কম সময়ে বেশি সওয়াবের আমল
প্রকাশ: ১৮ জুন, ২০২৪, ০১:৫২ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

মানুষের জীবন নানাবিধ বৈষয়িক চিন্তা ও কাজে কাটে। আর স্বাভাবিকতই প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব ব্যস্ততা ও কর্মপদ্ধতি রয়েছে। কিন্তু মুমিনের জীবন-অনুষঙ্গে থাকে পরকালের চিন্তা। ব্যস্ততার পসরা যতই বাদ সাধুক— সময় বের করে তারা ইমান-আমলে মনোনিবেশ করেন, মানবকল্যাণ ও আখিরাতকেন্দ্রিক কাজকর্ম করেন। কিন্তু অনেক সময় এমন হয়– অফিস বা কর্মস্থলে ইবাদত-বন্দেগি ও নেক আমলের সুযোগ খুব একটা মেলে না। তাই যারা এমন ব্যস্ততায় অভ্যস্ত, তাদের জন্য ‘অল্প আমলে বিপুল সওয়াব লাভ’— তাদের জীবনের সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ।

অফিসে কাজের ফাঁকে বা সামান্য অবসরে অনেক ফজিলতপূর্ণ আমল করা যায়। এই ধরনের আমল সম্পর্কে অনেকে জানেন না। অথচ কাজের ফাঁকে এক মিনিটে প্রচুর ভালো কাজ করা যায়। বিপুল সওয়াব পাওয়া যেতে পারে। শুধু এক মিনিটের গুরুত্বপূর্ণ আমলে অনেক সওয়াব ও পুণ্য হয়।

 

এক মিনিটে করা যায় এমন কিছু আমলের ১০টি তালিকা (পরিবর্ধনযোগ্য) :

(১) মনে মনে দ্রুতগতিতে ৩ বার সূরা ফাতিহা পড়া যায়। এভাবে আমল করলে ১৮০০ এর বেশি নেকি হাসিল করা যায়।

(২) সুরা ইখলাস (ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ) মনে মনে দ্রুতগতিতে ২০ বার পড়া যায়। সুরা ইখলাস একবার পাঠ করলে পবিত্র কোরআনের এক তৃতীয়াংশ পড়ার সমান সওয়াব পাওয়া যায়।  

(৩) চেষ্টা করলে পবিত্র কোরআনের এক পৃষ্ঠা পাঠ করা যায়।

(৪) পবিত্র কোরআনের ছোট একটি আয়াত মুখস্থ করা যায়।

(৫) নিম্নোক্ত দোয়াটি ২০ বার পড়া যায়। উচ্চারণ : ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির’। এ আমলের সওয়াব ইসমাঈল (আ.) এর বংশের ৮ জন দাস আল্লাহর ওয়াস্তে মুক্ত করার সমান।

(৬) ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ ১০০ বার পড়া যায়। যে ব্যক্তি একদিনে এই দোয়াটি ১০০ বার পড়ে তার সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়; যদিও তা সমুদ্রের ফেনার সমান হয়।

(৭) ‘সুবহানাল্লাহিল আজিম’ অথবা ‘সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি’ ৫০ বার পড়া যায়। এ দু’টি বাক্য পড়তে খুব সহজ; আমলের পাল্লাতে অনেক ভারী হবে; আল্লাহর কাছে অতি প্রিয়; ইমাম বুখারি ও ইমাম মুসলিম এ বরাতে হাদিস বর্ণনা করেছেন।

(৮) প্রিয়নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) বলেন, ‘সুব্‌হানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আক্‌বার পাঠ করা, যা কিছুর উপর সূর্য উদিত হয়েছে সবকিছু থেকে আমার কাছে অধিক প্রিয়। ’ (মুসলিম, হাদিস নং: ২৬৯৫)

এক মিনিটে বাক্যগুলো ১৮ বারের বেশি পড়া যায়। এ বাক্যগুলো আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয়। এগুলো সর্বোত্তম কথা এবং আমলের পাল্লায় এগুলোর ওজন অনেক বেশি।

(৯) ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ’ (অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোনো উপায়-সামর্থ্য ও কোনো শক্তি নেই) ৪০ বারের বেশি পড়া যায়। এ বাক্যটির সওয়াব জান্নাতের জন্য সঞ্চিত অমূল্য রত্ন এবং সামগ্রিক দুশ্চিন্তা দূর করে দেয়। বুখারি ও মুসলিমে এ প্রসঙ্গে হাদিস বর্ণিত হয়েছে।

(১০) ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ (অর্থ: আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো উপাস্য নেই, মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল) প্রায় ২৫ বার পড়া যায়। এটি সর্বশ্রেষ্ঠ বাক্য ও তাওহিদের বাণী। এ কালেমার ফজিলত ও মর্যাদার ব্যাপারে অনেক বর্ণনা রয়েছে। 

এই আমলগুলোর বেশিরভাগের ক্ষেত্রেই তেমন কিছু করতে হয় না। এগুলোর জন্য আপনার পবিত্রতারও প্রয়োজন নেই। ক্লান্তি-শ্রান্তি বা কায়িকশ্রম নেই। বরং আমলগুলো যেকোনো অবস্থায় করা যায়।

বিনু/