শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩১ ।। ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬


ভারত থেকে পাইপলাইনে জ্বালানি তেল আসছে ১৮ মার্চ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক:বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, আগামী ১৮ মার্চ দিনাজপুর অঞ্চলের মানুষের জন্য ঐহিতাসিক দিন হবে। কারণ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি আনুষ্ঠানিকভাবে ইন্ডিয়া বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে বর্তমানে চাহিদা অনুযায়ী বাৎসরিক প্রায় ২.৫ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল ভারত থেকে আমদানি করা সম্ভব হবে।

শুক্রবার (১০ মার্চ) ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইন প্রকল্পের দিনাজপুর পার্বতীপুরে রিসিপ্ট টার্মিনাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদেরকে এ কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেডের (এনআরএল) শিলিগুড়ির মার্কেটিং টার্মিনাল হতে পাইপলাইনের মাধ্যমে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর ডিপোতে জ্বালানি তেল আমদানি করার লক্ষ্যে পাইপলাইন নির্মাণের নিমিত্তে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) ও ভারতের নুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেডের মধ্যে ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল একটি সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়। সেটি বাস্তবায়ন করতে আগামী ১৮ মার্চ দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উদ্ধোধনের মধ্য দিয়ে এর কার্যক্রম শুরু হবে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, পাইপলাইনের রিসিপ্ট টার্মিনাল কেন্দ্রটি সম্পূর্ণ অটোমেটিক মেশিনে নিয়ন্ত্রিত হবে। এখানে কোনো হিউম্যানের হাতের কোনো কার্যক্রম থাকবে না। এই পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল সরবরাহ চালু হলে উত্তরাঞ্চলের চাহিদা মোতাবেক ডিজেল ভারত থেকে সহজ, সুষ্ঠু ও নিরবিচ্ছন্ন ব্যয় সাশ্রয়ী আমদানি করা যাবে। যা দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা আরও সুদৃঢ় করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে ।

তিনি বলেন, বর্তমানে রেলওয়ে ওয়াগনের মাধ্যমে ভারত থেকে বার্ষিক ৬০ থেকে ৭০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করা হয়। পাইপলাইনের মাধ্যমে বর্তমান চাহিদা অনুযায়ী বার্ষিক প্রায় ২.৫ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল ভারত হতে আমদানি করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন ডিজেল ভিত্তিক সৈয়দপুরে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণককাজ সম্পন্ন হলে চাহিদা অনুযায়ী আরও ২ থেকে ২.৫ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করা যাবে। চপার্বতীপুরের ডিপো থেকে দৈনিক ৮০০ থেকে ১০০০ মেট্রিক টন জ্বালানি তেল উত্তরাঞ্চলের ১৬টি জেলায় সরবরাহ করা সম্ভব হবে। অতিরিক্ত ২৯ হাজার মেট্রিক টন জ্বালানি তেলের মজুদ বৃদ্ধি পেয়ে মোট ধারণক্ষমতা ৪৩ হাজার মেট্রিক টন হবে এবং এই পাইপলাইনের মাধ্যমে সৈয়দপুর ১৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি হিসেবে দৈনিক ১ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল সরবরাহ করাও সম্ভব হবে।

তিনি বলেন ,পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে ডিজেল আমদানি শুরু হলে প্রতি ব্যারেলে পাঁচ থেকে ছয় ইউএস ডলার কম দামে আমদানি করা সম্ভব হবে। যা আগামী ১৫ বছরের জন্য এটি চুক্তি করা হয়েছে। এতে করে নিরবিচ্ছিন্নভাবে তেল সরবরাহ করার কারণে উত্তর অঞ্চলে কৃষি নির্ভর হওয়ায় কৃষি কাজের ক্ষেত্রে এ জ্বালানি তেল অনেকটা উৎপাদনে সহযোগিতা করবে। পাশাপাশি কৃষি বিদ্যুৎ অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানের চাহিদা মতে তেল সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, এ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় মোট ৩১.৫৭ কিলোমিটার যা বাংলাদেশের অংশে ১২৬. ৫৭ কিলোমিটার এবং ভারতের অংশে ৫ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে। ভারত সরকার এই পাইপলাইন নির্মাণের অর্থায়ন ও কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করেছেন।

রিসিপ্ট পাইপলাইন পরিদর্শন শেষে স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন সভায় যোগদান করেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রানালয়ের সচিব ড. খাইরুজ্জামান মজুমদার, বিপিসি চেয়ারম্যান এ, বি, এম আজাদ, দিনাজপুর জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী।

-এসআর


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ