আফগানিস্তানে আকস্মিক বন্যায় নিহত অন্তত ৬২
প্রকাশ: ১১ মে, ২০২৪, ১১:৫৪ দুপুর
নিউজ ডেস্ক

উত্তর আফগানিস্তানে ভয়াবহ আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২ জনে। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগ  নারী ও শিশু বলে জানিয়েছেন একজন কর্মকর্তা। স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার  এই ঘটনা ঘটে। আফগানিস্তান জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ একটি দেশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাঘলানের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশের একজন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ভারী মৌসুমী বৃষ্টির কারণে আকস্মিক বন্যার ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা হঠাৎ এমন বন্যার জন্য অপ্রস্তুত ছিলেন না।

প্রাদেশিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান হেদায়াতুল্লাহ হামদর্দ এএফপিকে বলেছেন, ‘বাগলান প্রদেশে আজকের বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২।

এই সংখ্যা আরো বাড়ার সম্ভবনা রয়েছে।’ প্রদেশের একাধিক জেলায় গতকাল রাত পর্যন্ত হালকা বৃষ্টি অব্যাহত ছিল। উদ্ধারকর্মীরা কাদা এবং ধ্বংসস্তূপের নীচ থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের উদ্ধারের চেষ্টা করছে। এ ছাড়া জাতীয় সেনাবাহিনী ও পুলিশের নিরাপত্তা বাহিনীও কাজ করছে বলে হামদর্দ জানিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, ‘যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছে তাদেরকে তাঁবু, কম্বল এবং খাবার সরবরাহ করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, জলাবদ্ধ রাস্তা এবং মৃতদেহগুলো সাদা ও কালো কাপড়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। পৃথক একটি ভিডিও দেখা গেছে, চারদিকে শিশুদের কান্নার আওয়াজ এবং অনেকে বন্যার পানিতে ভেসে যাওয়া ঘরের ভাঙা কাঠ এবং ধ্বংসাবশেষ দিকে অসহায়ের মতো তাকিয়ে আছেন।

কর্তৃপক্ষের মতে, এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে আকস্মিক বন্যা এবং অন্যান্য বন্যার কারণে আফগানিস্তানের ১০টি প্রদেশে প্রায় ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। কোনো অঞ্চল রেহাই পায়নি।

কৃষিজমি পানিতে ডুবে গেছে। দেশটিতে ৪০ মিলিয়নেরও বেশি লোকের ৮০ শতাংশ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। গতকাল শুক্রবারও বৃষ্টির কারণে উত্তর-পূর্ব বাদাখশান প্রদেশ এবং মধ্য ঘোর প্রদেশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, কর্তৃপক্ষ সারা দেশে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেবে। বাদাখশানের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রাদেশিক পরিচালক মোহাম্মদ আকরাম আকবরী বলেছেন, ‘পার্বত্য প্রদেশটি বন্যার কারণে... বেশ কয়েকটি এলাকায় ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি সম্মুখীন হয়েছে।’

চার দশকের যুদ্ধে বিধ্বস্ত বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ এটি এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে। বিশ্বব্যাংকের মতে আফগানিস্তানের অর্ধেক জনসংখ্যা দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে এবং ১৫ মিলিয়ন মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সম্মুখীন হচ্ছে।

এনএ/