|| আল্লামা আব্দুর রাজ্জাক আল-হোসাইনী ||
২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে যারা দাওরায়ে হাদিস পড়ছেন, তাদের ২য় সাময়িক পরীক্ষার প্রস্তুতি বিষয়ে জরুরি পরামর্শ:
দাওরায়ে হাদিসের নেসাব নিয়ে একদিকে চিন্তা করলে বড় কিতাব এবং পরিমাণ ও পৃষ্ঠা অনেক। এদিক থেকে এ বিষয়টা অত্যন্ত কঠিন ধাপ মনে হয়। কিন্তু আরেক দিকে চিন্তা করলে দেখা যায়, দাওরায়ে হাদিসের সাবজেক্ট একটাই, আর সেটা হলো ইলমুল হাদিস। যদিও কিতাব প্রায় দশটির উর্ধ্বে, কিন্তু সাবজেক্ট একটা। হ্যাঁ, তবে বুখারী কিতাবের কিছু বৈশিষ্ট্য আছে, মুসলিমের কিছু বৈশিষ্ট আছে, তিরমিযি-আবু দাউদের কিছু বৈশিষ্ট আছে। এ বৈশিষ্টগুলো যদি আমরা হল করি, তাহলে ফিকহি মাসয়ালার দিক থেকে সব কিতাব প্রায় একই ধরণের।
গত পর্বের পর থেকে...
(গত পর্ব : তাকমিল শিক্ষার্থীদের জন্য জরুরি পরামর্শ-১)
■ সহীহুল মুসলিম
২য় সাময়িক পরীক্ষায় মুসলিম শরীফের কিতাবুল ঈমানের কিছু অংশ হয়তো বাকি থাকে কোথাও। কিতাবুল ঈমানের যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন সাজেশন থাকে, তা থেকে প্রশ্নগুলো পর্যালোচনা করা। কী কী বিসয় চায়, কী কী জুয হতে পারে।
হাদিসের অর্থ, কঠিন শব্দগুলোর তাহকিক শেখা। অনেক জায়গায় ইখতিলাফ থাকে, সেগুলোর দলিলসহ, প্রতিপক্ষের দলিলের জবাবসহ উল্লেখ করলে আশা করি পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া যাবে ইনশআল্লাহ।
■ মুসলিম সানী
এ কিতাবের ৫৫ পৃষ্ঠা পর্যন্ত এর বৈশিষ্ট কিতাবুল বুয়ু, আইমান, নুযুর এগুলোর অনেটা হয়ে গেছে অনেক মাদরাসায়। কোথাও কিছু বাকি থাকতে পারে। তো, এ অধ্যায়গুলোর কিছু বাকি থাকলে সেগুলোসহ কসামা, আইমান, নুযুর, ওসিয়ত এ অধ্যায়গুলো বিশষেভাবে হল করা।
■ তিরমিযী আওয়াল
এ কিতাবের কিতাবুত ত্বহারাত শেষ হয়ে গেছে। সালাত চলতেছে। তো, এর জন্য প্রথমে হাদিসের অর্থ জানা, দুই- কঠিন শব্দগুলোর তাহকিক জানা। তিন- ইখতিলাফি হাদিস তিরমিযীতে বিশেষভাবে থাকে, এর জন্য দালায়েল বিলাফযিহি উল্লেখ করতে হবে। যদি ছোট মাসয়ালা হয়, একটা হাদিস বিলাফযিহি। প্রতিপক্ষের এবং হানাফি মাযহাবের একটা করে হাদিস। যদি মধ্যম পর্যায়ের হয়, দুইটা-তিনটা করে হাদিস বিলাফযিহি উল্লেখ করলে অধিক নম্বর পাওয়া যাবে। বড় মাসয়ালা হলে কমচে কম যে হাদিসটা বুখারী-মুুসলিম বা সহীহ গ্রন্থে আছে, সে হাদিসটা আগে উল্লেখ করা। এরপর হাসান হাদিস উল্লেখ করা। এরপর শেষে প্রতিপক্ষের জবাব প্রদান করা।
■ তিরমিযী সানী
তিরমিযী সানীতে ইখতিলাফ আছে। তরজমা, কঠিন শব্দ এবং মাঝে মাঝে কিছু কিছু মাসয়ালা আছে, সেসবের জন্য প্রশ্ন সাজেশন আছে, তার আলোকে প্রস্তুতি নেওয়া।
■ আবু দাউদ
আবু দাউদ কিতাবে দুইটা বিষয় উল্লেখযোগ্য।
এক- ফিকহী বিষয়ের ইখতিলাফ। এর জন্য তিরমিযী কিতাবের ইখতিলাফপূর্ণ মাসয়ালাগুলোর দালায়েল, ত্বরিকে মুখালাফের জবাব যদি ালো করে হল করা থাকে, তাহলে এখানে তাওয়াউন হবে।
দুই- আবু দাউদ কিতাবে ইধতিরাবের কিছু জায়গা আছে। এ জায়গাগুলো ভালো মতো হল করা।
তিন- ক্বলা আবু দাউদ। আবু দাউদ কিতাবের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট এই ‘ক্বলা আবু দাউদ’ হল করা।
■ আবু দাউদ সানী
এ কিতাবের মাগাযি যদি ভালো করে পড়ে, এখানেও আসাতিযায়ে তাকরির করে থাকেন। বাকি বুখারীর তুলনায় কম। এখানে প্রশ্ন সাজেশন দেখে সে আলোকে যদি উত্তর প্রদান করে, তাহলে ভালো নম্বর পাবে।
■ নাসায়ী শরীফ
তিরমিযী শরীফ ভালো করে হল করা থাকলে এ কিতাবে আসাতিযায়ে কেরাম সবক পড়ার সময় যে তাকরির করেন, তা প্রশ্নের উত্তরে নিয়ে আসতে পারলে সে সঙ্গে তিরমিযী কিতাবের ফিকহী দালায়েল, ত্বরিকে মুুখালাফের জবাব দিতে পারলে ভালো নম্বর পাওয়া যাবে।
লেখক: মুহতামিম ও শায়খুল হাদিস , জামিয়া সওতুল হেরা বাসাবো, ঢাকা।
চলবে...
কেএল/