লালমনিরহাট প্রতিনিধি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকার যাত্রাবাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর প্রায় তিন মাস (৯৮ দিন) পর কবর থেকে শহীদ মিরাজ খানের লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য আদালতের নির্দেশে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ভোররাতে লালমনিরহাটের আদিতমারীর মহিষখোচা ইউনিয়নের খানপাড়ার পারিবারিক কবরস্থান থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়।
মিরাজ মহিষখোচা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিততে উত্তীর্ণ হয়ে কলেজে ভর্তি হয়ে ঢাকায় মোবাইলের দোকানে কাজ করতে গিয়েছিলেন। তিনি উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের খানপাড়া এলাকার আব্দুস সালামের পুত্র।
স্থানীয়রা জানায়, আর্থিক অসচ্ছলতার জন্য পড়াশোনা তেমন করতে না পেরে কলেজে ভর্তি হয়ে ঢাকায় গিয়ে মোবাইলে কাজ করতেন মিরাজ। ছাত্রত্বের টানে ঢাকার যাত্রাবাড়িতে কোটাবিরোধী আন্দোলনের মিছিলে অংশ নেন তিনি। ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর মিছিলে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হন মিরাজ। পরিবার ও স্বজনরা তাকে ঢাকা মেডিকেলে ও ক্লিনিকে অপারেশন করানোর জোর চেষ্টা করেও চিকিৎসকের দেখা না পাওয়ায় রংপুর মেডিকেলে নিয়ে আসেন। সেখানে ৮ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
পরে তার পিতা আব্দুস সালাম এ ঘটনায় ঢাকার যাত্রাবাড়ি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এতে লালমনিরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য মো. মোতাহের হোসেন, লালমনিরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. নুরুজ্জামান আহমেদ (সাবেক মন্ত্রী) ও লালমনিরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. মতিয়ার রহমানসহ মোট ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৩-৪শ’ জনকে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক কাওসার হোসেন বলেন, ভিকটিম মিরাজের পিতার দায়েরকৃত মামলার প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় কাজ সেরে দাফনের জন্য আবার ফেরত দেয়া হবে।