আওয়ার ইসলাম: ঠাকুরগাঁও জেলার রানীশংকৈল উপজেলায় ১৫০৫ সালে তৈরি ঐতিহাসিক মহালবাড়ি মসজিদ। রানীশংকৈল উপজেলায় উত্তরে মীরডাঙ্গী থেকে তিন কিলোমিটার পূর্বে মহেশপুর গ্রামে মহালবাড়ি মসজিদটি অবস্থিত।
মসজিদে প্রাপ্ত শিলালিপি থেকে জানা যায় ১৫০৫ খ্রিস্টাব্দে সুলতান হোসেন শাহের আমলে এটি প্রতিষ্ঠিত। দিনাজপুর জাদুঘরে শিলালিপিটি সংরক্ষিত ছিল। শিলালিপি সূত্রে জানা যায় মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন মিয়া মালিক ইবনে জুযমদার। এটি ছিল তিন গম্বুজ বিশিষ্ট।
মসজিদে ভূমি থেকে প্রায় চার ফুট উঁচু চারদিকে শিলা প্রাচীর ছিল। যে শিলাগুলো থাম হিসেবে ব্যবহৃত সেগুলো নকশা করা। শিলা-প্রাচীরের উপরে নির্মিত হয় ইটের দেয়াল। ছাদেও শিলাখন্ডের ব্যবহার ছিল। ছাদ থেকে পানি বের করে দেয়ার জন্য খোদিত শিলার ব্যবহার দেখা যায়। ১৯৭১ সালের পূর্বেই মূল মসজিদটি ধ্বংস হয় এবং সেখানে নির্মিত হয় নতুন মসজিদ।
নবনির্মিত মসজিদটির ভিত ও মেঝেতে প্রাচীন মসজিদের পাথর এবং দেয়ালে ইট ব্যবহার করা হয়েছে। তবে মসজিদের কাছে নকশা করা ও নকশাবিহীন বেশকিছু শিলাখন্ড পড়ে রয়েছে। প্রাচীন মসজিদের নকশা করা প্রায় ৩৬ ×৩০ ইঞ্চি আয়তনের শিলাখন্ড নতুন মসজিদের মিহরাবে আটকানো আছে। এছাড়া প্রাচীন মসজিদের তিন তাকের নকশা করা শিলাখন্ডের মিম্বারটি এখনো নতুন মসজিদের সামনে পড়ে রয়েছে।
মসজিদের পূর্বপাশে আছে একটি ছোট দিঘি। দিঘিটির উত্তর পাড়ের ঘাট উপর থেকে নিচ পর্যন্ত পাথরে বাঁধানো। মসজিদের দুশ মিটার পূর্বে জঙ্গলের মধ্যে দুটি কবর। কবর দুটি একসঙ্গে ইট দিয়ে বাঁধানো। কবরের উত্তর-পশ্চিমের কোণে নকশা করা একটি পাথরের থাম রয়েছে। হয়তো কবরের চারকোণেই এ ধরনের থাম ছিল।
কবর দুটির মধ্যে একটি 'বিশ্বাস পীরের' মাজার বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিমত। সম্ভবত বিশ্বাস শব্দটি ক্রমান্বয়ে বিশওয়াশ থেকে বিশ বাইশ শব্দে বিকৃত হয়েছে। ফলে এলাকাটিকে বলা হয় বিশবাইশ মহাল।
-এটি