শাহিনুর মিয়া।। প্রকাশ্যে গোনাহকারীদের ক্ষমা না করার কারণ হলো তারা দিগুন গোনাহ করে। একটি হলো তারা আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে। দ্বিতীয় হলো ঘোষণা দিয়ে অপরাধ করে।
এটা একধরনের ঔদ্বত্য, সে পক্ষান্তরে এই ঘোষণা দিয়ে বেড়ায় যে, আমি আল্লাহকে ভয় করি না। আমি যা ইচ্ছা তাই করব, আমাকে জিজ্ঞেস করার মতো কেউ নেই। (নাউজুবিল্লাহ) এটা মারাত্বক ধরনের গোনাহ। এর অর্থ হচ্ছে এই গোনাহর ব্যাপারে সে লজ্জিত না এবং এটাকে মারাত্বক কিছু মনেও করছে না। সে সরাসরি আল্লাহর সঙ্গে লড়াইয়ের ঘোষণা দিচ্ছে।
গোনাহ তো কম-বেশি সবারই হয়। তবে গোনাহের পর তওবা করে নেওয়া আল্লাহর কাছে অনেক পছন্দের। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-মানুষ পাপাচারী, আর সবচেয়ে ভালো পাপাচারী যে সবচেয়ে বেশি তওবা করে।
এজন্য বান্দা হওয়ার দাবি হলো, যখনই কোনো গোনাহ হয়ে যাবে সঙ্গে সঙ্গে তওবা করে নেবে। কিন্তু যে ঘোষণা দিয়ে গোনাহ করে এবং এটাকে খারাপ মনে করে না সে তওবা করবে কখন? তার গোনাহের মাত্রা অনেক বেশি।
এই হাদিস দ্বারা এটাও জানা গেল, আল্লাহ না করুক কারো দ্বারা কোন গোনাহ হয়ে গেলে সে এটাকে গোপন রাখবে। কারও সামনে প্রকাশ করবে না। আল্লাহর কাছে নিবেদন করবে, হে আল্লাহ! তুমি আমার গোনাহের বিষয়টি গোপন রেখো, তুমি আমার গোনাহের বিষয়টি প্রকাশ করে দিয়ে লজ্জিত ও অপদস্থ করো না।
‘মুজাহেরা’ বা প্রকাশ্যে গোনাহের একটি অর্থ এই হাদিসের পরবর্তী অংশে নিজেই নিজেই ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, কেউ রাতের বেলা কোনো গোনাহ করলো। আল্লাহ তার এই গোনাহের বিষয়টি গোপন রাখলেন। কিন্তু সকালে সে নিজেই কোনে বন্ধুর কাছে বলে বেড়ালো, গত রাতে আমি অমুক গোনাহ করেছি।
এটাও ‘মুজাহেরা’ বা প্রকাশ্যে গোনাহের অন্তর্ভুক্ত। এটাও অনেক দুঃসাহসিকতা ও ঔদ্বত্যের বিষয়। আল্লাহ এই গোনাহ গোপন রেখেছিলেন কিন্তু সে নিজে তা প্রকাশ করে দিলো। মূলত সে নিজেই নিজের উপর থেকে পর্দা সরিয়ে দিলো। এজন্য অন্যের পাপের বিষয় যেমন প্রকাশ করতে নেই তেমনি নিজর পাপের কথাও অন্যের কাছে বলে বেড়ানো জায়েয নেই।
আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন, আজকাল আমাদের সমাজে এর প্রচলন শুরু হয়ে গোনাহ করে নিজেই বলে বেড়ায়। নিজের গোনাহের কথা প্রকাশ করার সময় একটুও লজ্জাবোধ কাজ করে না। আল্লাহ আমাদেরকে এই অপরাধ থেকে রক্ষা করুন এবং সত্যিকার অর্থে গোনাহ থেকে তওবা করার তাওফিক দিন। আমিন। সূত্র: ইসলাহুল মসলিমিন
-এটি