শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬


ফুল স্কলারশিপ নিয়ে আল আজহারে যাচ্ছেন ঢাকার দারুল আরকামের দশ শিক্ষার্থী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সমমান ও স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বাংলাদেশের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল আরকাম আল ইসলামিয়ার ১০ জন মেধাবী শিক্ষার্থী সম্পূর্ণ স্কলারশিপ নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য মিশরের ঐতিহাসিক আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য সুযোগ পেয়েছেন। এই অর্জন সম্ভব হয়েছে শায়খ মুহাম্মদ সানাউল্লাহ আল আজহারীর দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর।

তিনি প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় আল-আযহারের সঙ্গে দারুল আরকামের উচ্চমাধ্যমিকের সনদের মুআদালার (সমমান) মাধ্যমে এই অসাধ্য সম্ভব করেছেন।

গতকাল (১১মার্চ) শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি অভিজাত বুফে রেস্তোরায় স্কলারশিপপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বিদায়ী সংবর্ধনা ও সম্মাননার আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি। দারুল আরকামের শিক্ষা সচিব শেখ শাব্বির খান আল-আজহারীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন শেখ সানাউল্লাহ আল আজহারী।

এতে চিপ গেস্ট ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মিশর এ্যাম্বেসির অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ এটাচী চীফ আয়মান কামাল হাম্মাদ। আরো উপস্থিত ছিলেন, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের মহাপরিচালক মাওলানা ওবায়দুর রহমান খান নদভী , শায়খুল হাদীস আল্লামা আজীমুদ্দীন , এস এস টি এস বাংলাদেশের মহাপরিচালক ডঃ সাঈদ সাবরী সহ দেশ বরেণ্য উলামায়ে কেরাম, আজহারী স্কলারগণ, বিদেশি কূটনীতিবৃন্দ ও বিভিন্ন সংস্থা ও মাদ্রাসার পরিচালকগণ।

স্কলারশিপপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বেফাকের মহাপরিচালক আল্লামা নদভী বলেন, বেফাক তোমাদের সফলতায় গর্বিত। আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা সারা বিশ্বব্যাপী ইসলামের সুমহান দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত থাকুক। তোমরা দেশের গণ্ডিতে যেভাবে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছ আশা করব আন্তর্জাতিক মহলেও নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখবে।

বাংলাদেশে নিযুক্ত মিসরীয় দূতাবাসের উপ হাইকমিশনার আইমান কামাল হাম্মাদ বলেন, বাংলাদেশ থেকে এ বছরও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী মিশরে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য গিয়েছে। শুধুমাত্র আল-আযহার নয় মিশরের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা পড়াশোনার জন্য যাচ্ছে । মুআদালার পর দ্বিতীয়বারে ঢাকার দারু‍ল আরকাম থেকে শিক্ষার্থীরা আল আজহারে যাচ্ছে। আমি স্কলারশিপপ্রাপ্ত সকল শিক্ষার্থীকে অভিনন্দন জানাই।

মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা শায়েখ সানাউল্লা আযহারী বলেন, কওমি শিক্ষার্থীদের বিশাল একটা অংশ আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে ইচ্ছুক।

কিন্তু সরকারি কোন প্রকার সার্টিফিকেট না থাকায় তাদের সময় অপচয় হয় এবং অনেক সময় সম্ভব হয়ে ওঠেনা। এজন্য জ্ঞানপিপাসু ‌‌ শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে আমরা আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সরাসরি মুআদালা করেছি। আমাদের এখান থেকে সানাবিয়া উলয়া পড়ে যে কেউ আল আজহারের যেকোনো বিভাগে ভর্তি হতে পারবে।

দারুল আরকাম আল ইসলামিয়া বাংলাদেশের একমাত্র কওমি মাদ্রাসা যার সঙ্গে সরাসরি মুআদালা ( সমমান) রয়েছে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের। তাদের পথ চলার কয়েক বছরেই এমন অভাবনীয় সাফল্যে আনন্দিত চিন্তাশীল আলেম সমাজ।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক শায়খ জুবায়ের আহমাদ আজহারী বলেন, শায়েখ সানাউল্লাহ আযহারীর এই সফলতা আমাদেরকে আপ্লুত করেছে। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর কাছে অসংখ্য শুকরিয়া তিনি বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য আল-আজহারের পথ আরো প্রশস্ত করেছেন। ‌আশাকরি আমাদের শিক্ষার্থীরা ভালো কিছু উপহার দিবে।

দীনিয়াত বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মুফতি সালমান আহমদ বলেন, কওমী শিক্ষার্থীদের সামনে জ্ঞানের বিশাল এক দুয়ার উম্বোচিত হলো। একটি চমৎকার আয়োজন। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা আরো একধাপ এগিয়ে গেল। বিশেষভাবে শায়েখ সানাউল্লাহ আজহারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হয়। ধন্যবাদ সংশ্লিষ্ট সকলকে।

দারুল আরকামের শিক্ষা সচিব শায়েখ শাব্বীর খান আজহারী বলেন, আমাদের মাদ্রাসা থেকে এ বছর সম্পূর্ণ স্কলারশিপ নিয়ে আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে গমনকারী শিক্ষার্থীরা হলেন সফিউর রহমান, সাকিব আশরাফ, জুনায়েদ আল হাবিব, আনাস আল ফারুক, মোস্তফা কামাল, শহীদুল্লাহ, আব্দুল কাদের, আব্দুল্লাহ মারজান, মোহাম্মদ রাফে ও সাকিব মুনির। আমরা তাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।

অনুষ্ঠানে মিশরি প্রতিনিধিদেরকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয় দারুল আরকাম এর পক্ষ থেকে। আল-আযহারে গমনকারী শিক্ষার্থীদেরকেও ক্রেস প্রদান করা হয়। মিশরী প্রতিনিধিদের সামনেই শেখ সানাউল্লাহ আল আজহারী তাদের হাতে তুলে দেন পাসপোর্ট, মিশরের ভিসা ও টিকেট সহ যাবতীয় ডকুমেন্ট।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ