আলজাজিরার সাংবাদিকের পরিবারকে বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার হুমকি
প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর, ২০২৩, ০৬:৫৮ বিকাল
নিউজ ডেস্ক

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার সংবাদদাতা ইউমনা এল সাঈদের পরিবারকে বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

ফোন করে ওই সাংবাদিকের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউমনা এল সাঈদের স্বামী সোমবার তার মোবাইলে একটি কল পান। তাকে গাজা শহরের বাড়ি ছেড়ে দক্ষিণে চলে যেতে বলা হয়।

এল সাঈদ বলেন, একটি প্রাইভেট নম্বর থেকে ফোন আসে। অপরপ্রান্ত থেকে আমার স্বামীকে তার পুরো নাম ধরে সম্বোধন করেন এবং তাকে বলেন যে, তিনি ইসরায়েলি সেনাবাহিনী থেকে ফোন করেছেন। এ সময় তাকে ওই ব্যক্তি বলেন- আমরা আপনাকে দক্ষিণ থেকে সরে যেতে বলছি। কারণ আগামী ঘণ্টাগুলোতে আপনি যে এলাকায় আছেন সেখানে খুবই বিপজ্জনক কিছু ঘটতে যাচ্ছে।

এল সাঈদ আরো বলেন, বর্তমানে তারা যে ভবনটিতে বাস করেন তাতে প্রায় ১০০ সদস্যের সমন্বয়ে সাতটি পরিবার রয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র আমার পরিবারের সাথেই যোগাযোগ করা হয়। অন্য ছয়টি পরিবারের কেউই ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কাছ থেকে সতর্কতা কল পায়নি, যেমনটি আমরা পেয়েছি, তাই এটি আমাদের জন্য, আমাদের পরিবারের জন্য সরাসরি হুমকি ছিল।

তিনি বলেন, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি স্থল আক্রমণ শুরু করেছে। সেই সঙ্গে নির্বিচারে বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। মুহুর্মুহু বোমা হামলার মধ্যে পালিয়ে যাওয়া খুব ঝুঁকিপূর্ণ। সোমবার ইসরায়েলি ট্যাঙ্কগুলো গাজা শহরের উপকন্ঠে পৌঁছে গেছে এবং উপত্যকার উত্তরের সঙ্গে দক্ষিণে সংযোগকারী প্রধান সড়কটিও কেটে দিয়েছে।

“আমি জানি না আমাদের গাড়ি নিয়ে যাওয়া এবং এই ভারী বোমাবর্ষণের মধ্যে গাড়ি চালানো কতটা নিরাপদ হবে। এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, এটা মোটেও নিরাপদ বলে মনে হচ্ছে না,” যোগ করেন সাংবাদিক এল সাঈদ।

তিনি বলেন, গাজার দক্ষিণ অংশ ছেড়ে উত্তরে গেলে যে, বোমা হামলার শিকার হতে হবে না, এর কোনো নিশ্চয়তা নেই।

এদিকে, সাংবাদিক এল সাঈদের পরিবারের প্রতি ইসরায়েলি হুমকির নিন্দা জানিয়েছে আল জাজিরা।

বিবৃতিতে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, “এই জঘন্য হুমকিটি আল জাজিরা আরবি’র সাংবাদিক ওয়ায়েল আল-দাহদুহের পরিবারকে নির্বিচারে হত্যার কয়েকদিন পরই এসেছে, যাদের বোমা হামলার আগে দক্ষিণে সরে যেতে বলা হয়েছিল।

গত মঙ্গলবার ইসরায়েলি হামলায় দাহদুহের স্ত্রী আমনা (৪৪), ছেলে মাহমুদ (১৬), মেয়ে শাম (৭); এবং নাতি আদম নিহত হন।

এদিকে, গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অন্তত ২৯ সাংবাদিক ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৪ জন ফিলিস্তিনি, চারজন ইসরায়েলি এবং একজন লেবানিজ। কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে) একটি সমীক্ষায় এই তথ্য জানানো হয়েছে।

সূত্র: আল জাজিরাে

এনএ/