|| কাউসার লাবীব ||
টানা বৃষ্টি এবং ভারত থেকে আসা ঢলে কুমিল্লা, ফেনী, লক্ষীপুর, চাঁদপুরসহ ১৩ জেলায় অন্তত ৫০ লাখ মানুষ পানিবন্দি। সীমাহীন দুর্ভোগ বানভাসি এসব মানুষ। দুর্গতদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে সাধারণ মানুষসহ নানা সংগঠন। ত্রাণ তৎপরতায় বিপুল সাড়া পেয়েছে আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন। সংস্থাটিতে এরই মধ্যে সাড়ে তিন লাখ মানুষ অনুদান দিয়েছে। ত্রাণকাজে সহায়তার জন্য স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগ দিয়েছেন ৪ হাজারের বেশি। এবার আলোচিত এই ফাউন্ডেশনের বন্যা তহবিলে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে জাতীয় শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক সংগঠন কলরব।
কলরবের নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ বদরুজ্জামান তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি জানান।
তিনি লিখেন, আলহামদুলিল্লাহ ক্রমশ বন্যা প্লাবিত জনপদের উন্নতি হচ্ছে। দূর্গত এলাকার জনগণের ভাষ্যমতে এমন বন্যা তারা নিকট অতীতে দেখেননি। বলা যায়, স্মরণকালের ভয়াবহ বিপর্যয়ে পড়েছিলেন তারা। এ বিপদে তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের জনগণ। মত-পথ ভুলে গিয়ে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য কাজ করছেন সবাই।
‘আমরা কলরব পরিবারও শুরু থেকে সাধ্যানুযায়ী এ কাফেলায় ছিলাম। এখনো অনস্পটে আমাদের আবু রায়হান এবং হোসাইন আদনানসহ কয়েকজন দূর্গত মানুষের সেবায় কাজ করে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত পাশে থাকবো এই প্রত্যয় আমাদের ইনশাআল্লাহ।’ –জানান কলরবের এই নির্বাহী পরিচালক
তিনি বলেন, বন্যা প্লাবিত এলাকায় কাজ করতে গিয়ে মনে হয়েছে, এখানে সমন্বয়ের প্রচণ্ড অভাব। এর মাঝে ইলেক্ট্রিসিটি এবং মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ, এতে বিপর্যয় আরও বেড়েছে। সেনাবাহিনী ছাড়া স্থানীয় প্রশাসন এবং স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার কার্যক্রম চোখেই পড়েনি, যে কারণে অনেক মানুষ প্রচণ্ড আগ্রহ নিয়ে গিয়ে ইফেক্টিভ কার্যক্রমহীন ফিরে এসেছে। এমনও হয়েছে, এক এলাকায় দিনে একাধিক টিম গিয়ে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে আসছে, পাশের এলাকায় কেউ যায়নি। ভেতরের গ্রামগুলো খুব কম মানুষই ত্রাণ নিয়ে পৌছাতে পেরেছে।
‘এ জায়গায় আমার মনে হয়েছে, ব্যক্তিগত বা ছোট পরিসরে যারা কাজ করছেন তাদের জন্য সেনাবাহিনী অথবা বড় পরিসরে কাজ করা প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় করলে ফলাফল ভালো পাওয়া যাবে। ইতোমধ্যে সেনাবাহিনীর সাথে অনেক প্রতিষ্ঠান সমন্বয় করে কাজ করছে, যে কারণে এখন সবজায়গায় মোটামুটি ত্রাণ পৌছাচ্ছে।’ –যুক্ত করেন তিনি
মুহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, এ চিন্তা থেকে কলরবের বন্যা তহবিলের সকল অর্থ একসাথে করে এর উল্লেখযোগ্য অংশ আসসুন্নাহ ফাউন্ডেশনে জমা দিলাম। শায়েখ আহমাদুল্লাহ হাফিজাহুল্লাহ এর বিচক্ষণ নেতৃত্বে বন্যা দূর্গত মানুষের মাঝে আসসুন্নাহ ফাউন্ডেশন সুচারুভাবে কাজ করছে। সেনাবাহিনীর সাথে সমন্বয় করে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সেবায় এ প্রতিষ্ঠান স্বল্প এবং দীর্ঘ মেয়াদি প্রজেক্ট নিয়ে আমাদের সকলের জন্যে উপকার বয়ে আনবে, এ প্রত্যাশা সকলের । মহান আল্লাহ সকল কার্যক্রম কবুল করুন। আমিন
প্রসঙ্গত, ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপক ত্রাণ তৎপরতা চালিয়ে মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।
জানা যায়, কয়েকদিনে ৭০ হাজার পরিবারের মাঝে ত্রাণ পৌঁছে দিয়েছেন ফাউন্ডেশনটির স্বেচ্ছাসেবকরা। এখন পর্যন্ত প্রায় ১২ শ’ টন চাল ডালসহ নানা সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। বন্যার পর দেওয়া হবে আরও এক হাজার টন চাল। এছাড়া, যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন তাদের টিনসহ আর্থিক সহায়তাও দেবে ফাউন্ডেশনটি।
কেএল/