পবিত্র রমজানে তারাবির হাফেজ ও মুসল্লিদের করণীয় সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ নসিহত করেছেন বিশ্বের প্রখ্যাত ইসলামি ব্যক্তিত্ব ও পাকিস্তান সুপ্রিমকোর্টের শরীয়া বেঞ্চের সাবেক বিচারপতি মুফতি মুহাম্মদ তাকি উসমানি।
তিনি বলেন, হাফেজদের নিয়ত নষ্ট হলো কিভাবে? কি কারণে ইবাদতের জন্য পারিশ্রমিক গ্রহণ শুরু হলো? মোটকথা খারাপ নিয়তের এই পালা কিভাবে শুরু হলো?
শুধু এ কারণে যে, হকদারদের খবর নেওয়া হয় না। এমনিতে তো নিরামিষও জুটে না, তবে বৃহস্পতিবার হালুয়া চলে আসে। যখন কোন মৌলবী সাহেব বলে যে, বৃহস্পতিবারের সাথে খানা দেওয়াকে কেন নির্দিষ্ট করে রেখেছেন, তখন খারাপ লাগে।
সুধীবৃন্দ। চিন্তা করুন তো! আটদিনের খানা কি একদিনে খেতে পারবেন? গরীব তালেবে ইলম কি অপরাধ করলো যে, সারা সপ্তাহে তার খোঁজ খবর নেবেন না আর একদিন এতটুকু এনে দিবেন যে, সে খেতে পারে না।
তিনি আরো বলেন- উচিত তো তাদের খেদমত করতে থাকা, যেন তাদের নিয়ত নষ্ট না হয়ে যায়। কিন্তু মানুষ এমন করে না। কারণ হলো, দ্বীনের খেদমতকারীদেরকে লোকেরা তুচ্ছ ও হেয় মনে করে। এজন্যই তাদের কোন সম্মানও করা হয় না, তাদের সাথে সৌজন্যমূলক আচরণও করা হয় না এবং এ কারণেই এই রেওয়াজ হয়ে গেছে যে, আজানদাতার জন্য সেই অর্থ নির্ধারণ করা হয়, যা কারো কাজে লাগে না।
পঙ্গু, বিকলাঙ্গ, পক্ষাঘাতগ্রস্ত, যে ব্যক্তি কোন কাজের উপযোগী থাকে না, আজান দেওয়ার পেশা সে নিয়ে নেয়। অতঃপর কেউ তার খবর নেয় না। এজন্যই তাদের নিয়ত নষ্ট হয়ে গেছে।
মুফতি তাকি উসমানি বলেন, আমরা যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি, শুধু রমজান নয়, বরং বাকি এগার মাস। যেখানে আমরা নিজেদের জন্য পোশাক বানাই, সেখানে একটি পোশাক তাকেও বানিয়ে দেবো। আপনারা যে খাবার খান, কখনো কখনো সে খাবারে তাদেরও দাওয়াত করবেন এবং নিজেদের খরচের টাকার সাথে তাদের জন্যও কিছু টাকা বাহির করবেন।
মোটকথা রমজান ছাড়া অন্যান্য মাসেও আমরা যদি হাফেজদের যথারীতি খোঁজ-খবর রাখতে থাকি, তারপর রমজানে যদি তাদের বলা হয়, কুরআন শরিফ শুনান, তাহলে কি তারা শোনাবে না?
অবশ্যই তারা আনন্দের সাথে রাজি হয়ে যাবে।
কেননা এক্ষেত্রে ইবাদতের বিনিময়ে কোন পারিশ্রমিক থাকেনি। আসল কথা হলো, পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে হাফেজদেরকে দিয়ে কুরআন শরিফ পড়ানো জায়েয নেই। এমনিভাবে মহিলাদেরকেও ঘরে গিয়ে কুরআন শরিফ শোনানো সঙ্গত নয়।
এনএ/