ইরানের রাজধানী তেহরানে হামাস-প্রধান ইসমাইল হানিয়া হত্যাকাণ্ডের প্রায় এক মাস হয়ে গেলেও ইসরাইলে হামলা চালায়নি ইরান। মধ্যপ্রাচ্য-ভিত্তিক বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, তেল আবিবে হামলা চালালে পাল্টা আঘাতে নিজেদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় ইরানি প্রশাসনকে সতর্ক করেছেন দেশটির শীর্ষ রাজনীতিবিদেরা।
গেল ৩১ জুলাই তেহরানে নিহত হন হামাস-প্রধান ইসমাইল হানিয়া। হামলার দায় ইসরাইলের ওপর চাপিয়ে কঠোর প্রতিশোধের হুমকি দেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। শুরুর দিকে তেল আবিবে হামলা চালাতে ৪৮ ঘণ্টার ডেডলাইন দেয়া হয়। পরে বলা হয় কয়েক দিনের মধ্যে নেয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা। তবে ঘণ্টা পেরিয়ে দিন, আর দিন পেরিয়ে মাস হয়ে গেলেও এখনও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেনি ইরান। কেন সরাসরি হামলার ঘোষণার পরও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেনা তেহরান, এ নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
ইরানের এই নিশ্চুপ থাকার পেছনের কারণ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মধ্যপ্রাচ্য-ভিত্তিক বিভিন্ন গণমাধ্যম। বলা হচ্ছে, তেল আবিবে হামলা চালালে পাল্টা আঘাতে নিজেদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ইরানের শীর্ষ রাজনীতিবিদেরা। এ বিষয়ে প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান প্রশাসনকে বারবার সতর্ক করছে তারা।
ইসরাইলি জবাব কতোটা তীব্র হতে পারে তা নিয়েও চিন্তিত ইরান। হামলা সামলাতে ব্যর্থতার ভয়, মধ্যপ্রাচ্য-জুড়ে বড় সংঘাত ছড়িয়ে পড়া এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টিও ভাবাচ্ছে তেহরানকে। গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির আলোচনাকেও বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছে না ইরান। তেহরানের কোন পদক্ষেপ যুদ্ধ বন্ধে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এমন কথা বলার সুযোগ পশ্চিমাদের দিতে রাজি না পেজেশকিয়ান প্রশাসন।
এ ছাড়া ইসরাইলে হামলা চালালে ইরান-বিরোধী ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের পথ সুগম হবে এটাও মনে করছে তেহরান। ডেমোক্র্যাটদের চেয়ে রিপাবলিকানরা ইরানের ওপর বেশি আগ্রাসী মনোভাব পোষণ করে বলে মনে করে তারা। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন দেরিতে হলেও ইসরাইলে হামলা চালাবে ইরান। তেল আবিবকে কড়া জবাব দিতে ইরানি জনগণের প্রত্যাশা ও মধ্যপ্রাচ্য-জুড়ে সংঘাত না ছড়ানোর বিষয়ে ভারসাম্য করতে চাচ্ছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
বিনু/