তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, বন্যা আতঙ্ক
প্রকাশ:
০৫ অক্টোবর, ২০২৩, ০১:৪৮ দুপুর
নিউজ ডেস্ক |
উজানের ঢলে উত্তরের জেলা গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। গেলো ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি ৮৭ সেন্টিমিটার বেড়েছে। যা বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার আজ বুধবার সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, 'লালমনিরহাটের তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে পানির লেভেল ৫২ দশমিক ১৫ মিটার অতিক্রম করে ৫২ দশমিক ৩০ মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।' বুধবার থেকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন তিস্তা নদীবেষ্টিত চর ও নিচু অঞ্চলের মানুষকে দ্রুত উঁচুস্থানে সরে যাওয়ার জন্য মাইকিং করছে। এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় মসজিদ থেকেও চলছে মাইকিং। এদিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের তালুক বেলকা, জিগাবাড়ি, পঞ্চানন্দ পলাশতলা, বেলকা নবাবগঞ্জ ও কিশামত সদর, হরিপুর ইউনিয়নের চর চরিতাবাড়ি, মাদারীপাড়া, পাড়াসাদুয়া, কানিচরিতা বাড়ি, রাঘব, কারেন্ট বাজার, কাপাসিয়া ইউনিয়নের বাদামেরচর, কাজিয়ারচর, পোড়ার চর, কেরানির চর, রাজার চর, মিন্টু মিয়ার চরসহ তারাপুর, চণ্ডীপুর ও কঞ্চিবাড়ি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নদীপাড়ের বাসিন্দারা জানান, পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। আকস্মিক পানি বৃদ্ধিতে বন্যার শঙ্কা রয়েছে। চলতি মৌসুমে কয়েক দফায় বন্যা হলেও তা বেশি সময় স্থায়ী ছিল না। মৌসুমের শেষ দিকে বন্যায় ব্যাপক ফসলহানি, বসতবাড়ি, গবাদি পশুর ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা। উপজেলার তালুক বেলকা গ্রামের জিয়াউর রহমান রয়েল সংবাদ মাধ্যমকে জানান, তিস্তায় আকস্মিকভাবে পানি বাড়ছে। এতে ফসলের অনেক ক্ষতি হবে। বিশেষ করে ধান আর সবজির বেশি ক্ষতি হবে। কাপাসিয়া ইউনিয়নের কাজিয়ার চরের বাসিন্দা আমিনুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, কাল রাত থেকে অনেক পানি বেড়েছে। পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নদীর ভাঙনও শুরু হয়। গত কয়েকদিনে অনেক আবাদি জমি নদীতে ভেঙে গেছে। ভাঙন এখনো অব্যাহত আছে। বন্য সম্পর্কে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক সংবাদ মাধ্যমকে জানান, উজানে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় তিস্তায় হু হু করে পানি বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৮৭ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। যা বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ বলেন, তিস্তাপাড়ের বাসিন্দাসহ অন্যদের সতর্ক থেকে জানমালসহ নিরাপদ আশ্রয়ের যেতে সন্ধ্যা থেকে মাইকিং করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন মসজিদেও মাইকিং চলছে। বর্তমানে সবাই নিরাপদ স্থানে সরে যাচ্ছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ভারতের সিকিমের একটি বাঁধ ভেঙে গেছে। ফলে প্রবল বেগে উজান থেকে বিপুল পরিমাণে পানি তিস্তা নদী দিয়ে দ্রুত নেমে আসছে। সম্ভাব্য বন্যার হাত থেকে তিস্তা নদীবেষ্টিত সাতটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দাদের সরিয়ে নিতে ২৭টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও জরুরি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এম আই/ |