শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা নেতানিয়াহুকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ইসরায়েলি নাগরিক গ্রেপ্তার 'উলামায়ে কেরামদের বাদ দিয়ে দেশের উন্নয়ন অসম্ভব'   নিউইয়র্কে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে প্রধান উপদেষ্টার গাজাজুড়ে ইসরায়েলের নৃশংস হামলা, নারী-শিশুসহ নিহত ২৮ ফিলিস্তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার রাজনীতি বন্ধের সিদ্ধান্ত 'ঢাবি ও জাবির হত্যাকাণ্ডে জড়িত খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে' ঢাবিতে যুবক হত্যায় ছাত্রলীগ নেতাসহ ৩ জন আটক কওমী মাদরাসার ছাত্রদেরকে বিসিএস এ অংশগ্রহণের সুযোগ না দেওয়া বৈষম্য: মুফতী ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই  সাগর-রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে ঢাকায় সাংবাদিকদের বিক্ষোভ সমাবেশ

৭০ বছর ধরে কোরআনের শিক্ষক ছিলেন যে নারী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: নিকট-অতীতে মুসলিম বিশ্বের যেসব নারী কোরআনের সেবায় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, শায়খা তানাজুর মুহাম্মদ মোস্তফা নাজুলি (রহ.) তাঁদের একজন। তিনি মিসরের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নারী হাফেজ ও কারি। প্রায় ৭০ বছর তিনি কোরআনের পাঠদান করেন।

দেশ-বিদেশের অসংখ্য শিক্ষার্থী তার কাছ থেকে কোরআনের পাঠ গ্রহণ করে। তিনি পবিত্র কোরআনের ১০ কেরাতে (কোরআন পাঠের পদ্ধতি) তিনি পারদর্শী ছিলেন।

মিসরের গারবিয়া প্রদেশের জন্য শায়খা তানাজুর (রহ.) ছিলেন একজন গুরুত্বপূর্ণ কোরআনের শিক্ষিকা। তিনি তিনজন শিক্ষকের কাছে শাতেবি পদ্ধতিতে কোরআনের সাত কেরাতের পাঠগ্রহণ করেন এবং দীর্ঘকাল কোরআনের পাঠদান করেন। তাঁর কাছ থেকে বহু ইমাম, আলেম, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, চিকিৎসক ও প্রকৌশলী তথা সর্বশ্রেণির মানুষ কোরআন শেখেন।

শায়খা তানাজুর (রহ.) ১৯২৪ সালে মিসরের গারবিয়া প্রদেশের নাসিরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবেই দুর্ঘটনাক্রমে লাঠির আঘাতে তিনি দৃষ্টিশক্তি হারান। তবে দৃষ্টিহীনতা তাঁর জন্য প্রতিবন্ধক হতে পারেনি, বরং আল্লাহ তাঁকে চোখের আলোর প্রতিদানে কোরআনের আলো দান করেছেন। কোরআনের আলোয় তাঁর অন্তরকে আলোকিত করেছেন।

শায়খা তানাজুর নিজের সম্পর্কে বলেন, আমি শায়খ আবদুল লতিফ আবু সালিহের কাছে কোরআনের হিফজ শুরু করি। তবে তা ছিল তাজবিদ ছাড়া। এরপর আমি শায়খ মুহাম্মদ আবু হালাওয়ার কাছে তাজবিদ শিখি। তাঁর কাছেই সুরা ইউনুস পর্যন্ত সাত কেরাতের পাঠগ্রহণ করি। তাঁর কাছে আমার শিক্ষাকাল ছিল ১৫ বছর। অতঃপর আমি শায়খ আবদুল জাওয়াদের কাছে শাতেবি পদ্ধতিতে সাত কেরাত শিখি। তিনি আমাকে সুরা ফাতিহা থেকে সুরা তাওবা পর্যন্ত শেখান।

শায়খা তানাজুর (রহ.) ছিলেন অন্তর্দৃষ্টির অধিকারী একজন নারী। কোরআন ছিল যার জীবনের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ সঙ্গী। কোরআনের প্রতিটি শব্দ-বাক্য ছিল তাঁর নখদর্পণে। সম্মানিতা এই নারী তাঁর ঘরকে কোরআনপ্রেমীদের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন। ফলে তা কোরআনের পাঠশালায় পরিণত হয়েছিল। কোরআনপ্রেমীদের ভিড়ই ছিল তার জীর্ণশীর্ণ ঘরের সৌন্দর্য।

শায়খা তানাজুর (রহ.) ৯ জানুয়ারি ২০২১ সালে ইন্তেকাল করেন। তাঁর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায় না। মিসরের বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ শাহাভি তাঁর ছেলে। শায়খা তানাজুর (রহ.) ইন্তেকাল করার পর শায়খুল আজহার ড. আহমদ তাইয়িব এক টুইট বার্তায় লেখেন, ‘মুসলিম জাতি একজন উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হারাল। আল্লাহ তাঁর দৃষ্টিকে কোরআনের আলোয় আলোকিত করেছিলেন।

তিনি কোরআনের জ্ঞান বিস্তারে সর্বোত্তম চেষ্টা করেছেন এবং উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি শায়খা তানাজুর নাজুলি। বয়সে তিনি প্রবীণত কারিয়া ও কোরআনের হাফেজা। হে আল্লাহ, কোরআনকে আপনি তাঁর জন্য সুপারিশকারী করুন। হে পরম করুণাময়, তাঁকে আপনি আপনার রহমত ও ক্ষমার চাদরে আবৃত করুন।’

-এসআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ