আওয়ার ইসলাম: নামাজ হলো আল্লাহর সঙ্গে কথা বলা। এ জন্য এবং মনযোগ রাখা উচিত নিবিষ্টভাবে। যাতে কোনোরকম ব্যঘাত না ঘটে। কিন্তু ইদানিং দেখা যায় মোবাইল ফোন নামাজে ব্যঘাত ঘটিয়ে থাকে। অনেকে কিছু মাসালা জানেন না বলে সেটা সবার নামাজে বিঘ্ন ঘটায়। আসুন নামাজে মোবাইল সংক্রান্ত কয়েকটি মাসালা জেনে রাখি।
০১
নামাজের আগেই মোবাইল ফোন বন্ধ করে নামাজে দাঁড়ানো আবশ্যক। এদিকে সতর্ক দৃষ্টি রেখে অভ্যাসে পরিণত করা চাই। তবে যদি ভুলবশত বন্ধ না করে নামাজ শুরু করে আর নামাজে তা বেজে উঠে, তখন মোবাইলটি পকেটে রেখেই এক হাত দিয়ে বন্ধ করবে। এর দ্বারা নামাজে কোন রকমের সমস্যা হবে না। আর মোবাইল বন্ধ করার জন্য নামাজ ছেড়ে দেয়ার প্রয়োজন নাই। [বাহরুর রায়েক : ২/১১]
০২
নামাজে বারবার মোবাইল বাজা যদি একবার বন্ধ করার পর (অর্থাৎ একবার পকেটে হাত দিয়ে কল কেটে দেয়ার পর) যদি আবার বেজে উঠে, তাহলে আমলে কালিলের মাধ্যমে তিনবার পর্যন্ত কল বন্ধ করা যেতে পারে। তবে শর্ত হলো- এ বন্ধ করাটা যাতে আমলে কাছিরের সীমা পর্যন্ত গিয়ে না পৌঁছে। যদি আমলে কাছির হয়ে যায়, তাহলে নামাজ ভেঙ্গে যাবে। [মাজমাউল আনহার : ১/১২]
০৩
নামাজে আমলে কালিল ও আমলে কাছির নির্ধারণের ব্যাপারে ফোকাহায়ে কেরামের বিভিন্ন বক্তব্য পাওয়া যায়। তন্মধ্যে গ্রহণযোগ্য মত হলো আমলে কাছির বলা হয়- নামাজে এমন কোন কাজ করা যার দ্বারা নামাজ বিশুদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি হয়। অযথা এমন কোন কাজ করা, যা দেখে সামাজের বাহিরের লোকদের প্রবল ধারণা হয় যে, লোকটি নামাজে নেই। তবে যদি মুসল্লির কাজটি এ পর্যায়ের না হয়। তাহলে তাকে আমলে কালিল বলা হয়। [শামী : ১/৪৩]
০৪
রিংটোন হিসেবে কুরআনের আয়াত অথবা আযানের আওয়াজকে ব্যবহার করার কোন যৌক্তিকতা নেই, বরং এক হিসেবে এর দ্বারা কালামে পাক ও আযানের মান ক্ষুন্ন হয়। তাই এর ভিত্তিতে ফোকাহায়ে কেরাম এ ধরনের উদ্দেশ্য হাসিলের ক্ষেত্রে যিকিরের শব্দগুলো ব্যবহার করাও না জায়েয বলে ঘোষণা দিয়েছেন। সুতরাং ফোকাহায়ে কেরামের ঘোষণা অনুযায়ী মোবাইলে রিংটোন হিসেবে আযান, কুরআনে কারিমের আয়াত ও হামদ-নাম ইত্যাদি সেভ করা ঠিক হবে না। অনেক সময় এমনও হয়ে থাকে যে, কেউ মোবাইল নিয়ে টয়লেটে প্রবেশ করলো, আর সেখানে আয়াতে কারিমার আওয়াজ ভেসে উঠলো এতে কুরআনের অবমাননা হয়। তাই এর থেকে বেঁচে থাকা আবশ্যক। [হিন্দিয়া : ৫/৩১৬, আল আশবাহ ওয়ান নাযায়ের : ৫৩, ইমদাদুল ফাতওয়া : ৩৪৯]
০৫
মোবাইলের রিংটোনে গান বাজানো এবং মিউজিক লাগানো কখনই জায়েয নয় বরং মহাপাপ। [আত তারগিব ওয়াত তারহিব : ৪/১৮৪, শামী জাকারিয়া : ৯/৫৬৬]
০৬
যদি এমন ব্যক্তিকে মিস্ডকল করা হয় যার সাথে তার অন্তরঙ্গতা রয়েছে কিংবা মিস্ডকল দিলে খারাপ মনে করবে না; বরং তার সাথে কল মিলাবে, তাহলে এমন ব্যক্তিকে মিস্ডকল দিতে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু যদি কোন অপরিচিত লোক হয়, অথবা এমন কোন লোক হয় যাকে মিস্ডকল দিলে খারাপ মনে করবে, তাহলে এমন লোককে মিস্ডকল দেয়া ঠিক হবে না। [রুহুল মায়ানি : ১০/৩২৩] বিরক্ত করা মোবাইলে রিং দিয়ে কাউকে বিরক্ত করা বা কষ্ট দেয়া মস্পূর্ণ না জায়েয। [বুখারি]
এআর