|| হাসান আল মাহমুদ ||
কওমি মাদরাসার চলতি শিক্ষা বর্ষের সমপনী ও বোর্ড পরীক্ষার বাকি আছে কয়েক দিন। পরীক্ষার আগে প্রস্তুতির জন্য বেঁধে দেয়া সময় ‘খেয়ার’কে কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীরা এখন শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সম্পন্নে দিন-রাত ব্যস্ত। ঠিক এ সময়ে অনেক শিক্ষার্থীরা কুলিয়ে উঠতে পারে না কোন বই রেখে কোনটা পড়বে, কতটুকু পড়বে। তাদের জন্য বিশেষ পরামর্শ দিয়েছেন রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়া যাত্রাবাড়ী বড় মাদরাসার মুহাদ্দিস, বহুগ্রন্থ প্রণেতা ও শিক্ষাবিদ মাওলানা মুহাম্মদ হেমায়েত উদ্দীন।
তিনি বলেন, ‘কিছু ছাত্র আছে মূল কিতাবগুলো পড়ে বাকিগুলো পড়ে না; এমন ছাত্ররা পাস করে গেলেও পরীক্ষায় সেরাদের সিরিয়ালে আসতে পারে না। এজন্য, বেফাক কিংবা যেকোনো পরীক্ষায় সিরিয়ালে আসতে হলে অবশ্যই সবগুলো কিতাব ভালো করে পড়তে হবে।’
তার পরামর্শ হলো, ‘কিতাবের গুরুত্ব হিসেবে একটা সময় নির্দিষ্ট করে নিতে হবে। এমন যেন না হয় এক কিতাবে অনেক সময় দিলো, আর বাকিগুলোকে তেমন সময় দিলো না। যেগুলো বড় কিতাব সেগুলো তো সবটা পড়া সম্ভব হয় না, তাই ‘আল-আহাম ফাল-আহাম’ উসুলের ভিত্তিতে বাব-অধ্যায়ের গুরুত্ব দিয়ে ভালো করে পড়তে হবে।’
তিনি জানান, ‘যারা এ বছর দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষা দিবে, তাদেরকে আমরা বলি- ফিকহী আবওয়াবের ওপরে বিল-ইস্তিআ’ব মুতালাআ করবে। যেমন তিরমিযী কিতাব, এ কিতাবটি বিল-ইস্তিআ’ব পুরোটা পড়তে হবে। কারণ, এ ফিকহি মাওয়ায়েদগুলো অন্যান্য কিতাবেও আসে। আর নিচের স্তরের যারা পরীক্ষার্থী, তারা সম্পূর্ণ কিতাব পড়বে।’
শিক্ষাবিদ এই আলেম বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মনে রাখতে হবে, এটা তোমার জীবনের একটি শিক্ষা বছরের সমাপনী পরীক্ষা। এ উপলক্ষকে অমূল্য সুযোগ মনে করে তোমাকে সব্গুলো কিতাব বিল-ইস্তেআ’ব (সম্পূর্ণভাবে) পড়ার সুযোগ দিতে খেয়ার দেয়া হয়েছে। তুমি এ সময়টুকুকে কোনোভাবেই অবহেলা করবে না। কিতাব থেকে তুমি যতটুকু নিতে পারবা ততোটুকুই তোমার পুঁজি হবে। এজন্য, তোমাকে ইলমের পুঁজি বাড়াতে অবশ্যই সম্পূর্ণ কিতাব পড়তে হবে। তারপর, পরীক্ষার জন্য বিশেষ বিশেষ অধ্যায় ও পাঠগুলোকে আরো বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। আর, যেহেতু সময় এখন শেষ মুহূর্তের কাছাকাছি সময়, এজন্য তোমাকে প্রতিটা সময়ের মূল্য দিতে হবে। উঠতে-বসতে, খেতে-ঘুমাতে পড়া নিয়েই ভাবতে হবে। অন্যকোনো বিষয় মাথায় রাখবে না।’
তিনি বলেন, ‘যাদের হাতের লেখা খারাপ, বানানে ভুল ঘটে, তারা যেন পড়ার ফাঁকে ফাঁকে বানান ও সুন্দর হস্তাক্ষরের চর্চা করে নেয়।’
কেএল/