কর্ণফুলী টানেলে দৈনিক আয়ের চেয়ে, ব্যয় দ্বিগুণ
প্রকাশ: ৩১ আগস্ট, ২০২৪, ১০:৫১ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের নজর ছিল শুধু অবকাঠামো উন্নয়নে। একের পর এক মেগা প্রকল্পের নামে বিদেশি পার্টি থেকে ঋণ নেওয়া হয়েছে। পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাগুলোর পরামর্শকে পাশ কাটিয়ে মনগড়া পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে বিনিয়োগ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এরমধ্যে অন্যতম বড় প্রকল্পটি হলো চট্টগ্রামের নদীর তলদেশে নির্মিত কর্ণফুলী টানেল।

অর্থনৈতিক করিডরের কথা মাথায় রেখে এ প্রকল্প নেওয়া হলেও সেখানে দেখা মিলেনি বিনিয়োগের। সম্ভাব্য যে পরিমাণ গাড়ি চলাচলের কথা ছিল তার সিকি ভাগও সেখানে চলছে না। টানেল দিয়ে এখন পর্যন্ত প্রত্যাশা অনুযায়ী যানবাহন চলছে না। ফলে টোল আদায় হচ্ছে কম । আয়ের চেয়ে ব্যয় এখন পর্যন্ত বেশি। যাকে বলে ঘোড়ার চেয়ে ঘোড়ার লাগামের দাম বেশি।

সেতু কর্তৃপক্ষের হিসাবে টানেল দিয়ে এখন পর্যন্ত দিনে গাড়ী চলে সাড়ে চার হাজারের কিছু বেশি। পূর্বাভাস ছিল, এর অন্তত চারগুণ যানবাহন চলবে। টানেল থেকে টোল বাবদ দৈনিক গড়ে আয় হচ্ছে ১১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। অন্যদিকে এই টোল আদায় ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ দৈনিক ব্যয় গড়ে সাড়ে ৩৭ লাখ টাকা।

কর্ণফুলী নদীর তলদেশে এ টানেলের দৈর্ঘ্য ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। এটি দেশের নদীর তলদেশের প্রথম টানেল। চীনা ঋণ ও বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে এ টানেল তৈরি করা হয়েছে।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মো. হাদিউজ্জামান গণমাধ্যমকে বলেন,  এখনো আমাদের মেগা প্রকল্পগুলো যদি যাতায়াতের করিডর হিসেবে থেকে যায়, তাহলে অবশ্যই বড় শঙ্কার ব্যাপার ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে। এ প্রকল্পগুলো যাতায়াত করিডর থেকে অবশ্যই অর্থনৈতিক করিডরে রূপান্তর করতে হবে। সে ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক করিডর করতে হলে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ

এ বিশেষজ্ঞ আরো বলেন, ‘এত বড় বিনিয়োগ শুধু যাতায়াতের করিডর হিসেবে আমরা দেখছি না। এ প্রকল্পগুলোর ঋণ টাকায় না বরং আমাদের ডলারে শোধ করতে হবে। সুতরাং যদি আমরা বিনিয়োগ না আনতে পারি, ডলার না আনতে পারি তাহলে অবশ্যই বড় ঝুঁকি রয়েছে।

হাদিউজ্জামান বলেন, বঙ্গবন্ধু টানেল মিরসরাই ও মাতারবাড়ীর মতো অর্থনৈতিক করিডরগুলো মাথায় রেখেই করা হয়েছে। এগুলো যদি সঠিক সময়ে চালু না হয়, তাহলে এ বিনিয়োগ মুখ থুবড়ে পড়বে, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

এমএন/