রংপুর ব্যুরো
রংপুরে বিশাল আকারের হিমালয়ী গৃধিনী শকুন উদ্ধার করা হয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় রংপুরের পীরগাছা উপজেলার অন্নদানগরে গাছে আটকে থাকা অবস্থায় শকুনটি উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তিতে শকুনটি আটকা পড়ে।
প্রায় তিন ফুট উচ্চতা, সাত ফুট পাখার দৈর্ঘ্য এবং ১০ কেজি ওজনের শকুনটি এলাকাবাসীর নজরে পড়ে। তারা তাৎক্ষণিক শকুনটি উদ্ধার করে পরিবেশবাদী সংগঠন ওয়ার্ড অ্যানিম্যাল রেসকিউ অ্যান্ড অ্যাডপশন নেটওয়ার্ক রংপুর শাখার সদস্যদের সংবাদ দেয়। পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধের দেশগুলো থেকে নিরাপত্তা ও খাদ্যের লোভে যেসব পরিযায়ী পাখিরা পরিযান করে থাকে, তাদের মধ্যে অন্যতম হিমালয়ী গৃধিনী শকুন। প্রতি বছর শীতকালে শকুনগুলো মাইগ্রেট বা পরিযায়ন করে বাংলাদেশের সমতল ভূমিগুলোতে চলে আসে।
শনিবার বেলা ১১টার দিকে শকুনটিকে দিনাজপুরের সিংড়া রেসকিউ সেন্টারে পাঠানোর আগে কিছুক্ষণের জন্য রংপুর কারমাইকেল কলেজে আনা হয়। খোলা প্রাঙ্গণে শকুনটিকে দেখতে ক্যাম্পাসে ভিড় জমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। বিশাল আকৃতির পাখিটির সঙ্গে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে শিশুরাও।
রেসকিউ টিমের পীরগাছা শাখার সদস্য নূর হাসান নাহিদ ও সোহেল বলেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় আমাদের কাছে সংবাদ আসে অন্নদানগরে রংনাথ এলাকায় গাছে আটকা পড়ে একটি শকুন। এলাকাবাসী অনেক চেষ্টা করে শকুনটিকে বেঁধে রেখেছে। পরে সেখানে গিয়ে আমরা শকুনটি উদ্ধার করি। পরে ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিমের ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশ মোতাবেক শকুনটিকে শনিবার রংপুর নগরীর কারমাইকেল কলেজে আনা হয়। সেখান থেকে কিছুক্ষণ পরেই দিনাজপুরের সিংড়ার উদ্দেশে পাঠানো হয়। সেখানে রেসকিউ সেন্টারে শকুনটির চিকিৎসা করানো হবে।
ওয়াইল্ডলাইফ অ্যান্ড স্নেক রেসকিউ টিম ইন বাংলাদেশের অর্থ সম্পাদক লিজেন আহমেদ প্রান্ত বলেন, শকুনটি বর্তমানে দুর্বল ও অসুস্থ। সিংড়া রেসকিউ সেন্টারে তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণের পর প্রকৃতিতে অবমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রংপুর কারমাইকেল কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আব্দুর রউফ বলেন, শকুন মৃত প্রাণির দেহ খেয়ে পরিবেশ ভাল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রাকৃতিক আবাসস্থল ধ্বংস এবং বিষাক্ত খাদ্য গ্রহণের ফলে শকুনের সংখ্যা বাংলাদেশে আশঙ্কাজনক হারে কমেছে।