আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: মোবাইল ফোনসহ সরকারের সব ধরনের ডিজিটাল ডিভাইসে টিকটক নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাজ্য। সরকারি গোপনীয়তা সুরক্ষা, সাইবার নিরাপত্তা বাড়ানো এবং তথ্য চুরি ও হ্যাকিং ঠেকাতেই বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) চীনের তৈরী এ অ্যাপটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় দেশটির সরকার।
শুক্রবার (১৭ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ব্রিটিশ সরকারের মন্ত্রীদের সরকারি ফোন ও ডিভাইসে চীনা মালিকানাধীন সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ টিকটক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ব্রিটিশ সরকারের আশঙ্কা টিকটক অ্যাপের মাধ্যমে সরকারি ফোনে থাকা সংবেদনশীল ডেটা চীন সরকারের হাতে চলে যেতে পারে।
যুক্তরাজ্যের ক্যাবিনেট মন্ত্রী অলিভার ডাউডেন বলেছেন, টিকটক অ্যাপে জারি করা এই নিষেধাজ্ঞা ‘সতর্কতামূলক’ পদক্ষেপ হিসেবে নেওয়া হয়েছে এবং তা অবিলম্বে কার্যকর হবে। তবে ব্যবহারকারীদের ডেটা চীনা সরকারের কাছে হস্তান্তর করার অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে টিকটক।
টিকটকের গভর্নমেন্ট রিলেশনস অ্যান্ড পাবলিক পলিসি ইন ইউরোপের ভাইস-প্রেসিডেন্ট থিও বার্ট্রাম বিবিসিকে বলেছেন, অন্য যেকোনও কিছুর চেয়ে ভূ-রাজনীতিকে প্রাধান্য দিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে তারা বিশ্বাস করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের ভয়ের ভিত্তিতে নয়, বাস্তবতার ভিত্তিতে আমরা সবকিছু বিবেচনা করতে বলেছি। ’
লন্ডনে অবস্থিত চীনা দূতাবাস বলেছে, ব্রিটিশ সরকারের এই পদক্ষেপ কোনও ‘তথ্যের ভিত্তিতে’ নয় বরং রাজনীতি দ্বারা অনুপ্রাণিত। একইসঙ্গে এই সিদ্ধান্ত ‘যুক্তরাজ্যের ব্যবসায়িক পরিবেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থাকে ক্ষুন্ন করবে’ বলেও জানায় চীনা দূতাবাস।
ক্যাবিনেট মন্ত্রী অলিভার ডাউডেন বলেছেন, তিনি জনসাধারণকে টিকটক ব্যবহার করার বিরুদ্ধে কোনও পরামর্শ দেবেন না। তবে তাদের সবসময়ই ‘প্রতিটি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মের ডেটা নীতিগুলো ব্যবহার করার আগে বিবেচনা করা উচিত’।
বিবিসি বলছে, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অনুসরণ করে সরকারি ফোন ও ডিভাইস থেকে ভিডিও-শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক নিষিদ্ধ করতে সিনিয়র এমপিদের চাপের মধ্যে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। তবে ব্রিটেনের সরকারি বিভাগ এবং স্বতন্ত্র মন্ত্রীরাও তরুণদের কাছে তাদের বার্তা পৌঁছে দেওয়ার উপায় হিসাবে টিকটককে গ্রহণ করেছে।
উল্লেখ্য, টিকটকের মূল মালিক চীনা কোম্পানি বাইটড্যান্স। গত কয়েক বছরে এটি সারা বিশ্বেই তুমুল জনপ্রিয় এক ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপে পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বব্যাপী চীনা এই অ্যাপটি ৩৫০ কোটি বার ডাউনলোড হয়েছে।
তবে নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে গত কিছুদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই অ্যাপটির বিরুদ্ধে বেশ কঠোর অবস্থানে চলে গেছে। এসব দেশ বলছে, চীনা কর্মকর্তারা এই অ্যাপটির মাধ্যমে সংগ্রহ করা তথ্যের অপব্যবহার করতে পারে।
-এসআর