|| আমিন আশরাফ ||
যাঁর নামে রহমাতুল্লাহি আলাইহি লিখতে হচ্ছে, তিনি এই তো কদিন আগেও এ পৃথিবীকে আলোকিত করে রেখেছিলেন। সর্বদা হাসি খুশি থাকা মানুষটার বিদায়ে আমরা খুবই মর্মাহত। পৃথিবীর চিরাচরিত নিয়মে মানুষের এ পৃথিবীতে আগমনের তারিখ কিছুটা জানা থাকলেও চলে যাবার তারিখটা একদমই কেউ আগেগ থেকে জানে না। কার কখন চলে যাবার এসে যায় কেউ-ই জানতে পারে না। তেমনি কিশোরগঞ্জের জামিয়া ইমদাদিয়ার মুহাদ্দিস মাওলানা লুৎফুর রহমান সাহেবও চলে গেলেন কালের নিয়ম ও গতি মেনে। কিন্তু তার চলে যাবার পন্থাটা ছিল খুবই রহস্যজন ও বেদনাদায়ক।
কিশোরগঞ্জের জামিয়া ইমদাদিয়ার গত চল্লিশ বছরের ইতিহাসে এমন কোনো মাদরাসার তালেবুল ইলম নেই যে, যিনি মাওলানা লুৎফুর রহমান রহ.-এর ছাত্র নন। খুব হাসিখুশি মানুষটার এত নির্মম বিদায় তাঁর ছাত্র, ভক্ত ও মুরিদানদের কেউই মেনে নিতে পারছেন না। হুজুর এতোটাই বিনয়ী ছিলেন যে, কেউ তাঁতে সালাম দিলে তিনি চোখে মুখে একটা চমৎকার হাসি ছড়িয়ে সেই সালামের জবাব দিতেন। দীর্ঘ দেহের অধিকারী মাওলানা লুৎফুর রহমান রহ. চেহারা ছিল অনেকটা মেহেদির রঙের মতোই। আর দাড়িতেও সব সময় মেহেদি ব্যবহার করতেন, ফলে তাঁর চেহারাটা সর্বদা আলো ঝলমলে মনে হতো।
তিনি সহজে রাগতেন না। কিন্তু কখনো রেগে গেলে কিছুক্ষণ পর আবার নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যেতেন। কিশোরগঞ্জ জেলায় যেসব আলেমে দীন মানুষের মাঝে ইলমে নববির আলোর দ্যুতি ছড়িয়েছেন; তার মধ্যে মাওলানা লুৎফুর রহমানও অন্যতম।
তিনি যখন ক্লাসে হাদিসের দরস দিতেন, তখন পরকালীন জীবনের হাদিস এলে; তিনি কান্না শুরু করে দিতেন। তাঁর মনে সর্বদা আল্লাহর ভয় দারুনভাবে কাজ করতো। তাঁর ইসলাহি বয়ানও ছিল খুবই মায়াবী ও হৃদয়গ্রাহী।
মাওলানা লুৎফুর রহমান রহ. কিশোরগঞ্জের কাচারী জামে মসজিদে ইমাম ও খতিবের দায়িত্বও পালন করেছেন। তিনি এ শহরের কারো সঙ্গে কোনো ধরনের দুর্ব্যবহার করেছেন, এমন ঘটনা কেউ বলতে পারবে না। একজন মুহাদ্দিসের এমন করুন বিদায় খুবই দুঃখজনক ও হৃদয়বিদারক। তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে তাঁর এক আত্মীয় মাওলানা মুখলিসুর রহমান কাসেমী বলেনÑ
হুজুরের পারিবারিক জীবন ছিল পরিপূর্ণ সুখের প্রতিচিত্র। স্ত্রী, দশ পুত্র, চার কন্যাসহ নাতি-নাতনিদের নিয়ে একটি বিশাল পরিবারে বসবাস করতেন তিনি। পারিবারিক বন্ধন ছিল মজবুত ও ভালোবাসায় সিক্ত। তাঁর তৃতীয় পুত্র মাওলানা শোয়াইব লুৎফুর রহমান (সৌদি প্রবাসী) বোন জামাই হওয়ায় তিনি আমাদের আত্মীয়তার সম্পর্কে তালই হন।
দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতা তাঁকে নিঃশেষ করে দিচ্ছিল। বিশেষত, জিনের আছরের কারণে হয়তো তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। যা জামিয়া ইমদাদিয়া কিশোরগঞ্জের আকাবির আসাতিজায়ে কেরামসহ তাঁর পরিবারের সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলেই অবগত আছেন। দুই বছর আগেও তিনি এক রহস্যজনক হামলার শিকার হয়ে বাসার ছাদে ছুরিকাঘাত হয়েছিলেন। তখনও তিনি নির্দিষ্ট কোনো মন্তব্য করতে পারেননি। ঘটনাটি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির ফলে তাঁর একজন পুত্রকে অভিযুক্ত করে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু সুস্থ হওয়ার পর হুজুর নিজেই ছেলেকে মুক্ত করে নিয়ে আসেন।
মাওলানা লুৎফুর রহমান ইন্তেকালের দুই-তিন বছর আগে থেকে হুজুর বারবার হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। হুজুরের বৃদ্ধা স্ত্রী ও সন্তানেরা পালাক্রমে দিনরাত হাসপাতালে নির্ঘুম রাত কাটিয়ে তাঁর সেবা-শুশ্রুষা করে গেছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর মানসিক অসুস্থতার আরও বেশি অবনতি হয়। মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহ আগে তিনি আতঙ্কগ্রস্ত থাকতেন, বারবার বলতেন— ‘আমাকে কে যেন ছুরি নিয়ে তাড়া করছে! আমি ভয় পাচ্ছি! পরিবারের সদস্যরা ভেবেছিলেন, এটি হয়তো পুরন আঘাতের স্মৃতিচারণ মাত্র। ১৯ মার্চ ২০২৫, দুপুরে মাওলানা লুৎফুর রহমান রহ. শোলাকিয়ায় তাঁর ছেলের ভাড়া বাসায় অবস্থান করছিলেন। এটি শোলাকিয়া মাঠের মিম্বরের ডানপাশে অবস্থিত এবং পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। ঘটনার দিন, বাসায় শুধুমাত্র হুজুর ও তাঁর আবেদা, সালেহা বৃদ্ধা স্ত্রীও ছিলেন, যিনি তাঁর সাথে প্রায় ৫০ বছর যাবত সংসার করছিলেন। বাসায় বাইরে থেকে কেউ প্রবেশ করলে, তা সিসি ক্যামেরার নজরদারি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। হুজুর বাথরুমে ইস্তিঞ্জা সারতে যান। অনেকক্ষণ পর ভেতর থেকে গোঙানির শব্দ শুনে হুজুরের সহধর্মিনী দ্রুত সেখানে ছুটে যান এবং দেখেন—হুজুর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন, পাশে একটি ছুরি! তিনি সঙ্গে সঙ্গে আত্মীয়দের ফোন করেন। এরপর আমাদের ভাই মাওলানা মুতাসিম বিল্লাহ মুক্তাকি ও বোন জামাই জামিয়ার শিক্ষক মাওলানা রুহুল আমিন বাসায় এসে হুজুরকে হাসপাতালে নিয়ে যান। আমি ব্যক্তিগতভাবে শুরুর দিক থেকেই হাসপাতালে ছিলাম। হুজুরের সন্তানদের মধ্যে একমাত্র মুশাহিদ পুরোটা সময় হাসপাতালে ছিল। পুলিশ যখন মরদেহ থেকে আঘাতের চিহ্ন শনাক্ত করছিলো, তখন মাওলানা শাকের, মাওলানা জুনায়েদ আবদুর রউফ ও আমিসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ ও ডাক্তার কর্তৃক গলায় আঘাতের চিহ্ন ছাড়া শরীরের অন্যকোথাও আঘাত শনাক্ত করা যায় নি। জামিয়া ইমদাদিয়ার শিক্ষক ও পরিবারের ইচ্ছা না থাকলেও মানুষের সমালোচনা এড়াতে পোস্টমর্টেম করানো হয়।
এটি মূলত একটি রহস্যময় মৃত্যু। হয়তো হযরত জিনদের আক্রমণের শিকার হয়েছেন অথবা তিনি মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে নিজেই আত্মঘাতি হয়েছেন—এর সঠিক তথ্য ও সত্যতা একমাত্র আল্লাহই জানেন। বাস্তবতা আমাদের দৃষ্টির বাইরে, কিন্তু আল্লাহর জ্ঞানে পরিপূর্ণ।’
মাওলানা মুখলেসুর রহমান কাসেমীর কথায় পুরো বিষয়টা ক্লিয়ার হচ্ছে না। ঘটনা যাই হোক হুজুরের মৃত্যুর প্রকৃত সত্য উদঘাটিত হওয়া খুবই প্রয়োজন। আইন শাস্ত্রে জিন ও মানসিক সমস্যা বললে এটার প্রকৃত রহস্য আড়ালেই থেকে যাবে। ঘটনা যাই ঘটুক সেটা তাঁর ছাত্র ও শিক্ষকদের সামনে আসা উচিত। প্রকৃত সত্য একমাত্র আল্লাহই জানেন। এখন আপনাদের কাছে সামনে কে এই মাওলানা লুৎফুর রহমান? সে সম্পর্কে তাঁর সংক্ষিপ্ত জীবন ও কর্ম তুলে ধরছি।
জন্ম : মাওলানা লুৎফুর রহমান রহ. ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানাধীন মাঝের কান্দা গ্রামে ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে এক আকন্দ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর সম্মানিত বাবার নাম হাসান আলী।
তাঁর শিক্ষাজীবন : তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় নিজ গাঁয়ের এক স্কুলে। সেখানে দ্বিতীয় শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর তাঁর দাদা আবদুল্লাহর একান্ত আগ্রহ ও প্রচেষ্টায় তিনি ভর্তি হন ময়মনসিংহের ফুলপুরের ঐতিহ্যবাহী আশরাফুল উলুম বালিয়া মাদরাসার মক্তবে।
প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত তিনি সেমাদরাসায় অত্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে পড়াশোনা করেন। তাঁর মেধা ও চারিত্রিক গুণাবলির কারণে তিনি তাঁর উস্তাদদের স্নেহভাজন হয়ে উঠেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যখন বালিয়া মাদরাসার শাইখুল হাদিস মাওলানা ইমদাদুল হক রহ. বারুইগ্রাম মাদরাসায় চলে আসেন, তখন তাঁকেও সঙ্গে নিয়ে আসেন। বারুইগ্রাম মাদরাসায় দীর্ঘ ৬ বছর পর্যন্ত লেখাপড়া করার পর বেফাকুল মাদারিসিল কওমিয়া (বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড)-এর অধীনে তাকমীল পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। সেখানে তাঁর হাদিসের উস্তাদ ছিলেন আল্লামা আমিনুল হক মাহমুদি, আল্লামা এহসানুল হক সাহেব সন্ধীপী ও মাওলানা আমির উদ্দিন সাহেব প্রমুখ।
জেনারেল শিক্ষা : তিনি যখন মাদরাসা শিক্ষা ধারার উচ্চ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত তখন জেনারেল শিক্ষার প্রতি তাঁর আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ায় তিনি নান্দাইল রোড হাইস্কুলে মানবিক শাখায় ভর্তি হন এবং দুই বছর সেখানে লেখাপড়া করে এসএসসি, পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে পাশ করেন। অতঃপর তাঁর অনিচ্ছাসত্ত্বেও বারুইগ্রাম মাদরাসার সেক্রেটারী আবদুল হাই সাহেব এবং তাঁর উস্তাদবৃন্দের জোর তাগিদে তিনি ভর্তি হন নান্দাইল কলেজে। সেখানে এক বছর লেখাপড়া করার পর মাদরাসা লাইনে আরো উচ্চ শিক্ষা লাভ করার জন্য তিনি চলে যান চট্টগ্রাম হাটহাজারী মাদরাসায়। সেখানে এক বছর উচ্চতর লেখাপড়া করার পর উস্তাদগণ তাকে বারুইগ্রাম মাদরাসায় শিক্ষকতার আদেশ করেন।
আরো লেখাপড়ার করার একান্ত আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও উস্তাদবৃন্দের আদেশে তাঁকে শিক্ষকতা গ্রহণ করতে হয়।
কর্মজীবন : ১৯৮০ সালে বারুইগ্রাম মাদরাসায় শিক্ষকতায় যোগদান করেন। সেখানে দু’বছর অধ্যাপনার পর ঐতিহাসিক দ্বীনী প্রতিষ্ঠান আল-জামিয়াতুল ইমদাদিয়া কিশোরগঞ্জের পক্ষ থেকে এ প্রতিষ্ঠানে যোগদান করার প্রস্তাব পান।
১৯৮৩ সনের ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি জামিয়া ইমদাদিয়ায় সিনিয়র শিক্ষক পদে যোগদান করেন। বারুইগ্রাম মাদরাসা থেকে সেখানে পুনরায় যোগদানের জন্য পীড়াপীড়ি সত্ত্বেও তিনি সেখানে না গিয়ে অত্র প্রতিষ্ঠানেই রয়ে যান। তখন থেকে অদ্যাবধি তিনি এ প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন অত্যন্ত সুনামের সাথে। বিগত ১/৭/২০০৩ সালে তিনি সিনিয়র শিক্ষক পদ থেকে মুহাদ্দিস পদে উন্নীত হন। অধ্যাপনার পাশাপাশি তিনি আরো একাধিক গুরু দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। যেমন দাওয়াতুল হক, দাওয়াতুল কুরআন ও তানজিমুল মাদারিস ইত্যাদি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থেকে অত্যন্ত নিপুণতার সঙ্গে অর্পিত দায়িত্বগুলো পালন করে যাচ্ছেন। সেই সঙ্গে কিশোরগঞ্জ শহরের পুরনো কাচারী মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব হিসাবে ধর্মীয় দায়িত্ব পালন ও নানাবিধ সামাজিক দায়িত্বও পালন করছেন অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে। একই সঙ্গে লতিফপুর মাদরাসার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এর সঙ্গে জড়িত থেকে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
আধ্যাত্মিক সাধনা : শিক্ষকতার পাশাপাশি আধ্যাত্মিক সাধনায় ব্রতী হয়েও তিনি করাচীর বিশিষ্ট বুযুর্গ আরিফ বিল্লাহ হযরত হাকিম আখতার শাহ সাহেবের হাতে বয়াত হন। দীর্ঘ সাধনার পর তিনি তাঁর থেকে খেলাফত লাভ করেন।
বিদেশ সফর : ১৯৮৯ সালে এক শিক্ষা সফরে তিনি ভারত সফর করেন। সে সফরে দেওবন্দে কিছু দিন অবস্থান করে সেখানকার হাদিস বিশারদদের নিকট থেকে হাদিসের উচ্চতর সনদ গ্রহণ করেন। এ ছাড়াও তিনি পাকিস্তান ও সৌদি আরব সফর করেছেন। সৌদি সফরে তিনি পবিত্র হজও পালন করেন।
শাহাদাত বরণ :
মাওলানা লুৎফুর রহমান রহ. কে ২০২২ সালের ১১ জুলাই সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মারিয়া ইউনিয়নের বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় নিজের বাসার ছাদে কে বা কারা তাকে ছুরিকাঘাত করে।
গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর তাঁর অবস্থার উন্নতি হলে তিনি বাসায় ফিরে আসেন।
সে সময় তাঁর দুবৃত্তের হাতে আহত হওয়ার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশে অনেক গুণীজনরা তার ওপর হামলার নিন্দা জানান। বিশেষ করে সে সময় নিন্দা জানিয়েছিলেন, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের আমির ও চরমোনাই পীর মাওলানা মাওলানা রেজাউল করিম সাহেবসহ আরও অনেক আলেম, সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ।
এরপর ২০২৫ সালের মার্চ মাসের ১৯ তারিখে মাওলানা লুৎফুর রহমান শোলাকিয়াতে তাঁর ছেলের ভাড়া বাসায় অবস্থান করার সময় ওয়াশরুমে যাবার পর তাঁর চিৎকার শুনে তাঁর স্ত্রী ওয়াশরুমে তাঁকে গলা কাটা অবস্থায় দেখতে পান। তাঁর পরিবার বলছে, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন বেশ কিছুদিন যাবত। তারপর তিনি ফল কাটার ছুরি দিয়ে তিনি নিজের গলা নিজেই কেটে ফেলেন। কিন্তু প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন যে, তাঁর গলা এমনভাবে কাটা হয়েছে যে, যা দেখে একজন ব্যক্তি নিজের গলা এমনভাবে কাটা সম্ভব নয়। এছাড়াও একজন এভাবে আত্মহত্যা করতে পারে তা কারো কাছেই বিশ্বাসযোগ্য নয়। কিশোরগঞ্জবাসীর প্রাণের দাবি যে, মাওলানা লুৎফুর রহমান হুজুরের রহস্যজনক মৃত্যর সঠিক তদন্ত হোক।
মোটকথা, করাচীর হযরত মাওলানা হাকিম আখতার শাহ রহ.-এর খলিফার এমন অপমৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছেন না। তাঁর দুঃখজনক ও হৃদয়বিদারক করুন মৃত্যুতে কিশোরগঞ্জের আলেমপ্রিয় জনতা শোকাহত ও মর্মাহত। একজন আলেমের মৃত্যু মানে একটা জগতের মৃত্যু। তাঁর মৃত্যুতে একটি মহান নক্ষত্র যেন আছড়ে পড়লো এ নশ্বর পৃথিবীতে। মহান আল্লাহ তাঁকে জান্নাতের সুউচ্চ মাকাম দান করুন। তাঁর মৃত্যুর ঘনীভূত রহস্য যেন সবার সামনে খুব তাড়াতাড়িই উন্মোচন হোক, মহান আল্লাহর দরবারে সে দুআই করি। রাহিমাল্লাহু রাহমাতান ওয়াসিআতান। আমীন।
তথ্যসূত্র : আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার ইতিহাস ঐতিহ্য ও অবদান
হাআমা/