মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলায় প্রায় তিন কোটি টাকার সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। ঝিটকা পোদ্দারবাড়ি থেকে মহিশাখোলা পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে পাশের জমি থেকে মাটি কেটে ভরাট এবং নিম্নমানের ইট ও খোয়া ব্যবহারের কথাও বলা হচ্ছে।
জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে জিডিপি-৩ প্রকল্পের আওতায় হরিরামপুর উপজেলায় ঝিটকা পোদ্দারবাড়ি থেকে মহিশাখোলা পর্যন্ত ২.৩৬ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কাজটি পায় মেসার্স সেলিম এন্টারপ্রাইজের অনুকূলে ঠিকাদার হানিফ আলী। সড়ক নির্মাণ শেষ হওয়ার কথা ছিল ৩০ জুন ২০২৪-এর মধ্যে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নিম্নমানের ইট ও রাবিশ খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে, যা সড়কের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ভিটেবেড়া এলাকায় নির্মিত গাইডওয়াল ইতোমধ্যেই ভেঙে পড়েছে।
ভিটেবেড়া গ্রামের বাসিন্দা আরজ আলী অভিযোগ করে বলেন, এত টাকা বাজেট করেও তামাশার মতো কাজ হচ্ছে। রাস্তা বানানোর আগেই গাইডওয়াল ভেঙে গেছে। নিম্নমানের উপকরণ দিয়ে কাজ করলে রাস্তাটি টিকবে কীভাবে?
মহিশাখোলা গ্রামের আমিনুর রহমান বলেন, এই অনিয়মের ফলে কয়েক মাসের মধ্যে রাস্তা ভেঙে যাবে। যদি এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে জনগণ ভোগান্তির শিকার হবে, আর সরকারের অর্থ অপচয় হবে।
স্থানীয় কৃষক আরশেদ আলী অভিযোগ করেন, রাস্তার জন্য তার জমি থেকে ২০ শতাংশ মাটি কেটে নেওয়া হয়েছে, কিন্তু প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জমি ভরাট করা হয়নি। তিনি ক্ষতিপূরণ দাবি করেন।
এ বিষয়ে ঠিকাদার হানিফ আলীর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। আওয়ামী সরকার পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপণে আছেন বলে জানা গেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি খোরশেদুল ইসলাম জানান, রাস্তা নির্মাণে নিম্নমানের ইট সামান্য থাকতে পারে। আর গাইডওয়াল ভেঙে গেছে সেটা ঠিক করে দেওয়া হবে। প্রকৌশলী স্যাররা অবগত আছেন।
এ বিষয়ে এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এবিএম খোরশেদ আলম জানান, রাস্তার জন্য মাটি নেওয়া হয়েছে সেটা জানার পর ঠিকাদারকে অবহিত করা হয়েছে যাতে তারা মাটি ভরাট করে দেয়। নির্মাণকাজে ত্রুটি বা নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেলে তা সংশোধনের নির্দেশ দেওয়া হবে।