|| হাসান আল মাহমুদ ||
ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ পবিত্র স্থাপনা কাবা শরিফের আদলে নির্মিত কালো গিলাফে আচ্ছাদিত করা একটি ‘প্রতীকী কাবা ঘর’ এর চারপাশে ইহরামের পোষাক পরা কয়েকজন পুরুষ ও বোরকা পরা কয়েকজন নারীকে তাওয়াফ করতে দেখা গেছে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউবসহ ইন্টারনেটের নানা সাইটে প্রকাশ করা একটি ভিডিওতে।
ভিডিওটি ফেসবুক ব্যবহারকারীদের নানা আইডিতে পোস্ট করে লেখা হয়েছে- ‘১৬ ই ডিসেম্বর ২০২৩ বিজয় দিবসের একটি চমৎকার প্রদর্শনী’।
MQM Saifullah Meharuzzaman নামের এক ফেসবুক ব্যবহারকারী এই ভিডিওর একটি পিকচারের শর্ট নিয়ে পোস্টে লিখেন, ‘কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে আমার জীবনে দেখা মতে সর্বপ্রথম একটি ব্যতিক্রমধর্মীয় অনুষ্ঠান। কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা একটি প্রতীকী কাবার তাওয়াফে অংশগ্রহণ করে। এই বিষয়টা ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে কেমন বা ফিকহে ইসলামীতে এ বিষয়ে কী ফতোয়া লেখা আছে? আসলে আমার তেমন কোন ধারনা নেই। এ সম্পর্কে যাদের পরিপূর্ণ আইডিয়া আছে বা জানাশোনা আছে, দয়া করে কমেন্টে জানালে আমরাও উপকৃত হতে পারব।’
এ পোস্টের কমেন্ট বক্সে পক্ষে-বিপক্ষে নানা কমেন্ট লক্ষ করা গেছে।
Aktar Hossain নামের একজন কমেন্ট লিখেন, ‘হজ্ব একটি ইসলামি রেওয়াজ। এটি মানুষের সামনে উপস্থাপনের উদ্দেশ্য প্রদর্শন করলে খারাপ কিছু হতে পারে বলে মনে করি না। তবে আল্লাহ সর্বোত্তম জ্ঞানী।’
Abed Chowdhury নামের একজন কমেন্ট লিখেন, ‘তারা আবেগ ও সম্মান নিয়ে এ আয়োজন করেছে ঠিক। তবে প্রশিক্ষণ কিংবা প্রদর্শনীর জন্য এভাবে মডেল তৈরি করা শরিয়তে অপছন্দনীয়। এতে করে অনেক ফেতনার আশঙ্কা থাকে ৷
Md Jahedul Islam নামের একজন কমেন্ট লিখেন, ‘আমার মনে হয় এটা নাজায়েজ, কারণ আমরা বলে থাকি মাইজভান্ডারের জিয়া তাঁদের ভাষায় জিয়া বাবা-র কবরকে না-কি তাওয়াফ করে সেজন্য হজ্জের মতো বড় ইবাদত তাঁদের কপালে জুটে না।’
এছাড়া, দেশের কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রদর্শনীতেও দেখা গেছে প্রতীকী কাবা ঘর বানিয়ে তাওয়াফ প্রদর্শন করতে। দেশের একজন ইসলামি বক্তা ও উদ্যোক্তা নিজের ফেসবুক আউডিতে ‘প্রতীকী কাবা ঘরের তাওয়াফ প্রদর্শনী’ ভিডিও পোস্ট করে লিখেন, ‘পবিত্র ওমরাহ হজ্বের প্রদর্শনীর চুম্বকাংশ। মুহিউসসুন্নাহ কমপ্লেক্স আলীপুর [কুয়াকাটা], স্কুল ও মাদরাসার উদ্যোগে, হাফেজ ছাত্রদের দস্তরবন্দী উপলক্ষ্যে ৩দিন ব্যাপী বার্ষিক তাফসিরুল কুরআন মাহফিল। শেষ দিনে কমপ্লেক্সের শিক্ষার্থীদের পবিত্র ওমরাহ হজ্ব নিয়ে ৩৬মিনিটের দীর্ঘ একটি প্রদর্শনী মঞ্চস্থ হয়। মাসআলা-মাসাঈল, নিয়মকানূন ও আবেগমিশ্রিত একটি প্রদর্শনিতে উপস্থিত শ্রোতাদের মাঝেও মুগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ে আলহামদুলিল্লাহ! এমন প্রদর্শনী হয়তো সচরাচর দেখা যায় না। তবে দুঃখজনক হলো— মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিওতে সাউন্ড কোয়ালিটি অস্পষ্ট হওয়ায় স্রেফ চুম্বকাংশ শেয়ার করা হলো।’
পোস্ট করা এ ভিডিওতে দেখা গেছে- কয়েকজন মাদরাসা শিক্ষার্থী ইহরামের পোষাক পরে ছোট একটি প্রতীকী কাবা ঘরের চারপাশে লাব্বাঈক আল্লাহুম্মা লাব্বাঈক বলে তাওয়াফ করছে। তাওয়াফ শেষে তারা মাইক হাতে নিয়ে ‘মনে বড় আশা ছিল যাবো মদিনায়’ সমস্বরে গজলের সুর তুলেছে। এ সময় মঞ্চে অন্যান্য আলেমদের উপস্থিতি দেখা গেছে।
ইসলামের স্পর্শকাতর পবিত্র স্থাপনা কাবা ঘরের আদলে কোনো ঘর বানিয়ে তার তাওয়াফ প্রদর্শনী করা শরিয়তে আদৌ জায়েযে আছে কি না এ বিষয়ে দেশের বিজ্ঞ মুফতিগণ মতামত দেন আওয়ার ইসলামকে।
ঢাকার রামপুরা আফতাবনগর আল-জামিয়াতুল ইলামিয়া ইদারাতুল উলুম মাদরাসার মুহতামিম ও জাতীয় দ্বীনী শিক্ষাবোর্ডের মহাসচিব মুফতি মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘এ মাসয়ালা এখনো গভীরভাবে দেখা হয় নাই। তবে স্বাভাবিক জ্ঞানে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, এ ধরণের প্রতীকী কাবাঘর তৈরী করে তাওয়াফ করা উচিত না। কারণ, এতে এখানে কাবাঘরের রূপ-প্রতীক তৈরী করে তাওয়াফ করলে পরে কাবাঘরে গেলে আবেগ কাজ করবে না। তখন কাবা ঘরের আজমত-সম্মান তার কাছে বাঁধাগ্রস্ত হতে পারে। এজন্য, এসব প্রতীকী কাবা ঘর বানিয়ে তাওয়াফ প্রদর্শন না করা উচিত।
তিনি বলেন, ‘এতো শতো বছর তো এরকম প্রতীকী তাওয়াফ না করেই তো এতো বছর মানুষ তাওয়াফ করে আসছে। সবাইতো বুঝেছে। এতে প্রতীক তৈরী করে এভাবে প্রশিক্ষণ দেয়ার প্রয়োজন মনে করছি না।’
ঢাকার চকবাজারে অবস্থিত জামিয়া হুসাইনিয়া আশরাফুল উলুম বড়কাটারা মাদরাসার প্রধান মুফতি ও মুহাদ্দিস মুফতি আনিছুর রহমান বলেন, ‘যদি ট্রেনিংয়ের জন্য হয়, কাউকে শেখানোর জন্য হয়, তাহলে এমন প্রতীকী কাবা ঘরের তাওয়াফ করা যায় বলে আমরা মনে করি।’
তিনি বলেন, ‘কাবা ঘরতো কোনো প্রাণী না। কাবা ঘরে গিয়ে মানুষ তাওয়াফ কিভাবে করবে তার পদ্ধতি যদি মানুষ আগ থেকেই জেনে ওখানে যায়, তাহলে তার জন্য বিষয়টা সহজ হয়ে যায়। এতে মানুষ শিখলো, জানলো। কিভাবে তাওয়াফটা করতে হবে। কিভাবে শুরু করবে, শেষ করবে।’
এদিকে জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ মাদরাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি আব্দুস সালাম ‘প্রতীকী কাবা ঘর বানিয়ে তাওয়াফ প্রদর্শন সম্পূর্ণ বিদআত, হারাম ও নাজায়েয’ বলে আখ্যায়িত করেন।’
তিনি বলেন, ‘এভাবে প্রতীকী কাজের গুরুত্ব বাড়লে মূল কাজের গুরুত্ব কমে যায়। কুরআনুল কারিমের সূরা হজের ৩২নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, যে আল্লাহর নিদর্শনসমূহকে সম্মান করে, নিঃসন্দেহে তা অন্তরের তাকওয়া থেকেই। উল্লেখিত এই কাজটি আয়াতের তাকওয়ার বিপরীত হয়ে যায়।’
তিনি বলেন, ‘শিক্ষা প্রদর্শনের জন্য হলেও তা করা জায়েয হবে না।’
এসময় তিনি কয়েকটি যুক্তি তুলে ধরেন-
১. ইমাম মালেক রহ. এর যামানায় বাদশাহ হারুনুর রশীদ চাইলেন হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফের তৈরী করা কাবা ভেঙ্গে কাবাকে তার আগের রূপে ইব্রাহীমি বুনিয়াদে ফিরিয়ে আনতে। এ ব্যাপারে বাদশাহ ইমাম মালেকের কাছে অনুমতি চাইলে তার অনুমতি দেননি। কারণ হলো, তাঁকে যদি অনুমতি দেয়া হয়, তাহলে যে বাদশাহই পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসবে, সেই চাইবে তার মন মতো করে কাবা ঘর নির্মাণ করতে চাইবে। তখন কাবা শরীফ খেলনার বস্তু হয়ে যাবে। কাবাকে খেলনা বানানো যাবে না।
২. আরাফার ময়দানে যদি কেউ যেতে না পারে, তাহলে খোলা মাঠে একত্রিত হয়ে আরাফার আমল করা যাবে কি বিষয়ে আরাফা ফুকাহায়ায়ে কেরামের ফতোয়া হলো- ‘আরাফার বদলে অন্য কোথাও তার সাদৃশ্য অবলম্বন করে আরাফার ইবাদত বন্দেগী করা যাবে না’। এ থেকে অনুমান করা যায়- কাবা ঘরের তাওয়াফ শিখানোর জন্যও হোক তার সাদৃশ্য অলম্বন করে প্রতীকী তাওয়াফ করা জায়েয হবে না।
৩. বুখারী সানীতে আছে- জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ এর হাদিস কাবা ইয়ামানিয়্যাহ যাকে ইউসুফু হাযিহিল উম্মাহ বলা হয়। তাঁর বর্ণিত হাদিসে আছে, ইয়ামান দেশে মক্কার আদলে একটা কাবা তৈরী করা হলো, তাদের কথা ছিল মক্কার কাবার সাদৃশ্য করে কাবা বানিয়ে দিলে এখানেই তাওয়াফ করা যায়। আল্লাহর ঘরইতো। আল্লাহর জন্যইতো করব, আমাদের জন্য তো আর করব না। তারা একটা কাবা বানালো, যাকে কাবায়ে ইয়ামানিয়্যাহ বলা হয়। আমাদের নবী সা. তাকে বললেন যে, ‘আলা তুরিহিনী মিন ইয়ামানি কাবা- যেটাকে তারা কাবা বলছে সেটা থেকে তুমি আমাকে মুক্তি দিবে না!’ তখন জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ সঙ্গে সঙ্গে এটাকে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করে দিলেন। আর দূত পাঠিয়ে রাসূল সা. এর কাছে সংবাদ পাঠালেন যে, আপনি যেটা থেকে নিস্কৃতি চেয়েছেন, সে রাহাতের ব্যবস্থা করেছি।
গবেষক এই আলেম বলেন, ‘এসমস্ত নুসুস থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, কাবার সাদৃশ্য কোনো কিছু তৈরী করে সেটা শিক্ষণীয় উদ্দেশ্যই হোক বা অন্যকিছুর জন্য হোক করা যাবে না। এতে করে কাবার আজমত কমে যাবে।’
উল্লেখ্য, ২২ জুন, ২০১৯ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পবিত্র কাবা শরিফের আদলে পাঁচ শতাধিক হজযাত্রীকে কাবা শরিফ ও মাকামে ইব্রাহিম প্রতীকী তৈরি করে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে এক ধরনের অসন্তোষ দেখা দেয়। এসময় আওয়ার ইসলামে ‘নারায়ণগঞ্জে হজ আদায় সহজ করতে প্রতীকী কাবা বানিয়ে প্রশিক্ষণ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে।
পর দিন ২৩ জুন, ২০১৯ আওযার ইসলাম প্রতীকী কাবা তৈরি নিয়ে আলেমদের বক্তব্য তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
আওয়ার ইসলামের সে সময়ের বার্তা সম্পাদক আব্দুল্লাহ তামিম-এর নেওয়া প্রতিবেদনটিতে কাবা শরিফের আদলে স্থাপনা বানানো নিয়ে রাজধানীর বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্স সেন্টারের মহাপরিচালক আল্লামা মুফতি আরশাদ রহমানী আওয়ার ইসলামকে জানিয়েছেন, ‘প্রতীকী কাবা তৈরি ও প্রশিক্ষণ প্রদান স্পষ্ট হারাম। কাবা শরিফ পৃথিবীতে একটাই। এমন করে প্রতীকী কাবা তৈরি করে প্রশিক্ষণ দেয়া হারাম তথা নিষিদ্ধ।’
রাজধানীর শাইখ যাকারিয়া রহ. রিসার্স সেন্টারের পরিচালক ও দেশের অন্যতম বিজ্ঞ আলেম মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ জানিয়েছন, ‘পৃথিবীতে পবিত্র কাবা একটাই। যে উদ্দেশ্যেই হোক না কেন, পবিত্র কাবার প্রতীকী বানানো বৈধ নয়। এমন ঘটনাকে পবিত্র কাবা শরিফ নিয়ে একধরণের উপহাস করা হয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘কাবা ঘরের একটি সম্মান রয়েছে। আমরা সেই ঘরের প্রতীকী বানালে কাবা শরিফের প্রতি মানুষের সম্মান কমে যাওয়ার আশঙ্খা রয়েছে। আমাদের দেশে কতিপয় বেদাতিরা প্রতীকী কাবা বানিয়ে তাওয়াফ করে থাকে এবং তারা বলে এভাবে তাদের হজ আদায় হয়ে যাবে। সেদিকে লক্ষ্য করলেও প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে প্রতীকী কাবা বানানো ফেতনার সৃষ্টি করতে পারে। এ কারণে তা জায়েজ নেই।’
তবে, সেসময় হজ প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে প্রতীকী কাবা বানানোয় কোনো সমস্যা নেই বলে জানালেন ঢাকা মানিকনগর মাদরাসার শাইখুল হাদিস, জামিয়া শায়েখ জাকারিয়া কাঁচকুড়া উত্তরখান উত্তরার ইফতা বিভাগের প্রধান মুফতি মোহাম্মদুল্লাহ সাদেকী।
ফেতনার আশংকা না থাকলে শেখার জন্য প্রতীকী কাবাসহ অন্যান্য বিষয়গুলো দেখিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া যেতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এর পক্ষে ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘হজের বিধি-বিধান মানুষের বুঝতে একটু কষ্ট হয়। আর এ বিধান অনেকে জীবনে একবারই পালন করার সুযোগ পান। তাই এ বিধান ভালো করে আত্বস্ত করতে এমন কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করা যায়। তবে ‘হ্যাঁ’. এক্ষেত্রে ফেতনার অশংকা থাকলে, সেটা ভিন্ন বিষয়।
আওয়ার ইসলামের এ সংবাদ ও প্রতিবেদন প্রকাশের পর ২৫ জুন, ২০১৯ মঙ্গলবার ‘কাবা শরিফ’ ও ‘মাকামে ইব্রাহিম তৈরি করে হজের প্রশিক্ষণ দেওয়া বন্ধ করতে আয়োজক ‘মারুফ শারমিন স্মৃতি সংস্থা’নামের প্রতিষ্ঠানকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সানোয়ার হোসেন সমাজদার, জুয়েল শিকদার, নজরুল ইসলাম, রবিউল হাসান তুষার, মেহেদী হাসান, মোহাম্মদ উল্লাহ ও মোকাদ্দেস আহমেদ আইনি নোটিশ পাঠান। নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তারা প্রতিষ্ঠান থেকে এগুলো ভেঙে না ফেললে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নোটিশ করা হয়।
এনএ/