মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫ ।। ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১ ।। ১১ রমজান ১৪৪৬

শিরোনাম :
তারাবি নিয়ে ১০ হাফেজর অনুভূতি ও অভিজ্ঞতা ফয়যে বর্ণভী সাবাহী মক্তব বোর্ডের ফলাফল প্রকাশ; পাসের হার ৯৯.৪৯% জাতীয় ঐক্য ছাড়া ফ্যাসিবাদকে বিলোপ করা সম্ভব নয়: নাহিদ ইসলাম ফেসবুকে উপদেষ্টা মাহফুজের ‘মব’ নিয়ে পোস্ট, যা বলল ঢাবি ছাত্রশিবির ইফতা, আদবসহ বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি নিচ্ছে উত্তরার মাদরাসাতুল আযহার লালমাটিয়ায় দুই তরুণীকে সিগারেট খেতে না করা সেই রিংকুকে গ্রেফতার ‘অপরাধের সাম্প্রতিক ব্যাপকতার পেছনে পরাজিত শক্তির রাজনীতি ক্রিয়াশীল' একদিনে ২৯ হাজার কুরআনের কপি বিতরণ সৌদি আরবের ‘দ্রুত বিচার আইনের মাধ্যমে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে’ নির্মাণাধীন ভবনের কাঠ পড়ে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু 

রংপুরে শ্যামা সুন্দরী বাঁচাতে উচ্ছেদ অভিয়ান শুরু

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

রংপুর ব্যুরো

রংপুর শহরের ‘লাইফ লাইন’ খ্যাত শ্যামা সুন্দরী খালের দখল করা জায়গা উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে প্রশাসন। বুধবার দুপুরে নগরীর কেরামতিয়া এলাকায় অভিযানে নেতৃত্ব দেন রংপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এতে সহায়তা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা।

রংপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান মৃধা বলেন, ১১৭ জন অবৈধ দখলদারের ২৫টি নথি প্রস্তুত করা হয়েছে। বুধবার থেকে শুরু হওয়া উচ্ছেদ অভিযান খাল দখলমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত চলবে।

এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিন ধরে দখল ও দূষণে অস্তিত্ব সংকটে শ্যামা সুন্দরী। শ্যামা সুন্দরীর রূপ যৌবনে এক সময় রংপুর শহরের লাইফ লাইন ছিল। অনিয়ন্ত্রিতভাবে দখল, গৃহস্থালির বর্জ্য ফেলা ও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে প্রাচীনতম ও রংপুরের দীর্ঘতম খালটি এখন সরু নালায় পরিণত হয়েছে। যে খালটি পরিবেশ রক্ষার জন্য খনন করা হয়েছিল সেই খালটি এখন পরিবেশ দূষণের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ খালটি ১৮৯০ সালে খনন করা হয়।

স্থানীয়দের মতে, খালটি প্রথমে কোথাও কোথাও ৬০ থেকে ১০০ ফুট পর্যন্ত প্রস্থ থাকলেও এখন এটি সরু নালায় পরিণত হয়েছে। খালের পানি কালো হয়ে গেছে।

ইতিহাসবিদরা বলেন, ১৯ শতকের শেষের দিকে মশাবাহী ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাবের কারণে রংপুরে অনেক লোক মারা যায়। নিহতদের মধ্যে ছিলেন রংপুরের মহারানী শ্যামা সুন্দরী। মৃত্যুর পর তার ছেলে রাজা জানকী বল্লব মশার প্রজনন মোকাবিলায় রংপুর শহরে একটি খাল খননের উদ্যোগ নেন। খালটি খনন করে তার মায়ের নামে নামকরণ করেন। সেই থেকেই খালটি রংপুরে শ্যামা সুন্দরী খাল নামে পরিচিত। রংপুরের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কেল্লাবন্দ এলাকায় ঘাঘট নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে পশারীপাড়া, ইঞ্জিনিয়ারপাড়া, পালপাড়া, গোমস্তপাড়া, সেনপাড়া, তেঁতুলতলা, মুলাটোল, বৈরাগীপাড়ার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে খালটি মাহিগঞ্জ এলাকার খোকসা ঘাঘট নদীতে পড়েছে। খালের পানি ছিল স্বচ্ছ। নগরবাসী সেখানে গোসল করতেন। খালের অনেক জায়গা প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছেন। জনগুরুত্বপূর্ণ এই খাল উদ্ধার ও সংস্কারে অতীতে দুই দফায় প্রায় ৩৭ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। খালটি এখন মশা উৎপাদনের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে। এমনকি খালটি এখন স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

দখল-দূষণে ঐতিহ্য হারিয়েছে শ্যামা সুন্দরী ছাত্র-জনতার আন্দোলন পরবর্তী এবার খালের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

রংপুর মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ ইমতি বলেন, ২৪ এর বিপ্লবকে বুকে ধারণ করে যে করেই হোক এবার শ্যামা সুন্দরীর প্রাণ ফেরানো হবে। দখলদার যতই প্রভাবশালী হোক উচ্ছেদ অভিযান সফল করতে হবে।

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে প্রায় ৪০০ জনের অধিক অবৈধ দখলদারের তালিকা প্রস্তুত করে অভিযান শুরু করেছিল প্রশাসন। সেসময় প্রভাবশালীদের বাধায় তা আলোর মুখ দেখেনি।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ