শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান দেশের বিভিন্ন সেক্টরে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে পরাজিত শক্তি: চরমোনাই পীর ‘শিক্ষা কমিশনে দেশের সর্বমহলে শ্রদ্ধেয় আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’ আলমডাঙ্গায় রাসূল (সা.)-কে নিবেদিত কবিতা পাঠ ছাত্র-জনতার ওপর গুলি বর্ষণকারী শাহবাগ থানা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেফতার পার্বত্য জেলায় চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে যা জানাল আইএসপিআর ঢাবিতে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক : ইসলামী ছাত্র আন্দোলন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না: সৌদি যুবরাজ প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারলে দায় বর্তাবে ইহুদিদের ওপর: ট্রাম্প পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে সরকার, সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

গাজায় হতাহত ৬৬ হাজার, ৪৫ শতাংশই শিশু 

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ছবি : সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় নিহত ও আহতের সংখ্যা ৬৬ হাজারের বেশি। এদের মধ্যে ৪৫ শতাংশই শিশু। এছাড়া গাজায় দুই মাসের বেশি সময় ধরে হামলায় ৩৬ শতাংশ বাড়ি ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েল। সেখানকার পরিস্থিতি মারাত্মক বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বিশেষ ক্ষমতা ব্যবহার করেও যুদ্ধ থামাতে ব্যর্থ হয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় নিহত হয়েছে ১৭ হাজার ৭০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছে অন্তত ৪৮ হাজার ৭৮০ জন। খবর আল জাজিরার

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা বলেছেন, 'গাজার জনগণের বিরুদ্ধে অপরাধ ও গণহত্যা সব বর্ণনার বাইরে। আমেরিকান ও ইউরোপীয় সমর্থনে ফিলিস্তিনের অস্তিত্বের অবসান ঘটানো অমানবিক।'

আশরাফ আল-কুদরা বলেছেন, ইসরায়েলের অবিরাম বোমাবর্ষণে প্রতিদিন শত শত মানুষ নিহত হচ্ছে এবং হাজার হাজার আহত হচ্ছে। নিহতদের প্রায় অর্ধেক শিশু।

তিনি বলেন, 'ইসরায়েলিরা যেসব এলাকাকে নিরাপদ বলে দাবি করছে সেগুলোকেই বারবার লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে। এটি এখনও গাজা উপত্যকা জুড়ে ঘটছে - কোনও নিরাপদ জায়গা নেই।

গাজার কর্মকর্তা জানান, 'ইসরায়েলের আগ্রাসনের শিকারদের ৭০ শতাংশ শিশু ও নারী। তারা যেসব বাড়িতে বাচ্চারা থাকে সেগুলোকে টার্গেট করছে। হতাহতদের প্রায় ৪৫ শতাংশ শিশু। এটা পৃথিবীর আর কোথাও দেখা যায় না।'

মধ্য ও দক্ষিণ গাজার দুটি হাসপাতাল গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বোমা হামলায় নিহত ১৩৩ জনের মৃতদেহ পেয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় শহর দেইর এল-বালাহের আল-আকসা হাসপাতালে ৭১টি মৃতদেহ আনা হয়েছে। হাসপাতালটিতে ১৬০ জন আহত ব্যক্তিকেও আনা হয়।

এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে ৬২ জনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এই হাসপাতালএখনও দক্ষিণ গাজায় পরিচালিত প্রধান চিকিৎসা সুবিধাগুলোর একটি। এছাড়াও ৯৯ জন আহত ব্যক্তিকে সেখানে আনা হয়।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বলছে, মাঝারি ক্ষুধায় পতিত হয়েছে গাজার ৫২ শতাংশ এলাকার মানুষ। সেখানকার ৯১ শতাংশ পরিবার ক্ষুধার্ত অবস্থায় বিছানায় যায় এবং ৬৩ শতাংশ মানুষ সারাদিনই কোনো খাবার না খেয়ে থাকার কথা জানিয়েছে। গাজার উত্তরাঞ্চলে এই অবস্থা সবচেয়ে ভয়াবহ।

ডব্লিউএফপি জানিয়েছে, গাজায় খাদ্য সরবরাহের চেইন ভেঙে পড়েছে। এছাড়া গাজায় কাজ করা জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ এর মুখপাত্র আদনা আবু হাসনা জানিয়েছেন, গাজায় অনাহারে থাকা মানুষের মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, 'আমি আজ চারটি আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলাম- এর মধ্যে একটি খান ইউনিসের সবচেয়ে বড় আশ্রয়কেন্দ্রে, সেখানে প্রায় ৩৫ হাজার বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি। আমি আপনাকে বলতে পারি যে রাফাহ এবং খান ইউনিস এবং উত্তরাঞ্চলে বহু ক্ষুধার্ত মানুষ রয়েছে।'

এদিকে ইসরায়েলের নির্বিচারে হামলার মধ্যে তাদেরকে আরও ১০৬ মিলিয়ন ডলারের ট্যাঙ্ক কার্তুজ বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা সহায়তা এবং অস্ত্র বিক্রি উভয় ক্ষেত্রেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র সরবরাহ করে।

বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলকে যুদ্ধে প্রয়োজনীয় অস্ত্র সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি অব্যাহত রেখেছে। তবে মার্কিন আইনপ্রণেতারা এই বিষয়টি আবারও বিবেচনা করে দেখার আহ্বান জানিয়েছে।

জাতিসংঘ বলেছে যে, গত সপ্তাহে তারা উত্তর গাজা এবং গাজা শহরের স্কুলগুলোতে বা তার আশেপাশে কমপক্ষে ১৩টি হামলা রেকর্ড করেছে। এছাড়াও হাসপাতালে বা কাছাকাছি অন্তত ১৫টি হামলার ঘটনা ঘটেছে।

ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস জানিয়েছে, এই স্কুলগুলো হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত বেসামরিক মানুষকে আশ্রয় দিচ্ছে।

বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বেইট লাহিয়ার বেশ কয়েকটি স্কুলে হামলা চালিয়েছে এবং বয়স্ক পুরুষ, ছেলে এবং একজন সুপরিচিত ফিলিস্তিনি সাংবাদিকসহ কয়েকশ পুরুষ ফিলিস্তিনিকে আটক করেছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ফিলিস্তিনি বন্দীদের চোখ বেঁধে এবং উলঙ্গ করে রাখে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যে বস্ত্রহীন অবস্থায় তাদেরকে ট্রাকে করে অজানা গন্তব্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এদিকে গাজায় স্থল অভিযানে ইসরায়েলি সৈন্যের মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৯৯ জন হয়েছে। শনিবার দক্ষিণ গাজায় যুদ্ধের সময় আরও চার সেনা নিহত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সেনাবাহিনী।

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলেছে যে, ৩১ অক্টোবর গাজায় বড় স্থল অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে ৯৯ সেনা নিহত হয়েছে। এর মধ্যে সম্প্রতি যুদ্ধবিরতি শেষের পর থেকে অন্তত ২৭ জন সেনা নিহত হয়েছে।

এনএ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ