হিজরি নববর্ষের প্রথম রাতে নতুন গিলাফে সজ্জিত প্রাণের কাবা
প্রকাশ: ০৭ জুলাই, ২০২৪, ০৫:১৯ বিকাল
নিউজ ডেস্ক

হিজরি নববর্ষের প্রথম রাতে পবিত্র কাবাঘরে নতুন গিলাফ পরানো হয়েছে। দক্ষ প্রযুক্তিবিদ এবং কারিগরদের একটি বিশেষ দল কাবাঘরে নতুন গিলাফ প্রতিস্থাপন করেছেন। 

শনিবার (৬ জুলাই) এশার নামাজের পর গিলাফ পরিবর্তনের কার্যক্রম শুরু হয়। পুরো কার্যক্রমটি তত্ত্বাবধান করে মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদের সাধারণ কর্তৃপক্ষ।

বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত প্রকৌশলী এবং প্রযুক্তিবিদদের তত্ত্বাবধানে ১৫৯ জন দক্ষ কারিগরের সমন্বয়ে গঠিত বাদশাহ আবদুল আজিজ কমপ্লেক্সের একটি দল গিলাফ পরিবর্তনের কাজ করেছেন। পুরোনো গিলাফ সরিয়ে নতুন গিলাফ কাবার ওপর পুরোপুরি প্রতিস্থাপন করতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগে।

গিলাফ পরিবর্তনের জন্য কারখানা থেকে গিলাফটি বিশেষ ট্রাকে করে কাবা প্রাঙ্গণে আনা হয়। পরে পুরোনো গিলাফ থেকে সোনার সূচিকর্ম করা টুকরাগুলো সরিয়ে নতুন গিলাফ লাগানোর কাজ শুরু হয়।

গিলাফে স্বর্ণের এমব্রয়ডারি করা ৫৩টি টুকরা রয়েছে। যার মধ্যে বেল্টের জন্য ১৬টি, বেল্টের নীচে সাতটি, চারটি কোণার টুকরো, ১৭টি ঝুলন্ত, পাঁচটি দরজার পর্দার জন্য, রুকনে ইয়েমেনির জন্য একটি এবং দুটি টুকরা হাজরে আসওয়াদ ও মিজাবে রহমতের জন্য। হাতে কাজ করা স্বর্ণের সুতার সূচিকর্ম সম্পূর্ণ করতে প্রায় ১২০ দিন সময় লাগে। এ কাজে যুক্ত রয়েছেন দুই শতাধিক দক্ষ কর্মী।

পবিত্র কাবার গিলাফ তৈরিতে মোট ১২০ কেজি স্বর্ণ, ১০০ কেজি রুপা এবং ১ হাজার কেজি প্রাকৃতিক সিল্ক ব্যবহার করা হয়। গিলাফটির ওজন ১ হাজার ৩৫০ কেজি, উচ্চতা ১৪ মিটার মিটার। গিলাফের চারটি পৃথক দিক এবং দরজার জন্য আলাদা একটি পর্দা রয়েছে। যেখানে বাইরে থেকে কালো কাপড়ের ওপর স্বর্ণের সুতা দিয়ে বোনা কোরআনের আয়াত ও অন্যান্য নকশা শোভা পায়। গিলাফের সব কাজ শেষ করতে ছয় থেকে আট মাস সময় লাগে।

হজযাত্রীদের ভিড়ে গিলাফকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষার জন্য গত ২২ মে পবিত্র হজের আগে গিলাফের নীচের অংশ ৩ মিটার ওপরে উঠিয়ে রাখা হয়।

আগে হজের দিন (৯ জিলহজ) কাবার গিলাফ বদলানো হতো। কয়েক বছর ধরে এ রীতিতে পরিবর্তন এসেছে। হারামাইন পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হিজরি বছরের প্রথম দিন মহররমের কাবার গিলাফ পরিবর্তন করা হয়।

দুই পবিত্র মসজিদের ধর্মীয় বিষয়ক প্রেসিডেন্ট শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস জানিয়েছেন, রাজকীয় সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এই পরিবর্তন করা হয়েছে।

এর আগে গত ১৮ জুন সৌদি বাদশাহর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাবাঘরের সদ্যঃপ্রয়াত প্রধান রক্ষক শায়খ আবদুল মালিক আল-শায়বির কাছে নতুন গিলাফ হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে প্রধান রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন শায়খ আবদুল ওয়াহাব বিন জয়নুল আবেদিন আল-শায়বি।

হাআমা/