সদ্য বিদায়ী ১৪৪৫-৪৬ শিক্ষাবর্ষের বার্ষিক কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় বৃহত্তর উত্তরা আঞ্চলিক বোর্ডে জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়ার ৪১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১১ জন মেধাস্থান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। মুমতাজ (স্টার মার্ক) পেয়েছেন ২৫ জন, আর জায়্যিদ জিদ্দান বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন ১১ জন।
জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়ার ঈর্ষনীয় এই সাফল্যে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের মাঝে বইছে আনন্দের জোয়ার। একই সাথে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও অভিভাবকবৃন্দ উচ্ছ্বসিত হয়ে মহান আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করেছেন।
এ প্রসঙ্গে জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়ার প্রতিষ্ঠাতা মুহতামিম আল্লামা নাজমুল হাসান কাসেমী বলেন, প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই আমরা শিক্ষার মানোন্নয়নে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আলহামদুলিল্লাহ, ছাত্রদের অক্লান্ত পরিশ্রম, শিক্ষকদের আন্তরিকতা ও অভিভাবকদের সহযোগিতার ফলে আমরা প্রত্যাশিত সাফল্য অর্জন করে চলেছি। ভবিষ্যতেও এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে, ইনশাআল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, “প্রতিষ্ঠার শুরুতে আমাদের সামনে ছিল এক বড় চ্যালেঞ্জ। আল্লাহর রহমতে আমরা সেই চ্যালেঞ্জ দক্ষতা ও সাফল্যের সাথে অতিক্রম করতে পেরেছি। আমাদের লক্ষ্য এমন একটি প্রজন্ম গড়ে তোলা, যারা দ্বীনি ও দুনিয়াবি জ্ঞানের সমন্বয়ে জাতিকে সুন্দর ও স্বার্থকভাবে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবে।
তিনি বলেন, জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়ার এই ঈর্ষণীয় সাফল্য মাদরাসার শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের জন্য গৌরবের বিষয়। আশাকরি- ভবিষ্যতেও জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়া এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে, ইনশাআল্লাহ।
আল্লামা নাজমুল হাসান কাসেমী বলেন, জামিয়াতুন নূরের শিক্ষাকার্য্যক্রম পরিচালনায় কোনরূপ গাফলতি বা শৈথল্যের সুযোগ নেই। আমরা শিক্ষার মান বজায় রাখার উপর কোনরূপ আপোষ করি না। আমরা চাই, শিক্ষার্থীরা দরসের পাশাপাশি সঠিক ঈমান-আক্বিদা, আমল-আখলাক এবং আদর্শ ও নৈতিকতার মানেও যাতে সর্বোচ্চ স্থানে জায়গা করে নিতে পারে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ফলাফলের এই ধারাবাহিক সাফল্যে সামনের দিনগুলোতে শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হয়ে আরো ভালভাবে ও মনোযোগের সাথে লেখাপড়া করবে, এতে আগামীতে হাইআতুল উলইয়ার সম্মিলিত মেধা তালিকায় আরো বেশি সফলতা আসবে, ইনশাআল্লাহ।
তিনি সাফল্য অর্জনকারী ছাত্রদেরকে অর্জিত ইলমের চর্চা জারি রেখে উম্মাহর মাঝে ইলম ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা হলেন ওয়ারাসাতুল আম্বিয়া বা নবীগণের ওয়ারিশ। আপনাদের স্কন্ধে দাওয়াত ও তাবলীদের দায়িত্ব অর্পিত। নববী আদর্শে উম্মাহকে গড়ে তোলা ও হকের প্রচার করা আপনাদের আবশ্যিক দায়িত্ব। এটা কখনো ভুলে যাবেন না।
উল্লেখ্য, শিক্ষা, সাফল্য ও গবেষণায় অনেক খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠানকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে মাত্র চার বছর আগে প্রতিষ্ঠিত রাজধানী ঢাকার অন্যতম বিখ্যাত দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়া। ২০২১ সালের মার্চ মাসে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রহ.)এর স্নেহধন্য আল্লামা হাফেজ নাজমুল হাসান কাসেমী রাজধানীর উত্তরায় এ মারকাযী প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেন। শুরুতে অস্থায়ী ভবনে কার্যক্রম পরিচালিত হলেও অল্প সময়ের মধ্যেই নিজস্ব ক্যাম্পাসে নির্মাণাধীন বহুতল ভবনে পাঠদান শুরু করতে সক্ষম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিরতিহীনভাবে জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়ার শিক্ষার্থীরা বেফাক, হাইয়াতুল উলয়া ও বৃহত্তর উত্তরার আঞ্চলিক বোর্ড হাইয়াতুত তালিম ওয়াত তারবিয়ায় অসাধারণ সাফল্য অর্জন করে চলেছে।
নারনা/