুরুষদের জন্যই, যারা ইশার জামাতে উপস্থিত হতনা। কিন্তু মহিলা ও বাচ্চারা ঘরে থাকার কারণে তা বাস্তবায়ন করা থেকে বিরত থেকেছেন।
হাদীসটিতে মহিলাদের কথা উল্লেখ করাটা এ কথার স্পষ্ট দলীল যে, তারা জামাতে উপস্থিত হওয়ার ব্যপারে আদিষ্ট مکلف নয় এবং জামাতে উপস্থিতি তাদের জিম্মায় জরুরী নয়। তা না হলে তারাও এ অপরাধে অপরাধী হত এবং শাস্তির উপযোগি হত। পক্ষান্তরে তাদের ঘরে থাকাটা পুরুষদের শাস্তির জন্য প্রতিবন্ধক হত না। যেহেতু তাদের অনুপস্থিতি শরীআতের দৃষ্টিতে অপরাধ ছিল না; তাই তাদের জ্বলে যাওয়ার আশংকাই পুরুষদের শাস্তির জন্য প্রতিবন্ধক হয়েছে। অনুরূপ ভাবে দ্বিতীয় পরিচ্ছেদের হাদীসগুলোও একথা প্রমাণ করে যে, জামাতে উপস্থিত হওয়া মহিলাদের দায়িত্ব নয়।
লেখক : মুহাদ্দিস, জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া খিলক্ষেত ঢাকা।
হাআমা/