মাদারীপুরে তিন খুন: মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা
প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১:২৯ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

মাদারীপুর প্রতিনিধি

মাদারীপুরে তিন খুনের ঘটনার মাঠ পর্যায়ের তদন্তে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আব্দল মাবুদ। তিনি শনিবার দুপুরে নিহত তিনজনের বাড়িতে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন। এসময় পুলিশের এ কর্মকর্তা ন্যায় বিচার দিতে পুলিশ জিরো টলারেন্স বলে দাবি করেন।

জানা যায়, আধিপত্য বিস্তার আর স্থানীয় কোন্দলের জেরে মাদারীপুরের বাঁশগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আতাউর রহমান আক্তার শিকদার, তার ছেলে মারুফ শিকদার ও সহযোগী সিরাজ চৌকিদারকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। দীর্ঘ দিন ধরে বাঁশগাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমন ও মেম্বার আক্তার শিকদারের সাথে দ্বন্দ্বের কারণেই এই তিনজন খুন হয়েছে বলে স্থানীয় লোকজন ও নিহতের পরিবারের দাবি।

শুক্রবার ভোরে কালকিনি উপজেলার বাঁশগাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানেও এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা আছে। নিহতের পরিবার থেকে মামলার প্রক্রিয়া চলছে। বাজার-ঘাটে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এ ঘটনায় চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমনকে আসামি করা হবে বলেও জানা যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, তিনজন খুনের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে মাঠ পর্যায়ে চষে বেড়াচ্ছেন পুলিশ, সেনাবাহিনী আর র‌্যাব সদস্যরা। দোষীকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছেন। ফলে পুলিশ হেড কোয়াটার্স থেকেও বিষয়টি মনিটরিং করা হচ্ছে বলে পুলিশ জানায়। ফলে শনিবার ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্যে পুলিশ সুপার মো. সাইফুজ্জামানকে নির্দেশ দেন।

এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার সাইফুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলমসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক মোহাম্মদ আব্দুল মাবুদ বলেন, ‘ঘটনাটিকে অতি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এভাবে তিনজন মানুষকে মর্মান্তিকভাবে হত্যা করা কোনভাবেই কাম্য নয়। এ ঘটনার সাথে সম্ভাব্য খুঁটিনাটি দেখা হচ্ছে। তবে এখানে চেয়ারম্যান সুমন আর মেম্বার আক্তারের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে ঝামেলা ছিল, বিষয়টি এমনই বোঝা যাচ্ছে। তারপরেও তদন্ত করে স্পষ্ট হওয়া যাবে।’

নিহত আতাউর রহমান আক্তার শিকদারের পিতা মতিন শিকদার বলেন, ‘আমাদের বাড়ি-ঘর কয়েকদিন আগে সুমন চেয়ারম্যানের লোকজন পুড়ে দেয়, আর সেই পোড়া বাড়ি ঢাকা থেকে দেখতে আসছিল আক্তার আর আমার নাতি মারুফ। তাদের ওপর হামলা করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে সুমন ও তার লোকজন। আমার আর কোন ছেলেও নাই, নাতিও নাই। আমার পুরো বংশ শেষ করে দিলো। আমি এদের বিচার চাই।’

ঘটনার পর থেকে চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান সুমন ও তার ভাই রাজন বেপারীকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তাদের ঘরে তালা ঝুলছে।