মহেশপুরে কলাইয়ের বাম্পার ফলনে খুশি চাষিরা, তবে দাম নিয়ে শঙ্কিত
প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১১:৪৮ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

মাসুম পারভেজ শাকিল
মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি

ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় মৌসুমি ফসল মাষকলাই চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর কলাইয়ের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে কাঙ্ক্ষিত মূল্য পাবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কিত কৃষক।

মহেশপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানান, এ বছর প্রতি বিঘা জমিতে ৫-৬ মণ করে কলাইয়ের ফলন হয়েছে। বাজারে মণ প্রতি ৪ হাজার দুইশত থেকে ৪ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার খালিশপুর, নাটিমা, ভৈরবা, ঘুগরী, নেপা, আজমপু ও সামন্তা গ্রামে কলাই ভালো হয়েছে।

ভৈরবা গ্রামের কৃষক রুবেল হুসাইন জানান, প্রতিকুল হাওয়া সত্তেও কলাইয়ের ফলন ভালো হয়েছে। কলাই চাষে তুলনামূলক পরিশ্রম কম এবং সার, সেচ ও কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না। স্বল্প খরচে এই ফসলের উৎপাদন ভালো। বিঘা প্রতি ৬-৮ মণ করে কলাইয়ের ফলন হবে বলে মনে তরছেন তিনি।

কৃষক শাহ জামাল বলেন, 'ফসল যখনই বিক্রির জন্য বাজারে নেওয়া হয় তখনই হঠাৎ করে দাম কমে যায়। অথচ ফসল বাজারে আসার আগে দাম থাকে চড়া। অন্য ফসলের মতো কলাই বাজারে যখন তোলা হবে তখন দর কমে যায় কিনা তা নিয়ে চিন্তায় আছি।' তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন অন্যান্য কৃষকরাও।

কালাই ব‍্যাবসায়ী জহুরুল ইসলাম জানান, ‘বাজারে সবেমাত্র নতুন কলাই আসতে শুরু করেছে। বতর্মান বাজার একটু বেশি। আমরা চাষিদের কাছ থেকে ভালো মানের কালাইগুলো ৪ হাজার দুইশত টাকা করে মণ। আর এভারেজ কালাই ৪ হাজার একশত টাকা করে মণ কিনছি। আর খুচরা গড়ে ৪ হাজার দুইশত টাকা থেকে ৪ হাজার তিনশত টাকা করে বিক্রি করছি।’

বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, চীন ও কোরিয়াতে কলাই চাষ হয়।

বিশেষজ্ঞরা জানান, মুগ ডালে ফাইবার, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকার কারণে এটি রক্তচাপ কমাতে কার্যকারী। এটি হার্টের সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে। মুগ ডালে ফাইবার এবং প্রতিরোধী স্টার্চ থাকার কারণে এটি হজমে ভালো কাজ করে। এই ডালের ২০২ গ্রামে প্রায় ১৫ দশমিক ৪ গ্রাম ফাইবার পাওয়া যায়।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, ডালশষ্য চাষের পর জমিতে বিঘা প্রতি ৬-৮ কেজি নাইট্রোজেন (১৩-১৭ কেজি ইউরিয়ার সমান) মাটিতে যুক্ত হয়। কারণ ডালশষ্যের শিকড়ে গুটির মধ্যে থাকা রাইজোবিয়াম জীবাণু বাতাসের নাইট্রোজেন শোষণ করে গাছকে দেয় এবং বাকিটা মাটিতে জমা হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘এ বছর প্রতি বিঘা জমিতে ৫-৬ মণ করে কলাইয়ের ফলন হয়েছে। বাজারে মণ প্রতি ৪ হাজার দুইশত থেকে ৪ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আমরা এ ধরনের ফসল উৎপাদনে চাষিদের বরাবরই সার্বিকভাবে সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি।’

এনএ/