চোখের যত্মে যা করবেন
প্রকাশ:
১০ মে, ২০২৪, ১০:২৯ রাত
নিউজ ডেস্ক |
চোখ মানবদেহের কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং আবেগময় একটি অঙ্গ তা আমরা সবাই জানি। চোখ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ এটা সবারই জানা। কিন্তু আবেগময় বলাতে একটু খটকা লাগছে তো! সত্যি বলতে কি চোখটা একটু বন্ধ করে ভাবুনতো এই পৃথিবী আর দেখতে পারবেন না। আপনার চারপাশের প্রকৃতির এত রূপ, এত রঙের বিচিত্র খেলা কিংবা আপনার প্রিয় মানুষগুলোর সুন্দর মুখ দেখতে পারবেন না। ভাবুন তো একবার। দেখবেন দু’চোখ বেয়ে টপ টপ করে বারি ঝরছে। তাই চোখ সার্বিক দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। এজন্য ঋতু পরিবর্তনের এই সময়টাতে একটু সাবধান থেকে চোখের যত্নে সময় ব্যয় করুন। চোখের সুস্বাস্থ্যে এবং এর সংক্রমণ রোধে প্রতিদিন চোখের যত্ন নিন: প্রতিদিন আমরা বাইরে কাজে বের হই কিংবা ঘরে থাকলেও ধুলোবালি, সূর্যের আলো এবং পরিবেশের অন্যান্য বিষয়গুলো চোখের মধ্যে প্রবেশ করে। ফলে এগুলো দীর্ঘ সময় ধরে চোখের মধ্যে প্রবেশ করে আমাদের দৃষ্টিকে প্রভাবিত করে। এছাড়াও আমরা যারা অফিসিয়াল কাজে দীর্ঘক্ষণ বা কম সময়ের জন্যও কম্পিউটারের সামনে বসে থাকি তাদেরও প্রয়োজন নিয়মিত চোখের যত্ন। চোখের যত্নে কিছু মৌলিক নির্দেশনাবলী নিম্নে দেওয়া হলো: খেতে হবে সুষম খাদ্য: চোখের যত্নে সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন। এজন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় প্রচুর সবজি এবং ফলমূল রাখুন। সাধারণত ভিটামিন ‘এ’, ‘সি’ এবং ‘ই’ জাতীয় খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। গাজর, ব্রোকলি, মিষ্টি কুমড়া এবং এ ধরনের আরও সবজি খেতে পারেন। কারণ এই সবজিগুলোর মধ্যে অনেক বেশি ভিটামিন থাকে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে: চোখের যত্নে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। এজন্য আপনার প্রতিকূল অভ্যাস যেমন ধুমপান এবং মদের প্রতি আসক্তি কমান। কেননা ধুমপান আপনার চোখের রক্ত সঞ্চালনের ওপর বিরুপ প্রভাব সৃষ্টি করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘন ঘন ধুমপানে আপনার চোখের ছানি পড়ার মাত্রা বেড়ে যায় এবং ছানি থাকলে তা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এছাড়া চোখের ম্যাকুলার ডিজেনারেশন (macular degeneration) হলে অন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে এবং চোখের নার্ভেও বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যায়। অন্যদিকে মদ্যপ হলে আপনার চোখের মণিতে সমস্যা দেখা দেবে। এছাড়াও আপনার দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যাবে, আপনি কোন জিনিস ডাবল দেখতে পাবেন এবং আপনার বিভিন্ন রং বোঝার ক্ষমতা কমে যাবে। নিয়মিত চোখের পরীক্ষা: উপরোক্ত বিষয়গুলো মানলেও আপনাকে নিয়মিত চোখের ডাক্তারের কাছে চোখ ভালো আছে কি না তা পরীক্ষা করাতে হবে। মনে রাখবেন অনেক সময় বিষণ্ন লাগা কিংবা ঘন ঘন মাথা ব্যথা করা অথবা কাজে মনোযোগ না বসা এগুলো চোখের সমস্যার কারণে হতে পারে। আবার ডায়াবেটিস রোগীদের চোখের সমস্যা কিংবা বয়স বাড়ার ফলে চোখের যেসব রোগ হয় তা বেশিরভাগ সময় বাইরে থেকে বোঝা যায় না। তাই প্রয়োজন নিয়মিত চোখের ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে চোখে পরীক্ষা করা। চোখের ব্যায়াম: শুধু শারীরিক ব্যায়াম নয় নিয়মিত চোখের ব্যায়াম আপনাকে চোখের পেশি এবং চোখের বিভিন্ন সমস্যা থেকে আপনাকে মুক্তি দিতে পারে। চোখের ব্যায়ামটা বিশেষত তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যারা দীর্ঘক্ষণ কম্পউটারের সামনে বসে থাকেন। এজন্য কম্পউটারের সামনে বসে কাজের সময় নিজে থেকেই একটু ব্যায়াম করে নিন। এক্ষেত্রে চোখ বন্ধ করে আস্তে আস্তে খুলে দৃষ্টির চারপাশ ঘোরাতে থাকুন। এভাবে কয়েকবার চোখের ব্যায়াম করুন। এছাড়াও মাথা সোজা রেখে চোখের মণি ঘুরিয়ে ডানে এবং ওপরে করুন। এভাবে কয়েকবার করে চোখ বন্ধ করুন। এবার একবার বামে এবং নিচে চোখ ঘুরিয়ে আবার বন্ধ করুন। পরে চোখ মেলে এবার ঠিক উল্টোভাবে কয়েকবার ডানে ও নিচে এবং বামে ও উপরে করুন। এভাবে কম্পিউটারে কাজের ফাঁকে ফাঁকে চোখের ব্যায়াম করে নিন। পরিবারের অন্যদের চোখের ইতিহাস জানুন: পরিবারের কিংবা বংশগতভাবে কিছু চোখের সমস্যা আপনার থাকতে পারে। কিংবা আপনি পরবর্তীতে বংশগত কারণে চোখের সমস্যায় পড়তে পারেন। এজন্য বুদ্ধিমানের কাজ হবে যে, পরিবারের কারও কোন চোখের সমস্যা ছিল কিনা তা জেনে নিন এবং আগে থেকেই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে চলুন। চোখের প্রতিরক্ষায় চশমা ব্যবহার: চোখের প্রতিরক্ষায় আপনি চশমা, গগলস কিংবা সানগ্লাস ব্যবহার করতে পারেন। ফলে চোখের ভেতরে কম ধুলোবালি প্রবেশ করতে পারে এবং সূর্যের ক্ষতিকারক আল্ট্রাভায়োলেট রশ্নি ক্ষতি করতে পারবে না। এজন্য চোখের সুরক্ষায় আপনি এ ধরণের গ্লাস ব্যবহার করতে পারেন। পর্যাপ্ত বিশ্রাম: চোখ ভালো রাখতে প্রয়োজন চোখের পর্যাপ্ত বিশ্রাম। শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রতঙ্গের মতো চোখেরও বিশ্রাম প্রযোজন। তাহলে চোখের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং চোখের প্রেসার ও ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। তাই টিভি কিংবা কম্পিউটারের সামনে বসে অযথা সময় নষ্ট না করে চোখের বিশ্রাম দিন। মনে রাখবেন চোখের নিয়মিত যত্ন আপনাকে দীর্ঘদিন দেখার দৃষ্টিশক্তি দেবে। যারা এখনও চোখের প্রতি যত্নশীল নন তারা আজ থেকেই নিয়মিত চর্চা করুন এবং যারা চোখের প্রতি যত্নশীল ছিলেন তারা আরও একটু সতর্ক হোন। হাআমা/ |