মহিলা মাদরাসায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন: ৩ শিক্ষাবিদ আলেমের ভাবনা
প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:১১ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

সম্প্রতি যশোরের একটি মহিলা মাদরাসায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবরটি ফলাও করে প্রচারের পর বন্ধ করে দেওয়া হয় মাদরাসাটি। শুধু ওই মাদরাসাটিই নয়, দেশের আরও বিভিন্ন স্থানে মহিলা মাদরাসাগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের খবর পাওয়া গেছে।

বিষয়টি নিয়ে নানা প্রশ্ন ও বিতর্ক উঠছে। নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার অজুহাতে এভাবে সিসি ক্যামেরা স্থাপন আদৌ জায়েজ কি না, জায়েজ হলেও এর পদ্ধতি কী হওয়া উচিত এসব ব্যাপার নিয়ে আওয়ার ইসলাম মুখোমুখি হয়েছে তিনজন বিশিষ্ট আলেম ও শিক্ষাবিদের। তাদের ভাবনায় সিসি ক্যামেরা ছাড়াও মহিলা মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থার নানা দিক উঠে এসেছে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন হুমায়ুন আইয়ুব।

‘আমি ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টিকে জায়েজ মনে করি না’ 
মুফতি জাফর আহমাদ
মুহতামিম, বাইতুল উলুম ঢালকানগর, ঢাকা 


আওয়ার ইসলাম: নিরাপত্তা বা শৃঙ্খলার স্বার্থে মহিলা মাদরাসায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনের বিষয়ে আপনার মতামত কী?

মুফতি জাফর আহমাদ: মহিলা মাদরাসার ভেতরে সিসি ক্যামেরার রেকর্ড যদি শুধু শিক্ষিকা বা দায়িত্বশীল কোনো মহিলা দেখেন এবং কোনো পুরুষের দেখার সুযোগ না থাকে, তাহলে সেটি জায়েজ হতে পারে। কিন্তু যদি পরবর্তী সময়ে কোনো পুরুষের তা দেখার সম্ভাবনা থাকে—যেমন মনিটর যদি মুহতামিম সাহেবের রুমে থাকে কিংবা বড় আপার রুমে থাকে এবং বড় আপার স্বামী সেটি দেখার সুযোগ পান—তাহলে তা জায়েজ নয়, এটা হারাম।

আওয়ার ইসলাম: সিসি ক্যামেরার রেকর্ড তো সাধারণত ১৫ দিন থেকে এক মাস পর্যন্ত সংরক্ষণে থাকে। তাহলে তো পরবর্তী সময়ে কোনো পুরুষের তা দেখার সম্ভাবনা থেকেই যায়। এই অবস্থায় কি এটাকে জায়েজ বলা যাবে?

মুফতি জাফর আহমাদ: না, আমি ব্যক্তিগতভাবে এই বিষয়টিকে জায়েজ মনে করি না। এ কারণেই আমি আমার প্রতিষ্ঠিত মহিলা মাদরাসায় সিসি ক্যামেরা লাগাইনি, যদিও পুরুষদের মাদরাসায় লাগিয়েছি।

আওয়ার ইসলাম: ঢাকা এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলে মহিলা মাদরাসার যে দ্রুত সম্প্রসারণ ঘটছে, সেখানে অনেক মুহতামিম বা শিক্ষক পরিবার নিয়ে থাকছেন। আপনি এটাকে কীভাবে দেখেন?

মুফতি জাফর আহমাদ: বর্তমানে সমাজে যত মহিলা মাদরাসা গড়ে উঠছে, তার অনেকটাই হচ্ছে পেটের ধান্দায়—শরিয়তের প্রয়োজনে নয়। একজন আলেম বিয়ে করছেন একজন আলেমাকে। কিন্তু তার নিজের কোনো চাকরি নেই। তখন সে স্ত্রীকে নিয়ে তিন রুমের একটি বাসা ভাড়া নেয়। এক রুমে নিজে থাকে, আর বাকি দুই রুম মাদরাসা বানিয়ে ফেলে। এভাবেই অপরিকল্পিতভাবে মহিলা মাদরাসা গড়ে উঠছে। আমি মনে করি, এই ধরনের মাদরাসাগুলো আসলে দীন প্রতিষ্ঠার মাধ্যম নয়, বরং দীন নষ্ট করার উপায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এর মাধ্যমে মানুষ প্রকৃত দীন পাবে না।

 

‘মহিলা মাদরাসা পরিচালকদের ফিতনার ব্যাপারে অনেক বেশি সতর্ক হতে হবে’
মাওলানা মনিরুজ্জামান 
মুহতামিম, জামিয়া ইসলামিয়া বাইতুন নূর, সায়েদাবাদ

আওয়ার ইসলাম: নিরাপত্তার অজুহাতে মহিলা মাদরাসায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনের প্রয়োজন রয়েছে বলে আপনি মনে করেন?

মাওলানা মনিরুজ্জামান: মেয়েরা যেখানে অবস্থান করে এবং খোলামেলা চলাফেরা করে, সেখানে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কোনো প্রশ্নই ওঠে না। এটি জায়েজ হবে না। তবে সিঁড়িতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা যেতে পারে, কারণ সেখানে ছাত্রীরা পর্দা মেনেই চলাফেরা করে। তবু বলব, মহিলা মাদরাসায় নিয়ন্ত্রণ-শৃঙ্খলা কিংবা নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে সিসি ক্যামেরা স্থাপন ঝুঁকিপূর্ণ।

আওয়ার ইসলাম: সিসি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণ পুরুষ বা মহিলা যেই করুক না কেন, রেকর্ড তো ১৫ দিন বা এক মাস পর্যন্ত সংরক্ষিত থাকে। পরে যেকোনো পুরুষ সেটি দেখতে পারে। সেক্ষেত্রে কি এটি অনিরাপত্তার বিষয় নয়?
মাওলানা মনিরুজ্জামান: ছাত্রীরা যেখানে চলাফেরা করে, সেখানে পুরুষদের নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এবং শরিয়তসম্মত নয়।

আওয়ার ইসলাম: যদি কোনো কারণে রাস্তা, সিঁড়ি বা মাদরাসার অভ্যন্তরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতেই হয়, তাহলে কি বলা যেতে পারে—তার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নারী শিক্ষিকাদের হাতে থাকবে?

মাওলানা মনিরুজ্জামান: নারী শিক্ষিকাদের হাতে নিয়ন্ত্রণ থাকলে ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে। আমাদের প্রাথমিক প্রস্তাবনা হলো—মহিলা মাদরাসাগুলো নারী শিক্ষিকারাই পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করবেন। তবে বাস্তবে নিয়ন্ত্রণ তাদের হাতে কতটা থাকবে, সেটাই ভাববার বিষয়।

আওয়ার ইসলাম: মূলত মেয়েদের চলাফেরার স্থান—যেমন ক্লাসরুম বা বেডরুমে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কোনো সুযোগ আছে বলে আপনি মনে করেন?

মাওলানা মনিরুজ্জামান: নিয়ন্ত্রণ, শৃঙ্খলা কিংবা নিরাপত্তা—যেকোনো কারণেই হোক, ক্লাসরুম বা বেডরুমে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কোনো সুযোগ নেই। কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (বেফাক) ও হাইআ (সম্মিলিত বোর্ড) সম্পূর্ণ শরিয়তের আলোকে পরিচালিত হয়। শরিয়তের বাইরে গিয়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের প্রশ্নই আসে না।

আওয়ার ইসলাম: মহিলা মাদরাসার পরিচালক ও দায়িত্বশীলদের উদ্দেশে কিছু বলুন

মাওলানা মনিরুজ্জামান: মেয়েদের শিক্ষার প্রয়োজন আছে, এজন্যই বেফাক ও হাইআ মেয়েদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা রেখেছে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ব্যবস্থাপনা বড় হওয়ায় কিছু ঝুঁকিও তৈরি হয়েছে। এজন্য পরিচালকদের আরও বেশি সতর্ক ও সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে মুহতামিম ও অন্যান্য দায়িত্বশীলদের হতে হবে মুত্তাকি ও পরহেজগার। মহিলা মাদরাসার শিক্ষার্থীদের দিয়ে কোনো খেদমত নেওয়া উচিত নয়—কোনো ছোট মেয়ের দ্বারাও নয়। এজন্য আলাদা খাদেম রাখা উচিত। ব্যবস্থাপনা এমন হতে হবে, যাতে কারও মনে কোনো খারাপ ধারণা জন্ম নেওয়ার সুযোগ না থাকে।

আওয়ার ইসলাম: অনেক মাদরাসাতেই দেখা যায়, মুহতামিম বা শিক্ষক পরিবারসহ মাদরাসার ভেতরেই থাকেন। এতে ছোট-বড় ছাত্রীদের আসা-যাওয়ার সুযোগ থাকে। আপনি এভাবে একত্রে অবস্থানকে কীভাবে দেখেন?

মাওলানা মনিরুজ্জামান: এ ধরনের ব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন বেফাক-হাইয়ার দায়িত্বশীলসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় মুরব্বিরা। মাদরাসার ভেতরে একসঙ্গে অবস্থান কওমি মাদরাসার বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে যায় না।

 

‘সতর্কতার পরও সিসি ক্যামেরা স্থাপনে ফিতনার আশঙ্কা রয়েছে’ 
মাওলানা মাহমুদ জাকির
মুহতামিম, ফাতিমাতুয যাহরা মহিলা মাদরাসা, রামপুরা, ঢাকা

আওয়ার ইসলাম: সাম্প্রতিক সময়ে মহিলা মাদরাসার নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার কথা বলে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের প্রসঙ্গ উঠছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী?

মাওলানা মাহমুদ জাকির: এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সমসাময়িক একটি বিষয়। মাদরাসাগুলোর নিরাপত্তার যেমন প্রয়োজন আছে, তেমনি ভেতরে ছাত্রীদের তদারকির উদ্দেশে কেউ কেউ সিসি ক্যামেরার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে যে ফিতনা প্রকাশ পেয়েছে, তা বিবেচনায় নিলে মহিলা মাদরাসার অভ্যন্তরে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করার কোনো সুযোগ শরিয়তে নেই। আমি একে বৈধ মনে করি না। কারণ, একজন মেয়েকে কোনো পুরুষের দেখার সুযোগ শরিয়ত অনুমোদন করে না।

আওয়ার ইসলাম: আপনি দীর্ঘদিন ধরে মহিলা মাদরাসায় শিক্ষকতা করছেন এবং একটি মহিলা মাদরাসাও পরিচালনা করছেন। আপনার ক্ষেত্রে সিসি ক্যামেরার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছেন কি?

মাওলানা মাহমুদ জাকির: হ্যাঁ, প্রয়োজন বোধ করেছি। আমার মাদরাসা দুটি বিল্ডিং নিয়ে গঠিত। নিয়ন্ত্রণের জন্য আমার স্ত্রী কয়েকবার সিসি ক্যামেরার প্রস্তাব দিয়েছেন এবং সেটি তিনিই নিয়ন্ত্রণ করবেন বলে জানিয়েছেন। আমি নিজেও সেটা দেখতে পারব না। তবু, মাদরাসা বন্ধ থাকা অবস্থায় কোনো সমস্যা হলে বা টেকনিশিয়ান এলে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা লাগতে পারে। কারণ, ফুটেজ সাধারণত ১৫–৩০ দিন সংরক্ষিত থাকে। যেহেতু দেখার সেই সুযোগ থেকেই যায়, তাই প্রয়োজনবোধ সত্ত্বেও আমি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করছি না।

আওয়ার ইসলাম: কোনো মাদরাসায় যদি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়, তাহলে তার নিয়ন্ত্রণ মহিলা পরিচালকের হাতে থাকবে নাকি পুরুষ পরিচালকের হাতে—আপনার মত কী?

মাওলানা মাহমুদ জাকির: প্রথমত, সিসি ক্যামেরা লাগালে ফিতনার সম্ভাবনা তৈরি হয়। যদি নিয়ন্ত্রণ পুরুষের হাতে না থেকে মহিলার হাতে থাকে, তবু কিছু সমস্যা থেকেই যায়। সব বিষয়ের ওপর মহিলা দক্ষ নাও হতে পারেন, ফলে তাকে শিখিয়ে দিতে হয়, বুঝিয়ে দিতে হয়। তখন টেকনিশিয়ান বা তার স্বামীর মতো পুরুষদের ভেতরে প্রবেশ করতে হয়। এতে নারীদের পর্দাহীনভাবে দেখার সুযোগ সৃষ্টি হয়। আর এই সুযোগ থেকেই একজন পুরুষ নফসের ধোঁকায় পড়ে দেখতে আগ্রহী হতে পারে, ফলে নারী-পুরুষ ফিতনায় জড়িয়ে যেতে পারেন। এজন্যই আমি মনে করি, সিসি ক্যামেরা স্থাপন না করাই উচিত।

আওয়ার ইসলাম: ঢাকায় অনেক মহিলা মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, কোনো কোনোটি বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে। অনেক শিক্ষক ও পরিচালক পরিবারসহ মাদরাসার ভেতরে অবস্থান করেন। আপনি এই ব্যবস্থাপনাকে কীভাবে দেখেন?

মাওলানা মাহমুদ জাকির: যেসব মাদরাসায় পরিচালক ও তার পরিবার মাদরাসার অভ্যন্তরে একসঙ্গে অবস্থান করেন, সেসব স্থান থেকেই বেশি ফিতনা প্রকাশ পাচ্ছে। বড় খালাম্মা একটি রুমে থাকেন, আর পাশের দুটি রুম মাদরাসা বানিয়ে ফেলেন। বড় খালাম্মা সব সময় তো রুমে থাকবেন না—কখনো বেড়াতে যাবেন, কখনো ক্লাসে পড়াতে যাবেন। তখন শিক্ষক বা পরিচালক শয়তানের ধোঁকায় পড়ে যেতে পারেন। এজন্য এভাবে একসঙ্গে অবস্থান মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। তাই কেউ মাদরাসা চালাতে চাইলে, কেনো চালাচ্ছেন তা পরিষ্কার থাকা জরুরি। মেয়েদের শিক্ষার প্রয়োজন অবশ্যই আছে। তবে পরিচালনা মুরব্বির পরামর্শ অনুযায়ী হলে, পরিচালকের একক সিদ্ধান্তে মাদরাসা পরিচালনার সুযোগ থাকবে না।

আওয়ার ইসলাম: সারাদেশে মহিলা মাদরাসাগুলোর জন্য কি কওমি মাদরাসা বোর্ড (বেফাক) ভিন্ন কোনো গঠনপ্রণালী ও ইউনিট গঠন করতে পারে?

মাওলানা মাহমুদ জাকির:  যারা মাদরাসা গড়বেন, তারা যেন কোনো মুরব্বিকে মুরব্বি মেনে মাদরাসা পরিচালনা করেন। কওমি মাদরাসা বোর্ড বেফাক ও হাইআ যেন মহিলা মাদরাসাগুলোর জন্য আলাদা গঠনপ্রণালী ও ইউনিট গঠন করে দেয়। আমি অনেক আগে থেকেই এই দাবি করে আসছি। বেফাকের গত কাউন্সিলে মাওলানা মাহফুজুল হক এ বিষয়ে আলোচনা করেছিলেন। তবে বর্তমানে বিষয়টি কতদূর অগ্রসর হয়েছে, তা আমার জানা নেই। বেফাকভুক্ত হতে হলে যদি কিছু নীতিমালা নির্ধারণ করা হয় এবং কোনো মহিলা মাদরাসা যদি সেই নীতিমালার আওতায় না আসে, তাহলে তার নিবন্ধন না হয়—তাহলেই কার্যকর নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে।

আওয়ার ইসলাম: আপনার প্রতিষ্ঠিত মহিলা মাদরাসার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে চাই। আমরা যতটুকু জেনেছি, সেখানে মহিলা শিক্ষিকারাই পাঠদান করেন। এটা কীভাবে সম্ভব হলো?

মাওলানা মাহমুদ জাকির: দীর্ঘদিন মহিলা মাদরাসার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার ফলে আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি, কোথা থেকে ফিতনা জন্ম নেয়। সে অভিজ্ঞতা থেকেই আমার ইচ্ছা ছিল, আমার প্রতিষ্ঠিত মহিলা মাদরাসায় নারী শিক্ষিকার মাধ্যমেই পাঠদান হবে। শুধু বুখারি শরিফ পড়ান মালিবাগ মাদরাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা জাফর আহমদ, দারুল উলূম রামপুরার মুহতামিম মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, পীরজঙ্গী মাদরাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা আব্দুল আখির। আমরা চারজন মিলে এই পাঠ দিই। তাও সরাসরি নয়—আমরা দ্বিতীয় তলায় অবস্থান করি, ছাত্রীদের ক্লাস হয় তৃতীয় তলায়। অনেকে বলেন, নারী শিক্ষিকারা পড়ালে মান ঠিক থাকে না। আমি তাদের এ কথা এইভাবে খণ্ডন করি—১. আমার মাদরাসায় যোগ্যতাসম্পন্ন নারী শিক্ষিকারা রয়েছেন, যাঁরা বুখারি শরিফ ছাড়া বাকি সব কিতাব পড়ান। ২. নারী শিক্ষিকাদের বেতন পুরুষ শিক্ষকদের তুলনায় এমনিতেই কম। তারপরও বেতনের ক্ষেত্রে নানা অনিয়ম দেখা যায়। মাসের পর মাস বেতন আটকে রাখা হয়, রমজানের আগে ছাঁটাই করা হয়—এই জুলুম বন্ধ হলে ভালো মানের নারী শিক্ষিকা অবশ্যই পাওয়া যাবে।

এসএকে/