চাল আমদানিতে নেই প্রভাব, লাভের গুড় পিঁপড়ায় খায়
প্রকাশ:
১০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১০:৫৯ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
![]()
ইমরুল কায়েস, হিলি (দিনাজপুর) দেশের বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার গেল মাসে চাল আমদানিতে শুল্ক প্রত্যাহার করে। ১১ নভেম্বর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে শুরু হয় চাল আমদানি। এতে এক বুক আশায় ছিল নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি। আমদানি শুরুর প্রায় একমাস হলেও পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে নেই এর প্রভাব। বাজারে আগের সেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের চাল। আমদানিকৃত স্বর্ণা জাতের চাল ৫০ টাকার নিচে নামার কথা থাকলেও বন্দরে বিক্রি হচ্ছে ৫১-৫২ টাকায়। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকাররা জানান, আমদানিকৃত চালের তুলনায় দেশীয় চালের দাম কম। তাই বন্দর থেকে চাল কিনতে আগ্রহ কম। দেশের বাজারে চালের দাম সহনীয় রাখতে শুল্কমুক্ত চাল আমদানির উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে ব্যবসায়ীরা জানান, এমন উদ্যোগ আরো অন্তত দু’ মাস আগে নিলে আমদানির সুফল মিলত। কেননা নভেম্বর মাসে কৃষকের উৎপাদিত ধান ঘরে আসতে শুরু করে। আমদানিকারকরা জানান, চালের শুল্ক প্রত্যাহার করায় এর সুয়োগ নিয়েছে ভারতের রফতানিকারকরা। এমন উদ্যোগে ভারতের ব্যবসায়ীরা চালের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। তাদের অভিযোগ, কোন পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সরকার যখন কম মূল্যে ভোক্তাদের কাছে পৌছে দিতে আমদানিতে শর্ত শিথীল করে, তখন ভারত সেই পণ্যের রফতানি মূল্য বাড়িয়ে দেয়। যার কারণে সরকার এমন উদ্যোগ নিলেও এর সুফল ভোক্তা পর্যায়ে মিলে না। চাল আমদানির ক্ষেত্রে সেই কাজটি করেছে দেশটির ব্যবসায়ীরা। আগে তারা ৩৬০ ডলার মূল্যে চাল রফতানি করলেও বাংলাদেশ সরকার চালের শুল্ক মৌকুফ করায় তারা টন প্রতি ৬০ ডলার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে, মানে ৪২০ ডলার মূল্যে চাল রফতানি করছেন। হিলি স্থলবন্দরের চাল আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানে মেসার্স আফিফ এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক জানান, সরকার দেশের বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুল্কমুক্ত চাল আমদানি করার উদ্যোগ গ্রহণ নিঃসন্দেহে মহৎ উদ্যোগ। কিন্তু আমদানিতে সরকার শুল্ক প্রত্যাহার করায় ভারত রফতানিমূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভারত থেকে চাল আমদানি না করলে চাহিদার তুলনায় যোগান থাকবে না। ফলে ঘাটতি দেখা দেবে। সেই কথা ভেবে তারা বেশি দামে চাল রফতানি করছেন। আগে ৩৪০ ডলার তাদের রফতানি মূল্য ছিল এখন ৪২০-৪৩০ ডলার মূল্যে রফতানি করছেন। তিনি আরো বলেন, ৩২০ ডলার মূল্যে চাল আমদানি করা গেলে দাম কেজিতে অন্তত ৬-৮ টাকা দাম কমত। হিলি স্থলবন্দরে চাল কিনতে আসা ব্যবসায়ী মুকিবুল ইসলাম জানান, আমদানির খবরে বন্দরে চাল কিনতে এসেছি। কিন্ত এখানে এসে দেখি দাম বেশি। স্বর্ণা জাতের চাল এখানে ৫২ টাকা। এর থেকে ভালো মানের দেশীয় স্বর্ণা-৫ জাতের চাল বাজারে ৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তাই চাল না কিনে ফিরে যাচ্ছি। হিলি স্থলবন্দরের তথ্যমতে ১১ নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ১৮ হাজার ৮৭৭ টন চাল আমদানি হয়েছে। |