বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ২৮ কার্তিক ১৪৩১ ।। ১১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


আমাদের শহিদ মিনার: করণীয় কী? আর করছি কী!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

জাহিদুল ইছলাম: শহিদ মিনার ১৯৫২ সালে ২৩ ফেব্রুয়ারি সর্বপ্রথম নির্মাণ করা হয়। যা একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষা শহিদদের স্মরণে ঢাকা মেডিকেল কলেজের পার্শ্বে নির্মাণ করা হয়েছিল। একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন এ যারা অংশগ্রহণ করেন তাদের প্রায় ৯০ শতাংশ মুসলমান।

কিন্তু এ দিবস উদযাপন উপলক্ষে যা করা হয় তা মুসলমানদের আকিদা-বিশ্বাসের সাথে কতটুকু সংগতিপূর্ণ তা ভেবে দেখার প্রয়োজন আছে। শহিদ মিনার কেন্দ্রিক অনুষ্ঠানের অনেক কিছুরই মিল আছে হিন্দুদের পূজা-পার্বণের সাথে।

কয়েকটি উদাহরণ দিচ্ছি এক. হিন্দু দেবদেবীর প্রতিমাকে যে উঁচু স্থানে স্থাপন করা হয় সে স্থানকে বলা হয় বেদি, শহিদ মিনারের পদ মূলকেও বলা হয় বেদী। বেদি শব্দটির অর্থ হিন্দুদের যগ্য বা পূজার জন্য প্রস্তুত উচ্চভূমি। (বাংলা একাডেমি)

দুই. প্রতিমা বা মূর্তির বেদীমূলকে পবিত্র মনে করা হয়, তাই সেখানে যেতে হয় নগ্নপদে । শহিদ মিনারের মূল কেউ পবিত্র মনে করার কারণেই সেখানে নগ্নপদে যেতে হয়।

তিন. লক্ষ্মীপূজার সময় আলপনা আঁকা হয়। শহিদ মিনারের পদমূলে যাবার পথেও আলপনা আঁকা হয়। আলপনা অর্থ 'মেঝে, দেয়াল, সিঁড়ি প্রবৃত্তিতে অঙ্কিত হিন্দুদের মঙ্গলসূচক চিত্র বিশেষ' (সংক্ষিপ্ত বাংলা অভিধান, বাংলা একাডেমি)

চার. হিন্দু দেব-দেবীর পূজার সময় কয়েকটি বিষয় অপরিহার্য। এগুলো হলো লগ্ন, অর্ঘ্য বা নৈবেদ্য, স্তব বা বস্তুতি, পুরোহিত, দেবতা ও অর্চনা। এসবের সাথেও একুশে ফেব্রুয়ারির আচার-আচরণের সাদৃশ্য আছে। যেমন- অনুষ্ঠান জিরো আওয়ারে শুরু করা (লগ্ন), অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কৃষি (পুরোহিত), নির্দিষ্ট ভাবে আমার ভাইয়ের রঙে রাঙানো গান গেয়ে কাজ করা (স্তব/ বস্তুতি), শহিদ মিনার (জড়পদার্থ) কে নিরবে শ্রদ্ধা জানানো (অর্চনা)।

পাঁচ. দুর্গাপূজার সময় দেখা যায়, দুর্গার মূর্তির পাশে রয়েছে আরও চারটি (দুর্গার পুত্র গণেশ ও কার্তিক এবং কন্যা সরস্বতী ও লক্ষীর) মূর্তি। এভাবে সব মিলে মূর্তির সংখ্যা হয়েছে ৫।

শহিদ মিনার গুলোর সংখ্যা ৫। মিনারের সংখ্যা পাঁচ হওয়ার কারণ কি? ভাষা শহিদের সংখ্যা কি পাঁচ ছিল? আবার মধ্যবর্তী মিনারটির আকার অন্যদের তুলনায় বড় কেন? এ প্রশ্নগুলোর জবাব পাওয়া দরকার।

মুসলিম সমাজে রীতি আছে, মৃত বা শহিদ মুসলমানের মাগফেরাতের জন্য দুয়ার অনুষ্ঠান করা। কিন্তু ভাষা শহিদদের জন্য তাও করা হয় না; যা করা হয় তার সাথে ইসলামের রীতির মিল নেই। হিন্দুরা প্রতিমা পূজার পক্ষে এ যুক্তি পেশ করেন যে, দেবতা পূজারীদের নাগালের ভেতর নেই, তাই তার প্রতিমার মাধ্যমে তাকে পূজা দেওয়া হয়।

শহিদ মিনারের বেলায়ও এ বিশ্বাস করা হয় যে, শহিদ মিনারকে সম্মান দেখানো ভাষা শহিদদেরকে শ্রদ্ধা করার সমতুল্য। শহিদ মিনার কেন্দ্রিক আচার অনুষ্ঠানকে গভীরভাবে পর্যালোচনা করে দেখার দরকার আছে। ভাষা শহিদরা সবাই ছিলেন মুসলমান। কাজেই তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে আমরা এমন কিছু করতে পারি না যা ইসলামী চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। তা ছাড়া কোন মুসলমানই তাওহীদ বিরোধী কোন কাজ করতে পারে না।

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ