|| মাওলানা গিয়াসুদ্দীন আহমদ ||
তারতিলের সঙ্গে তলাওয়াত পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন—
وَ رَتِّلِ الْقُرْاٰنَ تَرْتِیْلًا.
কুরআন তেলাওয়াত করুন ধীরে ধীরে, স্পষ্ট করে। ( সূরা মুয্যাম্মিল : ৪ )
কুরআন মাজিদ তেলাওয়াতের গুরুত্বপূর্ণ একটি আদব হচ্ছে তারতিলের সঙ্গে তেলাওয়াত করা। অর্থাৎ তাজবিদের সঙ্গে থেমে থেমে পড়া, যাতে প্রতিটি শব্দ প্রতিটি অক্ষর বুঝে আসে। এভাবে পড়লে কুরআন তেলাওয়াতের স্বাদ পাওয়া যায়, কুরআন বুঝতে ও তাতে চিন্তা করতে সুবিধা হয় এবং দিলের উপর তাছীর হয়।
তারাবির নামাজেও এ আদবটি খেয়াল রাখা চাই। তারাবির নামাজ মাঝারি ঢঙে পড়াই সমীচীন— খুব ধীরে নয়, খুব দ্রুতও নয়। যেন তাজজিদের সঙ্গে একদম স্পষ্টভাবে প্রত্যেকটা অক্ষর উচ্চারণ করা হয়। মাখরাজ-সিফাত ও মাদ-গুন্নাহগুলো যেন যথাযথভাবে আদায় হয়।
কিন্তু সাধারণ মুসল্লিতের অনেকে চান, নামাজ সত্বর শেষ হোক। তারা প্রত্যাশা করেন, অনেকে তো সরাসরি মুখে বলেও ফেলেন, হাফেজ সাহেবগণ যেন খুব দ্রুত পড়েন। কোনোদিন সময় তুলনামূলক একটু বেশি লাগলে হাফেজ সাহেবদের সমালোচনা করেন। এটা একদম অনুচিত। এতে যেমন অনেক সময় তেলাওয়াতে ভুল থেকে যায়, তেমনি কুরআনের আযমত এবং হকও যথাযথভাবে আদায় হয় না। তারতিলের সঙ্গে তেলাওয়াত করলে কতটুকু সময়ই বা বেশি লাগে। বড়জোর দশ থেকে পনের মিনিট। অথচ কত সময় বেহুদা কাজে ও গল্পগুজবে নষ্ট করা হয়। ভেবে দেখুন, মাত্র দশ-পনের মিনিটের কারণে কত বড় নিয়ামত হাতছাড়া করছেন।
আলহামদু লিল্লাহ, বর্তমানে শহরে কিছু কিছু মসজিদ এমন আছে, যেখানে বিজ্ঞ আলেম ইমামগণ রমযানের পূর্ব থেকে, অর্থাৎ রজব ও শাবান থেকে তারতিলের সাথে তেলাওয়াতের ফাজায়েল বর্ণনা করতে থাকেন। ফলে সেসব মসজিদের মুসল্লীগণের অধিকাংশই ধীরেসুস্থে তারাবি পড়ার প্রতি আগ্রহী হন এবং তারতিলের সঙ্গে তারাবি পড়া যে অতি ফজিলত ও সৌভাগ্যের বিষয় তা জেনে আনন্দিত হন।
ইয়াদ পাকা করা-
তারাবিতে পঠিতব্য অংশটুকু ভালোভাবে ইয়াদ করা চাই। সেজন্য অধিক পরিমাণে তেলাওয়াত করতে হবে। তেলাওয়াতের বিষয়ে কোনো ধরনের অবহেলা ও অলসতা করা যাবে না। কারো অবস্থা এমন যে, পঠিতব্য পারাটি কয়েকবার, হয়ত চার-পাঁচবার পড়েই মনে করে— ইয়াদ হয়ে গেছে আর পড়ার দরকার নেই। কোনোরকম পড়তে পেরেই পড়া থেকে উঠে পড়ে। এটা একদম অনুচিত। এতে কেবল নিজের ক্ষতি নয়, মুসল্লীদের হকও নষ্ট হয়। সেজন্য রমযানে তেলাওয়াতের প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
অতি প্রাচীনকালের কথা নয়; আমাদেরই জীবনের প্রাথমিককালে, এই ধরুন পঞ্চাশ-ষাট বছর আগের কথা— আমাদের আকাবিরের অধীনস্থ ছেলেরা যে পারাটি যেদিন তারাবিতে পড়তেন, সেই পারাটি দিন-রাতে বিশ-ত্রিশবার পড়ার কথা শুনেছি।
হযরত শায়খুল হাদিস মাওলানা যাকারিয়া ছাহেব রাহ.ই তো তারাবিহ পড়ানোর কালে রাতদিনে পারাটি ত্রিশবার পড়তেন। এতে (রমযান) মাসে ত্রিশ খতম হত। ইয়াদ তো মাশাআল্লাহ তাঁদের বছরব্যাপী নিয়মিত তেলাওয়াতের ফলেই হয়ে থাকত। তার পরও তাঁরা পবিত্র রমযান মাসে বিশ-ত্রিশ খতম তেলাওয়াত করতেন।
তো আমাদের হাফেজ তালিবে ইলমগণ কি পবিত্র রমযানে দশ খতমও তেলাওয়াত করবেন না? এমনিতে যারা হাফেয নন, তাদের মধ্যেও তো কতক মানুষ রমযানে দশ খতম কুরআন পড়েন। আমাদের মরহুমা শাশুড়ীআম্মা [হযরত শায়খুল হাদিস রাহ.-এর প্রথম স্ত্রী] রমযানে দশ খতমেরও বেশি তেলাওয়াত করতেন। মামা শ্বশুর হযরত মাওলানা আমিনুল ইসলাম ছাহেব রাহ. বলতেন, ‘বুবুজান রান্না করার সময়ও এক হাতে কুরআন শরিফ নিয়ে পড়েন আর এক হাতে চামচ নিয়ে তরকারি পাকান।’
হযরত হাকিমুল উম্মত রাহ. তো বাদ ফজর কয়েক মাইল হাঁটতেন আর এক মনযিল তেলাওয়াত করে এক সপ্তাহে খতম করতেন। অথচ আমাদের হাফেজ তালিবুল ইলমদের তেলাওয়াতের কী অবস্থা! শোনা যায়, কতক হাফেয শুধু রমযানে তারাবি পড়ার জন্য কিছুদিন আগ থেকে তেলাওয়াত শুরু করে! ফলে ইয়াদ কাঁচা থাকে; যার প্রকাশ ঘটে তারাবীর লুকমার ক্ষেত্রে। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
একারণেই এখন মসজিদে মসজিদে তিন-চারজন হাফেজ তারাবি পড়ায়। অথচ আমাদের বাল্যকালে প্রায় মসজিদে একজন হাফেজ সাহেবই তারাবি পড়াতেন, বড়জোর আরো একজন হাফেজ পেছনে শ্রোতা হিসেবে থাকতেন, তিনি নামায পাড়ানোতে শরীক হতেন না। যতদূর মনে পড়ে, ইমাম হাফেজ সাহেব কোথাও তেমন আটকাতেন না, ফলে শ্রোতা হাফেয ছাহেবের কদাচিৎ মুখ খুলতে হত। এভাবেই নামায শেষ হত।
সেদিনের সঙ্গে বর্তমান কালের তুলনা করলে দুঃখের সীমা থাকে না। বর্তমানে হাফেজদের ইয়াদের কথাটাই বার বার মনে আসে। অনেক হাফেজ ছাত্র সারা বছর পবিত্র কুরআন হয়ত ধরেই দেখে না আর পবিত্র রমযান এলেও ভালো করে ইয়াদ করার কষ্ট নেয় না। আল্লাহ্ই একমাত্র হেফাযতকারী।
তাই হাফেয তালিবে ইলম ভাইদের প্রতি দরখাস্ত— আপনারা কুরআন তেলাওয়াতের প্রতি যত্নবান হোন। সারা বছর ইহতিমামের সঙ্গে কুরআন তেলাওয়াত করুন। আর রমযান মাসের প্রধান কাজই তো কুরআন তেলাওয়াত । বিশেষত যারা তারাবিতে কুরআন শোনান তারা যত বেশি সম্ভব তেলাওয়াত করবেন এবং তারাবিতে পঠিতব্য অংশটুকু পাকাপোক্তভাবে ইয়াদ করবেন। মনে রাখবেন, তারাবিতে মুসল্লিদের কুরআন শোনানো অনেক বড় যিম্মাদারি ও আমানত। এক্ষেত্রে অবহেলা খেয়ানতের শামিল।
তারাবিতেতে লুকমা দান ও গ্রহণ-
যাইহোক প্রথম কাজ তো হল, পঠিতব্য অংশটুকু ভালোভাবে ইয়াদ করা। এর পরও কদাচিৎ তিলাওয়াতে ভুল হয়ে যায়। এটা স্বাভাবিক বিষয়। সেজন্য কখনো পেছন থেকে লুকমা দেওয়ার প্রয়োজন হয়।
এক্ষেত্রে মুসল্লিদের মানসিকতারও সংশোধন প্রয়োজন। তারা হাফেজ সাহেবদের লুকমা আদান-প্রদানকে গুরুতর নিন্দার বিষয় হিসেবে দেখে এবং এর কঠোর সমালোচনা করতে থাকে। ফলে হাফেজ সাহেবগণ লজ্জায় পড়ে যান।
মনে রাখতে হবে, ভুল হওয়াটা স্বাভাবিক। অনেক সময়ই ইয়াদ করার পরও ভুল হয়ে যায়, প্যাচ লেগে যায় বা হঠাৎ আটকে যায়। ভুল সংশোধনের উন্মুক্ত পরিবেশ থাকলে শুধরে নেওয়া সহজ হয়।
যাইহোক, হাফেজ সাহেব তেলাওয়াতে আটকে গেলে বা ভুল পড়লে পেছন থেকে শ্রোতা হাফেজগণ সংশোধনের জন্য লুকমা দেন। এই লুকমা সম্পর্কিত কিছু উসূলী বা মৌলিক বিষয় মেনে চলা কর্তব্য, যাতে তেলাওয়াতে কোনো ত্রুটি না থাকে এবং নামাজে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়।
প্রথম থেকেই শ্রোতা হাফেজদের তেলাওয়াতকারী হাফেজের পড়ার প্রতি চৌকান্না ও পূর্ণ মনোযোগী হতে হবে। যে আয়াতে ভুল হবে, হাফেজ সাহেব নিজেই তা সংশোধনের চেষ্টা করবেন। ভুল পড়ার বা কোথাও আটকে যাওয়ার সাথে সাথে পেছন থেকে শ্রোতা হাফেজ সাহেব লুকমা দেবেন না। হাফেজ ছাহেব চেষ্টা করেও ভুল সংশোধন করতে না পারলে অথবা আয়াতের যেখানে আটকে গেছেন তা ছুটাতে না পারলে পেছন থেকে শ্রোতা হাফেযগণ লুকমা দেবেন।
এভাবে তেলাওয়াতকারী হাফেজ শ্রোতা হাফেজদের সহায়তা নিয়ে হলেও চলতি রাকাতের ভুলটা সে রাকাতেই সংশোধন করে নেবেন।
প্রথম রাকাতের ভুল যদি ঐ রাকাতেই সংশোধন করা না যায়, তাহলে দ্বিতীয় রাকাতের শুরুতেই ভুলটা সংশোধন করে নেওয়ার চেষ্টা করবেন। চলতি দুই রাকাতেও যদি ভুল সংশোধন করা না যায় বা ভুলটা দ্বিতীয় রাকাতে হয় এবং সে রাকাতে সংশোধন করা না যায়, তাহলে পরবতীর্ দুই রাকাতের প্রথম রাকাতেই ভুলটা শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করবে।
ভুলটা যদি এমন হয় যে, তাতে অর্থ এমনভাবে বিগড়ে যায় যে, তা নামায ফাসেদ হওয়ার মত; তাহলে যে রাকাতে ভুল হয়েছে ঐ রাকাতেই সংশোধন করে নিতে হবে; নতুবা নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে। এরকম অবস্থায় হাফেজ সাহেব মুসল্লিদের জানিয়ে ভুলের দুই রাকাতে পঠিত কেরাত দিয়ে পুনরায় দুই রাকাত পড়ে নেবেন।
আর অর্থ বিগড়ে যাওয়ার কথাটা যদি মুসল্লিদের নামাযজ পড়ে চলে যাওয়ার পর বুঝে আসে, তবে উপস্থিত যাদের পাওয়া যায় তাদের নিয়ে ইমাম সাহেব সেই দুই রাকাত নামাজ পুনরায় পড়ে নেবেন এবং পরদিন আগের দিনের সেই দুই রাকাতে পঠিত কেরাতটুকু তারাবির শুরুতে পড়ে নিয়ে তারপর এদিনের নির্ধারিত অংশ পড়বেন। তাতে এই মসজিদের নিয়মিত মুসল্লিদের খতমে কুরআন ঠিক থাকবে ইনশাআল্লাহ।
অন্যান্য নামাজের মতোই কিছু নিয়ম তারাবি তেও পালনীয়-
নামজে প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহার পর পঠিতব্য সূরার প্রথম থেকে হোক বা মাঝখান থেকে, উভয় অবস্থায় বিসমিল্লাহ পড়তে হয়। দ্বিতীয় রাকাতে ফাতিহার পর সূরার শুরু হলে বিসমিল্লাহ পড়তে হয়, মাঝখান থেকে হলে বিসমিল্লাহ পড়তে হয় না। অর্থাৎ যে রাকাতেই হোক, সূরার শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়তে হয় আর সূরার মাঝ থেকে হলে প্রথম রাকাতে বিসমিল্লাহ পড়তে হয়, পরবর্তী রাকাতে বিসমিল্লাহ পড়তে হয় না।
সূরা তাওবা (বারাআত) সম্পর্কে এতটুকু কথা যে, একই রাকাতে আগের সূরার সঙ্গে মিলিয়ে পড়লে বিসমিল্লাহ পড়তে হয় না। আর সূরা ফাতিহার পর (যে কোনো রাকাতে) বারাআত (প্রথম থেকে) পড়লে বিসমিল্লাহ পড়তে হয়।
অন্যান্য নামাযের মতো তারাবিতেও রুকু থেকে সোজা হয়ে দাঁড়ানো, দুই সিজদার মাঝখানে সোজা হয়ে বসা— অর্থাৎ তা‘দীলে আরকান রক্ষা করা এবং তাশাহ্হুদ পড়া ওয়াজিব। তাই এগুলোর প্রতি যত্নবান হওয়া খুবই জরুরি। আর রুকু-সিজদায় কমপক্ষে তিনবার তাসবীহ পাঠ করা সুন্নতে মুআক্কাদা। তেমনিভাবে দরূদ শরীফ ও দুআয়ে মাছুর পাঠ করাও সুন্নতে মুআক্কাদা। তাই এগুলোর প্রতি যত্নবান হতে হবে।
তেলাওয়াতে সিজদা, সিজদায়ে সাহুসহ সংশ্লিষ্ট মাসায়েল ভালোভাবে আত্মস্থ রাখা কর্তব্য। যারা সবেমাত্র হিফজ সম্পন্ন করেছেন তাদের এসব বিষয়ে বেশি যত্নবান হওয়া জরুরি। সবচেয়ে ভালো হয়, তাদের উস্তাযগণ যদি তাদের প্রতি লক্ষ রাখেন, যাতে তারাবীহ সংক্রান্ত জরুরি মাসআলাগুলো তাদের আত্মস্থ হয়ে যায়।
চার রাকাত পর পর তারবীহা ও বিশ্রাম
تَرَاوِيْحُ শব্দটি হচ্ছে تَرْوِيْحَةٌ -এর বহুবচন, যার অর্থ হচ্ছে, বিশ্রাম নেওয়া বা আরাম হাসিলের জন্য একটু বসা। অতএব দেখা যাচ্ছে, ‘তারাবী’ শব্দের অর্থের মধ্যেই কিছু সময় (চার রাকাত) পর পর একটু আরাম হাসিলের জন্য বসার কথা রয়েছে। তাই তারাবি নামাজের মধ্যে চার রাকাত পর পর খানিক বিশ্রাম গ্রহণের নিয়ম রয়েছে। সুতরাং তারাবিতে চার রাকাত পর পর এই বিরতিটুকুর মানসিকতা না রাখা মোটেই ভালো কথা নয়।
হযরত শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক রাহ.-এর জীবদ্দশার ঘটনা। একবার রমজানে ২৭ তারিখের পর তাঁর নাতীদের ঘরোয়া তারাবীতে হাফেজ সাহেব প্রথম চার রাকাত পর একটু আরামের বৈঠক না করে উঠে গেলে তিনি রাগ করলেন।
অতঃপর উল্লিখিত শরঈ ভিত্তির কথা আলোচনা করে সবাইকে নিয়ে আরামের বৈঠক করলেন। আর খালি খালি না বসে থেকে তাতে দুআ-দরূদও পড়লেন।
উল্লিখিত আরামের বৈঠকে নির্দিষ্ট ওযীফা বা দোয়ার কথা হাদিসে বর্ণিত নেই; তবে এ সময়টুকুতে অনর্থক কথাবার্তায় লিপ্ত হওয়া অনুচিত। এর মধ্যে আমরা নিজেদের জরুরত সারতে পারি, ক্লান্তি দূর করতে পারি। জরুরত না থাকলে বিভিন্ন তাসবীহ-তাহলীল, যিকির-আযকার, দরূদ শরিফফ ও দোয়া পড়তে পারি।
শেষকথা-
পরিশেষে হাফেজ ছাত্রভাইদের আবারো অনুরোধ করছি, আপনারা আল্লাহর ওয়াস্তে আল্লাহর রহমতের দিকে তাকান। তাঁর কত বড় রহমত যে, তিনি পবিত্র কুরআনের ত্রিশটি পারা আপনাদের বুকে ধারণ করার তওফিক দিয়েছেন। আপনাদের উপর তো কুরআনের হক— আপনারা রমযান মাস ছাড়াই সারা বছর অন্তত এতটুকু করে পড়বেন, যাতে কুরআন ইয়াদ থাকে।
একদা বাংলাদেশে আগত মেহমান হযরত মাওলানা হাফেয সলিমুল্লাহ খান (শায়খুল হাদিস) রাহ.কে আমাদের সামনে মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা-এর উস্তায, অধমের কনিষ্ঠ বান্দাযাদা হাফেজ সাঈদ আহমদ জিজ্ঞাসা করল, ‘হযরত! একজন আলেম হাফেজের কতটুকু করে কুরআন শরিফ পড়া উচিত।’
উত্তরে হযরত ইরশাদ করলেন, ‘দৈনিক তিন পারা করে পড়বেন।’
এখন চিন্তা করে দেখুন, এত বড় হাফেজ আলেমের পবিত্র মুখ থেকে শোনা গেল, হাফেজ আলেমের উপর কর্তব্য, দৈনিক তিন পারা করে পড়া। অতএব হাফেজ তালিবুল ইলমদের কাছে সবিনয় আরয আপনারা পবিত্র রমযানে অন্তত দশ খতম কুরআন পড়ুন। সাথে সাথে সারা বছর নিয়মিত তিন পারা তেলাওয়াত করুন।
আল্লাহ আপনাকে যে মহা নেয়ামত দিয়েছেন তার শুকরিয়া আদায় করুন।
( লেখাটি মাসিক আলকাউসার থেকে নেওয়া হয়েছে )
এনএ/