রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪ ।। ২৫ কার্তিক ১৪৩১ ।। ৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
উপদেষ্টাদের দপ্তর বদল, কে পেলেন কোনটি আলওয়াসি হজ্ব গ্রুপ মিট আপ ১৬ নভেম্বর, যেভাবে করবেন রেজিস্ট্রেশন শেরপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র হত্যা মামলায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার ‘জুলাই গণহত্যার দ্রুত বিচার কার্যকরের দাবিতে সুস্পষ্ট রূপরেখা প্রণয়নের আহ্বান’ শপথ নিলেন নতুন ৩ উপদেষ্টা খেলাফত মজলিস নিউইয়র্ক শাখার উদ্যোগে দায়িত্বশীল সমাবেশ অনুষ্ঠিত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের তালিকা চূড়ান্ত করতে গণবিজ্ঞপ্তি শায়খ আহমাদুল্লাহকে একুশে পদক প্রদানের প্রস্তাব কেন, জানালেন মুফতি এনায়েতুল্লাহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মঞ্চে মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী সড়ক দুর্ঘটনায় ইমামের মৃত্যু

সেনাবাহিনীতে গণহারে নিয়োগ দিতে ব্যাপক ইউনিফর্মের উৎপাদন জান্তার

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ফাইল ছবি

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারের জান্তা সরকার ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘাত প্রকট আকার ধারণ করেছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর আক্রমণে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা একের পর এক ঘাঁটি হারাচ্ছে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতে আশ্রয় নিচ্ছে।

এমন অবস্থায় প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের জন্য সামরিক বাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করেছিল দেশটির জান্তা সরকার। আর এরপরই দেশটিতে সেনাবাহিনীর ইউনিফর্মের ব্যাপক উৎপাদন শুরু করা হয়েছে।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম দ্য ইরাবতী।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামরিক মালিকানাধীন পোশাক কারখানাগুলোকে চলতি বছরের এপ্রিলের মধ্যে সেনাবাহিনীর ইউনিফর্ম ব্যাপকভাবে তৈরি করা শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা। এর আগে নাগরিকদের সামরিক বাহিনীতে যোগদান বাধ্যতামূলক করা হয়।

আইন অনুযায়ী, এখন থেকে ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী সকল পুরুষকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীতে যোগ দিয়ে অন্তত দুই বছর কাজ করতে হবে। আর নারীদের মধ্যে যাদের বয়স ১৮ থেকে ২৭ বছরেরে মধ্যে, তাদেরকেও একই মেয়াদে সামরিক বাহিনীতে চাকরি করতে হবে।

জান্তা সরকার ঘোষণা করেছে, আগামী এপ্রিলে থিংয়ান ছুটির পরে গণহারে নিয়োগ শুরু হবে, প্রতিটি ধাপে ৫ হাজার লোককে সামরিক বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বেসামরিক সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতা দখল করেছিল সেনাবাহিনী। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং অভ্যুত্থানবিরোধী যোদ্ধাদের সাথে একের পর এক যুদ্ধে তাদেরকে পরাজিত হতে দেখা যাচ্ছে।

ইরাবতী বলছে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সেনাবাহিনীর মালিকানাধীন টেক্সটাইল এবং পোশাক কারখানাগুলোকে নিয়োগপ্রাপ্ত সেনাসদস্য এবং মিলিশিয়াদের জন্য ১ লাখ সেট সেনা ইউনিফর্ম সরবরাহ করার নির্দেশ দিয়েছে।

ইয়াঙ্গুনের হ্লাইন এবং মিনগালার্ডন টাউনশিপ, মান্দালয় অঞ্চলের মেইকটিলা, বাগো অঞ্চলের পাইনপংগি এবং ম্যাগওয়ে অঞ্চলের পবিন্টবিউতে সামরিক বাহিনীর পোশাক কারখানা রয়েছে। পোশাক কারখানাগুলোর কর্মচারীদের মতে, গত সপ্তাহে কারখানাগুলো ইউনিফর্ম তৈরির অর্ডার পেয়েছে।

ইয়াঙ্গুনের সামরিক মালিকানাধীন কারখানাগুলো গত ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে সামরিক ইউনিফর্ম তৈরি করা শুরু করেছে বলে একজন কর্মচারী দ্য ইরাবতীকে জানিয়েছেন।

আগামী এপ্রিল মাসের শেষের দিকে মিলিশিয়া ইউনিফর্মের ৫ হাজার সেট এবং আরও ৫ হাজার সামরিক ইউনিফর্ম সেনা কর্তৃপক্ষের কাছে কারখানাটির হস্তান্তর করার কথা রয়েছে বলেও ওই কর্মচারী জানান।

প্রসঙ্গত, দেশের সামরিক বাহিনীতে নাগরিকদের বাধ্যতামূলক যোগদানের বিধান রেখে ২০১০ সালে মিয়ানমারে একটি আইন চালু করা হয়েছিল। কিন্তু এতদিন সেটি কার্যকর করা হয়নি। আইনটিতে দুই বছরের জন্য নাগরিকদের সামরিক বাহিনীতে চাকরি করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

তবে আইনে এটাও বলা হয়েছে, জরুরি অবস্থায় সামরিক বাহিনীতে চাকরির এই মেয়াদ পাঁচ বছর পর্যন্ত বাড়ানো যেতে পারে। এমনকি নাগরিকদের কেউ এই আইন না মানতে চাইলে একই মেয়াদে জেল খাটতে হতে পারে বলেও আইনে বলা হয়েছে।

২০২১ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল জান্তা সরকার। সম্প্রতি সেই জরুরি অবস্থা আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানো হয়েছে। ২০১১ সালের গণতন্ত্রের দিকে অগ্রসর হওয়ার আগে মিয়ানমার প্রায় ৫০ বছর নিপীড়নমূলক সামরিক শাসনের অধীনে ছিল। এরপর একটি গণতান্ত্রিক সরকার দেশটির ক্ষমতা গ্রহণ করে।

কিন্তু ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির সামরিক বাহিনী পুনরায় ক্ষমতা দখল করে নেয়। এরপর থেকেই মিয়ানমারে যুদ্ধ ও সহিংসতা চলে আসছে। এতে দেশটির হাজার হাজার নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন এবং দশ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।

মূলত স্বাধীনতার পর থেকে সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সাথে সামরিক বাহিনীর সংঘাত চলমান থাকলেও, সাম্প্রতিক সময়ে সেই সংকট সামাল দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে দেশটির জান্তা বা সামরিক শাসকরা।

এনএ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ