বাংলায় তাপপ্রবাহ চলছে। তারমধ্যে মোটের ওপর শান্তিতেই মিটল লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট।
হাতে গোনা কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া তেমন কোনও বড় ঘটনা ঘটেনি বলেই জানাল নির্বাচন কমিশন। শুক্রবার(২৬ এপ্রিল) পশ্চিমবঙ্গে ভোট ছিল রায়গঞ্জ, বালুরঘাট এবং দার্জিলিং এ। সব মিলিয়ে ভারতের ১২ রাজ্য এবং এক কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল মিলিয়ে মোট ৮৮ আসনে হয় দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ।
এদিন সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে থেকে রাজ্যের প্রধান নির্বাচনী কর্মকর্তা আরিজ আফতাব বলেছেন, ভোটকে ঘিরে কিছু অভিযোগ জমা পড়েছে। তবে সামগ্রিকভাবে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট হয়েছে। বড় ধরনের কোনো ঘটনা বা অভিযোগ নেই। বিকেল ৫টা পর্যন্ত বাংলার তিন আসনে ভোট পড়েছে ৭১ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
অপরদিকে, তীব্র গরমে ভোট প্রচারণায় রাজ্যে এসেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মালদা উত্তরে জনসভা করেন। পাশাপাশি মেদিনীপুর পূর্বে জোড়া জনসভা করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দুই জেলায় ভোট রয়েছে তৃতীয় ও ষষ্ঠ ধাপে।
গরমের তেজে কার্যত মালদহে জারি হয়েছে তাপপ্রবাহ। চল্লিশের উপর তাপমাত্রা। কিন্তু, নরেন্দ্র মোদি আসছে শুনে বিজেপি কর্মীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। উপচে পড়ছিল মাঠ। রোদের তেজের মধ্যেই দাঁড়িয়ে ছিলেন শ’য়ে শ’য়ে মানুষ।
ভিড় দেখে আবেগ প্রবণ হয়ে মোদি বলেছেন, আমার প্রতি আপনাদের উৎসাহ ও প্রেম দেখে আমি আপ্লুত। আপনারা এত ভালবাসা দিচ্ছেন যে মনে হয় আগের জন্মে আমি বাংলায় জন্মেছিলাম। বা পরের জন্মে আমি বাংলার কোনও মায়ের কোলে জন্ম গ্রহণ করব। নয়ত এত ভালবাসা কখনও পেতাম না।
তিনি আরও বলেছেন, এত লোক আজ সভায় এসেছেন যে এই মাঠে কুলোচ্ছে না। লোকজন রোদের মধ্যেই দাঁড়িয়ে আছেন। আর তাদের উদ্দেশ্যে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। কিন্তু আপনাদের বলছি, আপনাদের এই তপস্যা আমি বেকার যেতে দেব না। আমি উন্নতি মাধ্যমে আপনাদের ভালবাসা ফিরিয়ে দেব।
২২ এপ্রিল রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশে চাকরি হারিয়েছে - গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশের শিক্ষক এবং অশিক্ষক মিলিয়ে মোট ২৫ হাজার ৭৫৩ জন। এ বিষয়ে এদিন মোদির দাবি, শিক্ষা ক্ষেত্রে বড় মাপের দুর্নীতি করেছে রাজ্যের শাসক দল। যুব সমাজের উন্নতির পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেছেন, তৃণমূল সরকার বাংলার যুব সমাজের উন্নতির পথে বাধা সৃষ্টি করেছে। এত বড় শিক্ষা দুর্নীতি হয়েছে যে, ভাষায় প্রকাশ করা যাচ্ছে না। চাকরি যাওয়ার কারণে ২৬ হাজার পরিবারের রুজিরুটি শেষ হয়ে গিয়েছে। যারা চাকরি পেতে ধারদেনা করে আনা অর্থ তৃণমূলকে দিয়েছিল, সেই ঋণও মানুষের মাথায় চেপে গিয়েছে। অন্যদিকে, বিজেপি সরকার যুব সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করছে। এই সরকারকে বাংলার মানুষ মেনে নেবে না বলে দাবি করেন মোদি।
ইতিমধ্যেই এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। হাইকোর্টের রায়কে ‘বেআইনি’ বলে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বলেছেন, ২৬ হাজার ছেলেমেয়ের চাকরি কেড়ে নিয়ে বলছে চার সপ্তাহের মধ্যে ১২ শতাংশ সুদে টাকা ফেরত দাও। মগের মুল্লুক নাকি? আমরা মানি না। ইচ্ছা হলেই চাকরি খেয়ে নেওয়া যায় নাকি? এছাড়া মোদি দেশ বেঁচে দিচ্ছে বলেও এদিন দাবি করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এনএ/