ঢাকা সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে রাজধানীর ডেমরা এলাকার পাইটিতে মসজিদ, মাদরাসা, ঈদগাহ এবং রাস্তার উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে এলাকাবাসী ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা খুশি ও স্বস্তি অনুভব করছেন।
গত কিছুদিন ধরে ফ্যাসিবাদী সময়ে বন্ধ হওয়া চলাচলের পথ উন্মুক্ত করা এবং রাস্তা পাকাকরণ ও সুয়ারেজ লাইন নির্মাণের মাধ্যমে জনসাধারণের যাতায়াতের সুবিধা বৃদ্ধি পেয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড (বেফাক) এর অন্তর্ভুক্ত জামেআ মারকাযুল ইহসান ও মসজিদ-এ বাইতুল মতীন "আল্লামা শাহ্ আব্দুল মতীন কমপ্লেক্সের স্থায়ী ক্যাম্পাস, এলাকাবাসীদের জন্য মসজিদ, ঈদগাহ্ ও কবরস্থান নির্মাণের লক্ষ্যে ঢাকা-ডেমরা, মহাসড়ক সন্নিকটে হোল্ডিং নং ২/১ পাইটি, ডেমরা, ঢাকা-৫ এলাকায় ২০২২ সালে ১৩৩ শতাংশ জমি (ক্রয়কৃত জমির সি.এস ও এস.এ দাগ নং: ৭০২-৭১৪, আর, এস দাগ নং: ১২০২-১২০৩, হোল্ডিং নং ২/১ পাইটি) ক্রয় করা হয়। অতঃপর নামজারী ও খাজনা প্রদান করে, বর্তমানে সেখানে নির্মিত মসজিদে, মাইকে আযান-নামায ও মাদরাসায় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে রোমানা পেইন্টের মালিক আবুল কালাম ফরহাদ রাজউকের অনুমতি ব্যতীত নকশাবহির্ভূতভাবে একটি আড়াআড়ি দোতলা অবৈধ ভবন নির্মাণ শুরু করেন। এই ভবনটি মাদরাসার প্রধান চলাচলের পথ সম্পূর্ণরূপে রুদ্ধ করে দেয়, যা শুধু শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, বরং এলাকাবাসী ও পথচারীদের জন্যও সীমাহীন দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
মাদরাসাটির ভাইস-প্রিন্সিপাল মুফতি আশেকে এলাহি বলেন, এলকাবাসীর উদ্যোগে বন্ধ করা ওই পথ খু্লে দেওয়া হয়। এসময় এলাকাবাসীর গণস্বাক্ষরিত আবেদন ঢাকা সিটি করপোরেশনের কাছে জমা দেওয়া হয়। তাদের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টার ফলে সিটি করপোরেশন বিষয়টি আমলে নেয় এবং দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
তিনি জানান, চলাচলের পথ উন্মুক্ত, মাদরাসার কার্যক্রম নির্বিঘ্ন, আর রাস্তা পাকাকরণ ও সুয়ারেজ লাইন নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ!
মুফতি আশেকে এলাহি উল্লেখ করেন, একইসঙ্গে, পথচারীদের জন্য বিশ্রাম ও নামাজের সুযোগও সহজ হয়ে গেছে। পথচারীরা এখন আর ছায়াহীন রাস্তায় ক্লান্ত হয়ে হাঁটতে বাধ্য হচ্ছেন না; তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারছেন, নামাজ আদায়ের জন্য মাদরাসার প্রাঙ্গণে আসতে পারছেন।
এদিকে এই ন্যায়ের বিজয়ে এলাকাবাসী, মুসল্লী ও মাদরাসার সংশ্লিষ্টরা ঢাকা সিটি করপোরেশন, রাজউক ও সকল সংশ্লিষ্ট মহলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বলে জানান ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা আশেকে এলাহি।
তিনি জানান, এলাকাবাসী আশা করছেন, আল্লাহ তাআলা এই জনকল্যাণমূলক প্রকল্পকে দ্রুত পূর্ণতা দান করবেন এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে উত্তম প্রতিদান দেবেন বলেও দোয়া করছেন সবাই।
এ বিষয়ে রোমানা পেইন্টের মালিক আবুল কালাম ফরহাদ বলেন, এটা আমার ব্যক্তিগত জায়গা। এলাকাবাসীর সেবার জন্য রাস্তা নির্মাণে আমার একার জায়গা কেন নিবে, পাশের জায়গাও তো আছে।
তিনি বলেন, জনগণের সুবিধায় পাশের জায়গা থেকেও নিক, আমার জায়গা থেকেও নিক। এককভাবে আমার জায়গা থেকে কেন হবে।
এ বিষয়ে রোমানা পেইন্টের মালিকের পার্শ্ববর্তী জায়গার ব্র্যাক নার্সারির দায়িত্বশীল ও স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তি জনাব ইলিয়াস পাইটি বলেন, আমাদের ব্র্যাক নার্সারির ভারাট ও সীমানা নির্মাণের কার্যক্রম আমার হাতেই সম্পন্ন করা হয়। আমরাও মসজিদ মাদরাসা ও জনগণের চলাচলের জন্য রাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী ৪ ফিট জমি ছেড়েই আরসিসি দেওয়াল তুলেছি।
আমুলিয়া মডেল টাউনের সভাপতি আলহাজ্ব রতন চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের এলাকায় এই দ্বীনি প্রতিষ্ঠান জামেআ মারাকাযুল ইহসান ঢাকা এর সার্বিক উন্নতি অগ্রগতির জন্য আমরা আজীবন সহযোদ্ধা হয়ে থাকবো ইনশাআল্লাহ।
হাআমা/