জুমার দিনের কয়েকটি সুন্নত আমল
প্রকাশ: ০১ মার্চ, ২০২৪, ০৯:৫৫ সকাল
নিউজ ডেস্ক

সপ্তাহের অন্যান্য দিনগুলোর চেয়ে শুক্রবার অর্থাৎ জুমার দিনের গুরুত্ব অনেক বেশি। আর রমজান এদিনের গুরুত্বকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। এদিন নিয়ে রাসুল সা. বলেন, ‘সূর্য উদিত হওয়ার দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম।’


জুমার দিনের সুন্নত আমল-

শুক্রবার তথা জুমার দিনে বিশেষ কিছু আমল ও সুন্নত রয়েছে। বিভিন্ন হাদিসে সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণিত হয়েছে। হাদিসে বর্ণিত সুন্নতগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি হলো: গোসল করা, উত্তম পোশাক পরিধান করা, সুগন্ধি ব্যবহার করা ও মনোযোগের সঙ্গে জুমার খুতবা শোনা।

জুমার দিনের শ্রেষ্ঠ আমল হলো নামাজের প্রস্তুতি নিয়ে জুমার নামাজ আদায়ের জন্য আগে আগে মসজিদে চলে যাওয়া। জুমার খুতবা শোনার জন্য অপেক্ষা করা। মসজিদে বসে চুপচাপ জিকির করা। ইমামের খুতবা পাঠ শুরু হলে মনোযোগ দিয়ে তা শোনা।

জুমার সালাত আদায় করা ছাড়াও এদিনের বিশেষ কিছু সুন্নতি আমলের কথা একাধিক হাদিসের বর্ণনাকারী বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন।

দোয়া করা:

হজরত আবু লুবাবা ইবনু আবদুল মুনজির র হতে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন হলো সপ্তাহের দিনসমূহের নেতা এবং তা আল্লাহর কাছে বেশি সম্মানিত। এদিনটি আল্লাহর কাছে কোরবানির দিন ও ঈদুল ফিতরের দিনের চেয়ে বেশি সম্মানিত।’ তাই এদিনে সবার জন্য দোয়া করা উচিত। নিজের গুণাহ মাফের জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত।

দরুদ পাঠ:

হজরত শাদ্দাদ ইবনু আওস রা. বর্ণনা করেন, রাসুল সা. বলেন, ‘তোমাদের সর্বোত্তম দিন হলো জুমার দিন। এদিন আদম আ.-কে সৃষ্টি করা হয়েছে, এদিন শিঙায় ফুঁ দেয়া হবে এবং তাতে বিকট শব্দ হবে। অতএব তোমরা এদিন আমার ওপর অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ কর। তোমাদের দরুদ অবশ্যই আমার কাছে পেশ করা হয়।

এ কথা শুনে এক ব্যক্তি বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! কীভাবে আমাদের দরুদ আপনার কাছে পেশ করা হবে, অথচ আপনি তো অচিরেই মাটির সঙ্গে একাকার হয়ে যাবেন? তখন রাসুল সা. বলেন, ‘আল্লাহ নবীদের দেহ মাটির জন্য খাওয়া হারাম করেছেন।’ (ইবনে মাজাহ, ইবনে খুজাইমাহ, আবু দাউদ, মিশকাত)

ইমামের পাশে বসে খুতবাহ শোনা:

হজরত আবু হুরায়রা র হতে বর্ণিত, রাসুল সা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি উত্তমরূপে অজু করে জুমার নামাজে এসে ইমামের কাছাকাছি হয়ে বসল এবং নীরবে মনোযোগ সহকারে খুতবাহ শুনল, তার এক জুমা থেকে পরবর্তী জুমার মধ্যবর্তী সময়ের এবং আরও তিন দিনের গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। আর যে ব্যক্তি কংকর স্পর্শ করল, সে অনর্থক কাজ করল।’ (ইবনে মাজাহ, মুসলিম, তিরমিজি, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)

হেঁটে মসজিদে যাওয়া:

হজরত আওস ইবনু আওস আস-সাকাফি রা. বলেন, আমি নবী করিম সা.-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন (স্ত্রী সহবাসজনিত) গোসল করল এবং নিজে গোসল করল এবং সকাল সকাল হেঁটে মসজিদে গিয়ে ইমামের কাছাকাছি বসল, মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে খুতবাহ শুনল এবং অনর্থক কিছু করল না, তার জন্য প্রতি কদমে এক বছরের রোজা রাখা ও রাত জেগে নামাজ পড়ার সমান সওয়াব রয়েছে।’ (তিরমিজি, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ, আবু দাউদ, মুসনাদে আহমাদ)।
এ ছাড়াও জুমার দিনের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত আমল হলো:

নখ কাটা।

ফজরের নামাজে সুরা সাজদা ও সুরা ইনসান পড়া।

বেশি বেশি সুরা কাহফ পড়া।

মসজিদে প্রবেশ করেই দুই রাকাআত সুন্নাত নামাজ পড়া।

খতিবের দিকে মুখ করে বসা।
 
জুমার নামাজ সুরা আলা ও সুরা গাশিয়া দিয়ে আদায় করা।

জুমার নামাজ সম্পন্ন হলে ২/৪ রাকাত নফল নামাজ পড়া।

জুমার দিন বেশি বেশি দোয়া করা। বিশেষ করে আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়ে বেশি বেশি দোয়া করা।

এনএ/