‘তড়িঘড়ি তফসিল ঘোষণা না করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে’
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর, ২০২৩, ০৮:০৪ রাত
নিউজ ডেস্ক

নির্বাচনকালীন দলনিরপেক্ষ সরকারের ব্যবস্থা না করে তড়িঘড়ি জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে সমমনা ৬টি ইসলামী দল।

আজ (১৪ নভেম্বর) মঙ্গলবার বিকাল ৩টায় পল্টনস্থ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সমমনা ইসলামী দলসমূহের নেতৃবৃন্দ এ দাবী জানান। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন খেলাফত মজলিসের মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদেরের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহসভাপতি মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী, মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, বাংলাদেশে খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, নায়েবে আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা মাহবুবুল হক, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নাজমুল হাসান, খেলাফত মজলিসের যুগ্মমহাসচিব এডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, অ্যধাপক আবদুল জলিল, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্মমহাসচিব মুফতি শরাফত হোসাইন, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, খেলাফত আন্দোলনের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা সুলতান মহিউদ্দিন, মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী, নেজামে ইসলাম পার্টির প্রচার সম্পাদক মাওলানা আবদুল্লাহ আল মাসুদ, খেলাফত মজলিসের প্রচার ও তথ্য সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরু, যুব বিষয়ক সম্পাদক তাওহিদুল ইসলাম তুহিন, অধ্যাপক মাওলানা আজীজুল হক প্রমুখ।  

নেতৃবৃন্দ বলেন, রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া তড়িঘড়ি তফসিল ঘোষণা হবে জাতির সাথে তামাশার শামিল। এ তামাশা বন্ধ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। দেশে চলমান সংঘাত- সহিংসতার একমাত্র সমাধান হচ্ছে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন। কিন্তু সরকার জনগণের এ দাবীর তোয়াক্কা না করে একতরফা নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এতে পরিস্থিতি আরো অবনতি হবে। সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করছে। শক্তি প্রয়োগ করে, গ্রেফতার, নির্যাতন, জেল, জুলুমের মাধ্যমে বিরোধী কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দিতে চায়। এর মধ্য দিয়ে দেশকে অনাকাক্সিক্ষত অনিশ্চয়তার দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আলেম-ওলামাসহ সাধারণ মানুষও হয়রানীর শিকার হচ্ছে। সরকারকে জেল, জুলুম, হামলা, মামলার আর পেশিশক্তির খেলা বন্ধ করতে হবে। রাজনৈতিক দল ও জনগণের মতামতকে উপেক্ষা করে নির্বাচন কমিশন তড়িঘড়ি করে একতরফা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলে জাতি তা মেনে নিবে না। বৈঠকে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতার বন্ধ ও মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা মুনির হোসাইন কাসেমীসহ সকল আলেম-উলামা ও কারাবন্দী বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবী করা হয়। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের গণদাবী না মেনে তফসিল ঘোষণা করা হলে সমমনা দলসমূহের পক্ষ থেকে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।

উল্লেখ্য, এরআগে গত ৯ নভেম্বর ( বুধবার ) বৈঠকে বসে সমমনা ইসলামী দলসমূহ। বৈঠকে নেতৃবৃন্দ বলেন, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় এক অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকেই অগ্রসর হচ্ছে দেশ। জনগণ উদ্বিগ্ন। এমতাবস্থায় নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জতীয় নির্বাচনের জনদাবীকে উপেক্ষা ও অবজ্ঞা করে নির্বচনের তফসিল ঘোষণা করা হলে তাতে পরিস্থিতি আরো বিপদজনক হতে পারে।

সরকারকে এই মুহূর্তে এ রকম ঝুকি না নেওয়ার আহ্বন জানিয়ে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সংকট সমাধান না করে একতরফা নির্বাচনের আয়োজন করা হলে তা অদূর ভবিষ্যতে অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকবে। সরকারের উচিৎ আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টি করে একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। নেতৃবৃন্দ নির্বাচন কমিশনকে দেশের স্বার্থে তফসিল ঘোষণা না করার আহ্বান জানান।

এছাড়া নেতৃবৃন্দ কারাবন্দী মাওলানা মামুনুল হক, মাওলানা মুনির হোসাইন কাসেমী সহ সকল আলেম-উলামা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের দ্রুত মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

কেএল/