৩য় তারাবির নামাজে তিলাওয়াতের সারমর্ম
প্রকাশ:
০৩ মার্চ, ২০২৫, ০৩:২৬ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
![]()
|| তাওহীদ আদনান ইয়াকুব || (সূরা আলে ইমরান:৯২-২০০ ও সূরা নিসা:১-৮৭) পবিত্র কুরআন শুধু একটি ধর্মগ্রন্থ নয়; এটি মানবজাতির জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান, যেখানে রয়েছে ঈমান, তাকওয়া, সামাজিক ন্যায়বিচার ও পারিবারিক জীবনের পথনির্দেশনা। তৃতীয় দিনের তারাবির তেলাওয়াতে সূরা আলে ইমরানের শেষ অংশ ও সূরা আন-নিসার প্রথম অংশ তেলাওয়াত করা হবে। যেখানে ঈমানদারদের পরীক্ষা, উহুদ যুদ্ধের শিক্ষা, দান-সদকা, পারিবারিক বিধান, সামাজিক ন্যায়বিচার, নারীর অধিকার, উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিধান, যুদ্ধনীতি ও মুনাফিকদের স্বরূপ বিশদভাবে বর্ণিত হয়েছে। উহুদ যুদ্ধের ঘটনাবলি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করলে কেমন বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। অপরদিকে, সূরা নিসায় নারী ও সমাজের দুর্বল শ্রেণির অধিকার সুরক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা ইসলামের সাম্য ও সুবিচারের নীতি প্রতিষ্ঠা করে। ১. সূরা আলে ইমরান (৯২-২০০) – শেষ অংশের সারমর্ম দান-সদকা ও হালাল রিজিক (৯২-১০৯) • আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য উত্তম সম্পদ ব্যয় করতে হবে। ঈমানদারদের পরীক্ষা ও উহুদ যুদ্ধের শিক্ষা (১১০-১৮০) • মুসলমানরা সর্বোত্তম জাতি, যারা সৎ কাজের আদেশ করে ও অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখে। আল্লাহর প্রতি আস্থা ও মুত্তাকীদের গুণাবলি (১৮১-২০০) • মুসলমানদের ধৈর্য ধরার ও একতা বজায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ২. সূরা নিসা (১-৮৭) – প্রথম অংশের সারমর্ম নারীর অধিকার ও পারিবারিক বিধান (১-১০) • মানবজাতি এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি হয়েছে, তাই একে অপরের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া জরুরি। বিবাহ ও সামাজিক শৃঙ্খলা (১৫-২৩) • ব্যভিচারের শাস্তি এবং পবিত্র জীবনযাপনের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। বৈধ ও অবৈধ সম্পর্ক (আয়াত ২৪-২৮) • ইসলাম বিবাহকে পবিত্র ও বৈধ সম্পর্ক হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে। মানুষের দায়িত্ব ও আমানত (আয়াত ২৯-৪২) • অন্যায়ভাবে একে অপরের সম্পদ ভোগ করা হারাম। পাপ ও ক্ষমার নীতি (আয়াত ৪৩-৫৭) • নামাজে উপস্থিত হওয়ার আগে পবিত্রতার শর্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। ন্যায়বিচার ও মুসলমানদের দায়িত্ব (আয়াত ৫৮-৭০) • বিচারকদের প্রতি সুবিচার করার নির্দেশ। জিহাদ ও আত্মরক্ষা (আয়াত ৭১-৮৭) • আত্মরক্ষা ও ইসলামের রক্ষায় যুদ্ধ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মূল শিক্ষা ও বার্তা: • আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হালাল উপার্জন ও উত্তম সম্পদ ব্যয় করতে হবে। উপসংহার: এই শিক্ষা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, ইসলামী জীবনব্যবস্থা পরিপূর্ণ ও ভারসাম্যপূর্ণ। এতে আছে ঈমান, তাকওয়া, ধৈর্য, পারিবারিক সম্পর্কের মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার। এই আয়াতগুলো আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান মেনে চলার আহ্বান জানায়। ব্যক্তি ও সমাজজীবনে শান্তি ও সুবিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা যেন কুরআনের এই মূল্যবান শিক্ষাগুলো অন্তরে ধারণ করি এবং সেগুলো অনুসরণ করার চেষ্টা করি। এতে রয়েছে মুসলমানদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও সামরিক জীবনে আল্লাহর বিধান মেনে চলার শিক্ষা। আমরা যেন এই শিক্ষাগুলো নিজেদের জীবনে বাস্তবায়ন এবং আল্লাহর বিধানের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য প্রদর্শন করতে পারি আল্লাহ আমাদের সেই তাওফিক দান করুন। এমএইচ/ |