সরকারের পতনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে ‘লিল্লাহি তাকবির’ স্লোগান দেয়া নিয়ে আপত্তির প্রতিবাদে ‘নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার’ স্লোগানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বেলা ১১টায় ক্যাম্পাসের বটতলা থেকে প্রতিবাদ র্যালি শুরু হয়। র্যালি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘লিল্লাহি তাকবির, আল্লাহু আকবার’ কোনো রাজনৈতিক স্লোগান নয়। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে দেশ নতুনভাবে স্বাধীন হয়েছে। আর সেদিনই সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতাস্বরূপ স্লোগানটি দেয়া হয়। কিন্তু এটিকে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়ে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। স্বৈরাচারের পতন হলেও ফ্যাসিবাদীর দোসররা রয়ে গেছে। ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করে তারা দেশকে সাম্প্রদায়িক করতে চাচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে মীম নামে একজন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে কথা বলেছে। আমরা সকল ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ গড়বো। আর এতে যারা বাঁধা দিবে তাদেরকে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে।
জানা গেছে, ইবিতে ‘জুলাইয়ের দিনগুলোর স্মৃতিচারণ’ শিরোনামে ২১ আগস্ট রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত ‘সংবর্ত-৩৬’ পেইজ থেকে একটি লাইভ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমস্বয়কসহ কয়েকজন সহসমন্বয়ক এতে অংশ নেন। এসময় মূল বিষয় নিয়ে আলোচনা না করে অতিথিদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভিন্ন উস্কানিমূলক প্রশ্ন করা হয়। সমন্বয়কদের মধ্যে ভাঙন ধরাতে এবং বিতর্ক সৃষ্টি করতে এমনটি করা হয়েছে বলে মনে করছেন তারা। লাইভ চলাকালে শেখ হাসিনার পদত্যাগের দিনে ‘লিল্লাহি তাকবির, আল্লাহু আকবার’ স্লোগান কেন দেয়া হলো সেই বিষয়েও প্রশ্ন তুলেন সঞ্চালিকা জান্নাত মীম। তিনি গণিত বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের ছাত্রী। পরে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়। বিষয়টির নিন্দা জানিয়ে ফেসবুকেও পোস্ট দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।
লাইভ অনুষ্ঠানটির আয়োজন নিয়ে সমন্বয়করা জানান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জুলাইয়ের দিনগুলি কেমন ছিলো এবং আন্দোলন চলমান অবস্থায় ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি নিয়ে জানতে একটি লাইভ সেশনের আয়োজন করা হয়। তবে লাইভে মূল বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ব্যতীত ব্যক্তিগত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়। দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে একটি পক্ষ উঠেপড়ে লেগেছে। তারা আমাদের মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি করতে চাই। আমরা ছাত্র-জনতা মিলে স্বৈরাচারীর পতন ঘটিয়েছি, যারা নতুন করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে তাদেরকেও শক্তভাবে দমন করা হবে।
এদিকে ব্যাচের অন্যদের না জানিয়ে 'সংবর্ত ৩৬' ব্যাচের ব্যানারে এই প্রোগ্রামটির আয়োজন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্যদের না জানিয়ে গুটিকয়েক শিক্ষার্থী এমনটি করেছে বলে জানিয়েছেন ওই ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। এই আয়োজনের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোন সম্পর্ক নেই বলে বিবৃতি দিয়েছে ওই ব্যাচের শিক্ষার্থীরা।
এনএ/